ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রাম জেলায় গ্রাম জুড়ে ‘মশা খেদানো’র উৎসবে মেতে ওঠে মানুষজন। মূলত ভূত তাড়ানোর জন্য গ্রাম-গঞ্জে এই মশা খেদানো অনুষ্ঠান হলেও এর পিছনে রয়েছে সচেতনতার বার্তা। কালীপুজোর রাত থেকে ভোর থেকে পর্যন্ত গ্রামগুলিতে চলে এই অনুষ্ঠান। টিন, ঢাক-ঢোল, খোল, করতাল, ক্যানেস্তারা বাজিয়ে মশাল ও ধুঁয়ো নিয়ে সারা রাত ধরে গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে এই উৎসবের পিছনে মশা তাড়ানোরও প্রতীকি বার্তা রয়েছে বলে স্থানীয় গবেষকদের মত। তবে শহর এলাকায় এই সব অনুষ্ঠান দেখা না গেলেও এখনও ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২নং ব্লকের জুনশোলা, ভোল, হাতিপাতা, আশকোলা, টিকায়েতপুর ও গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রাম ব্লকের একাধিক গ্রামে এই অনুষ্ঠান হয়।
লৌকিক সংস্কারের জেরে কালীপুজোর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত গ্রামের যুবকরা এই মশা খেদানোর উৎসবে যোগ দেয়। খালি গায়ে সরষের তেল মেখে যুবকরা টিন, ঢাক-ঢোল, খোল, করতাল, ক্যানেস্তারা বাজিয়ে মশাল ও ধুঁয়ো তৈরির নানা উপকরণ নিয়ে সারা গ্রাম ঘুরে-বেড়ায়। রাত জেগে এই উৎসবে নিজেদের উজ্জ্বীবিত রাখতে গান গায় যুবকরা। গানগুলি হল- ‘যা রে মশা যা, পিঠ কুরি কুরি খা, মশা যায় হু হু, বাতাস যায় হু হু’। ‘বড় ঘরের বড় মশা, অমুকের(কোন গ্রামবাসীর নাম ধরে) ঘরে যা’। প্রত্যেকের বাড়ি ও গোয়াল ঘুর ধোঁয়া দিয়ে বাজনা বাজিয়ে প্রদক্ষিণের পর সোমবার ভোরে গায়ে হলুদ মেখে স্নান করে বাড়িতে ঢোকে গ্রামের যুবকরা। মশা তাড়ানোর ধুঁয়ো তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয় সরষের বা কড়চার তেল। সঙ্গে থাকে ধুনো।