কৃষ্ণনগর: কৃষ্ণনগর শহরের এক ঐতিহ্য ও আবেগের পুজো বুড়িমা। কথিত আছে কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের স্বপ্নে পাওয়া এই মাতৃমূর্তি বুড়িমা বলেই পরিচিত । কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রায় সমসাময়িক সময় থেকেই এই পুজোর সূচনা কাল বলে মনে করা হয়। কথিত আছে, একসময় রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ভেবেছিলেন কি ভাবে প্রতিমা ও পুজোর আনুষঙ্গিক খরচের দায় দায়িত্ব বহন করবেন । সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পুনরায় স্বপ্নাদেশ পান চাষা পাড়ায় যারা লাঠিয়াল আছেন তারাই এই প্রতিমার দায় দায়িত্ব সামলাবেন । অনেকেরই ভুল ধারণা, চাষাপাড়া অঞ্চলে বুড়িমা বলে কেউ বাস করতেন,তার নামানুযায়ী এই পুজো বলে বুড়িমারর জগদ্ধাত্রী বলে খ্যাত। কিন্তু সেটা একেবারেই নয় ।
পুজোর প্রাচীনত্বের ওপর নির্ভর করেই এই পুজোকে বলা হয় বুড়িমা । সাধারণ ভাবে অন্যান্য সমস্ত পুজোতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হয় পুজোর চাঁদা হিসাবে । বুড়িমার মন্দিরে সাধারণ মানুষের ঢল নামে অর্থ , শাড়ি সহ মূল্যবান ধাতব অলঙ্কার দেবার জন্য । সেই মানুষের ঢল সামলাতে হিমসিম খান পুজোর কর্মকর্তারা। কৃষ্ণনগরবাসীর কাছে এই পুজোকে ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে এক গভীর শ্রদ্ধা। শোনা যায় যাঁরা বুড়িমার কাছে নিজের মনের বাসনা নিবেদন করেন তাঁরা বাস্তবে তার ফলও পেয়েছেন। জনশ্রুতি রয়েছে কৃষ্ণনগরের চাপড়ার অন্ধ একটি শিশু এই বুড়িমা জগদ্ধাত্রী মাতার কাছে প্রার্থনা করে তার দৃষ্টি ফিরে পেয়েছে । শোনা যায় এরকম অনেক ঘটনা এই বুড়িমাকে ঘিরে রয়েছে। আর সেই কারণেই দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে বুড়িমায়ের কাছে। বহু মানুষ মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ার কামনায় মাকে স্বর্ণালংকার ও রৌপ্য অলঙ্কারে ভূষিত করেন ।