রানা চৌধুরী : দীর্ঘ লক ডাউনে work from home কাজ করে একঘেয়েমি চলে এসেছে ? হাতে খুব বেশি সময় অথবা ছুটি নেই, অথচ ইচ্ছে করছে একটা দিন একটু নিজের মতন করে উপভোগ করতে?
হ্যা , তাহলে আপনার জন্যে একটি ভালো জায়গা হল দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সমুদ্র তটে অবস্থিত মৌসুনি দ্বীপ শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে সমুদ্রের ঢেউয়ে , শব্দ ,সকালের সোনালী রোদ গায়ে মেখে সমুদ্র তটে ভ্রমণ, সমুদ্র তটেই চায়ের পেয়ালা হাতে শীতের সকালে একটু উষ্ণতার ছোয়া, সকলের প্রাতরাশ সেরে সমুদ্রের ঢেউ কে আলিঙ্গন করে কিছুটা সময় সমুদ্রের জলে ঝাঁপিয়ে নেবার লোভনীয় মুহূর্ত ( ঢেউ খুব বেশি পাবেন না )। স্নান করে এসে নিজের টেন্টে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে দুপুরে খাবার আপনার জন্যে তৈরি থাকবে ,মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে চাইলে আবার কিছুটা সময় টেন্টে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে সোনালী রোদের আভা গায়ে মেখে সমুদ্রতটে কিছুটা সময় হেটে বেড়াতে পারেন, পরিবার, বন্ধু অথবা প্রিয় জনের হত ধরে, সূর্য ডুবে গেলে চারিদিকে নিস্তব্ধ অন্ধকারের মাঝে রঙিন আলোর মালায় সেজে ওঠে ক্যাম্প গুলো, রাত ৯ পর্যন্ত নিজেদের মতন করে সমুদ্র তটে নিজেদের মতন করে গল্প ,আড্ডা,গান করতে পারেন অথবা ক্যাম্পে বন ফায়ারের ব্যবস্থা আছে, সেখানেও সবাই নিজেদের মতন করে আড্ডা দিতে পারেন, 10.30/11 টায় রাতের খাবার খেয়ে সমুদ্রের ঢেউয়েই শব্দকে সঙ্গী করে টেন্টের মধ্যেই ঘুমের দেশে পারি দিতে পারেন।
কিভাবে যাবেন :
কলকাতা থেকে মাত্র ৪-৫ ঘন্টায় যাওয়া যায় এই দ্বীপে। ১১০কিমির পথ। সড়কপথে, বাইকে, নিজস্ব গাড়িতে এবং ট্রেনে যাওয়া যায়৷
যারা বাসে যেতে চান তারা ধর্মতলা থেকে বাস ধরে নামখানা বাসস্ট্যান্ডে আসবেন। বাস ভাড়া ৮৩টাকা। ট্রেনে গেলে শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নামখানা যেতে হবে। ট্রেনে ঘন্টা ৩ সময় লাগে। ট্রেন থেকে নেমে মৌসুনি দ্বীপে দুভাবে যাওয়া যায়। আসলে মৌসুনি দ্বীপে যেতে একটা নদী পারাপার করতে হয় যার নাম চেনাই নদী। এই নদীর দুটো ঘাট একটা হুজ্জুতের ঘাট এবং আর একটি বাগডাঙা ঘাট। হুজ্জুতের খেয়াঘাট হয়ে যেতে চাইলে নামখানা স্টেশন থেকে টোটো করে হুজ্জুতের ঘাট যাবেন। ভাড়া মাত্র ৫০টাকা। আর যদি বাগডাঙা হয়ে যেতে চান তাহলে নামখানা স্টেশনে নেমে টোটোয় করে নামখানা বাসস্ট্যান্ডে যাবেন। টোটো ভাড়া মাত্র ১০টাকা। এখান থেকে ম্যাজিক গাড়ি করে যেতে হবে বাগডাঙা খেয়াঘাট বা দুর্গাপুর খেয়াঘাট। ভাড়া ২৫টাকা।
যারা অবশ্য গাড়িতে আসবেন তারা হুজ্জুত ঘাট হয়ে আসবেন কারণ এখানে রয়েছে গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা। গাড়ি পার্কিং-এ ছোট গাড়িতে ভাড়া ১০০টাকা, মাঝারি গাড়িতে ১৫০টাকা এবং বাস হলে ভাড়া লাগে ২০০ টাকা। খেয়া ভাড়া ৭ টাকা। খেয়া পারাপার করে টোটো করে পৌঁছে যাবেন মৌসুনি দ্বীপে।
কি খাবেন :
● মৌসুমী দ্বীপ আপনাকে প্রথমেই স্বাগত জানাবে একটি ডাব দিয়ে
● প্রাতরাশ – লুচি ,ঘুগনি , ডিম সেদ্ধ
● মধ্যাহ্ন ভোজে- খুব সুন্দর সাজিয়ে পরিপাটি করে কাশার থালা ,বাটিতে ভাত , ঘন মুগের ডাল, আলু ভাজা , সিজেনাল একটি সব্জী , চিংড়ির মালাই করি, কাতলা মাছের ঝোল , চাটনি ,পাঁপড়
● সন্ধ্যা বেলায় – চা , ভেজ পাকোড়া, মুড়ি
● রাতে – ভাত/ রুটি , চিকেন , সব্জী
এটা সম্পূর্ণ প্যাকেজের মধ্যেই পড়বে ,টেন্টে থাকা খাওয়া নিয়ে জন প্রতি প্রতিদিন 1100/1200 টাকার মধ্যে পড়বে।
◆ আপনারা চাইলে সন্ধ্যের আড্ডায় বন ফায়ারের সাথে বারবিকিউ চিকেন খেতে পারেন সেটা প্যাকেজের মধ্যে নয় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ইচ্ছাধীন তবে তার জন্যে কেজি প্রতি আপনাদের দিতে হবে @350 টাকা করে।