ঝাড়গ্রাম:– দুর্গাপুজো শেষ। একবোনের বিসর্জন, আর অন্য বোনের আবাহন এমনটা হয় নাকি! এক বোনকে ছেড়ে অন্য বোনের পুজোটা কি ঠিক? অন্য কোথাও হলেও বিনপুর থানার হাড়দা গ্রামে হয় না। দুই বোন একই সঙ্গে মর্তে এসেছেন, সুতরাং পুজোটাও হবে একই সঙ্গে। কোজাগরীর রাতে দুই বোনকে পাশাপাশি বসিয়ে পুজো করাটাই দস্তুর বিনপুরে। আর সেটাই প্রায় দেড়শো বছর ধরে করে আসছেন গ্রামবাসীরা।
করোনার আবহে বন্ধ যাত্রাপালা সহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আতসবাজি প্রদর্শনী। তবে রীতি অনুযায়ী এবারও থাকছে জিলিপির দোকান। শুধুমাত্র জিলিপির টানে লক্ষ্মীপুজোয় কয়েক হাজার মানুষ ফি বছর বিনপুর-২ ব্লকের হাড়দা গ্রামে ভিড় জমান। পুজোর সময় এখানে একটি মাত্র দোকানই নিলামের মাধ্যমে জিলিপি বিক্রির অনুমতি পায়। কে সেই দোকান দেবে, তা নিয়ে ‘ডাক’ হয়। জিলিপির বিক্রির জন্য দামও নির্ধারণ করা হয়। চাল ও বিউলির ডালে তৈরি এখানের জিলিপির স্বাদই অন্যরকম। এবার কেজিপ্রতি জিলিপির দাম নির্ধারিত হয়েছে ৮০ টাকা। সর্বোচ্চ ৯১ হাজার টাকা ডাকে এবার জিলিপির দোকানের বরাত পেয়েছেন গ্রামেরই বাসিন্দা বুদ্ধদেব মণ্ডল। এখানের লক্ষ্মীপুজোয় লক্ষ্মী ও সরস্বতীর যুগল আরধনা হয়। যুগ যুগ ধরে এই প্রথা চলে আসছে। লক্ষ্মী ও সরস্বতীর পাশাপাশি লক্ষ্মীপতী নারায়ণ ও দুই দেবীর চারজন সখীরও পুজো হয়।
ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর ব্লকের হাড়দা গ্রাম ৷এবার পুজোর ১৫৯ তম বর্ষ। মণ্ডলদের পারিবারিক পুজোই এখন গ্রামের সকলের পুজো ৷ এমনকী আশপাশের গ্রামের মানুষও মাতেন পুজোর আনন্দে ৷ পুজোর সমস্ত খরচ বহন করেন মণ্ডলরাই ৷ এই পুজোকে কেন্দ্র করে আগে এক মাস ধরে মেলা বসত ৷ পুজো কমিটির সম্পাদক বলেন, করোনার আবহে এবার আতসবাজি ও পাঁচদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পুজোর মূল আকর্ষণ জিলিপির দোকান থাকছে।