ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: দীর্ঘ ৯ বছর পর লন্ডনের উদ্দেশ্যে ৪ অক্টোবর রবিবার দুপুর সোয়া ১২টায় ২৪৪ জন যাত্রী নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটটি (বিজি ০০১) সিলেট আন্তর্জাতিক ওসমানী বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। তবে এটি ঢাকায় ট্রানজিট দিয়ে ১০ ঘণ্টা ৫০ মিনিট পর লন্ডন গিয়ে পৌঁছার কথা। এটি ছিল সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ও প্রত্যাশা। বিমান সূত্র জানায়, আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ওসমানী থেকে লন্ডন রুটে প্রতি রবি ও বুধবার দুটি ফ্লাইট অপারেট হবে। এদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মো. মাহবুব আলী, বলেছেন, আগামীতে সিলেট থেকে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা হবে। বিমানবন্দরের আধুনিকায়নের কাজ শেষ হলে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোও ওসমানীতে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করবে। প্রতিমন্ত্রী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ছাড়াও শিগগিরই বিমানের সিলেট–চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে আশ্বাস দেন। এদিকে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ঘন কুয়াশার অজুহাতে সিলেট–দুবাই–লন্ডন বিমান বাংলাদেশ ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়। এর পর এই রুটে বিমান চলাচলে নানা টানাপোড়নে অতিবাহিত হয় টানা ৯ বছর। বর্তমানে সরাসরি ফ্লাইটটি চালু হওয়ায় লন্ডনগামী সিলেটের যাত্রীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমবে। রবিবার সকাল ৯টায় প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেট–লন্ডন সরাসরি ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মো. মাহবুব আলী। এ উপলক্ষে ওসমানী বিমান বন্দরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোকাব্বির খান ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বলেছিলেন বিমান নিয়ে জনসাধারণের নেতিবাচক ধারণা আছে। প্রতিষ্ঠানটির অনেক বদনাম আছে। এই বদনাম থেকে বিমানকে রক্ষা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা অনুযায়ী বিমানে অনেক শুদ্ধি আনা হয়েছে। ফলে গেল অর্থবছরে বিমান ২শ কোটি টাকার উপরে লাভ করেছে। তিনি বলেন, লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যে ৯০ ভাগ সিলেট অঞ্চলের । তাই ওসমানী বিমানবন্দরে যাতে ৭৭৭ উড়োজাহাজ টেক অফ করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে লক্ষ্যে ওসমানী বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন ও পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। গত এপ্রিলে রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধির কাজ শেষ হয়েছে। গত ১ অক্টোবর নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজও এগিয়ে চলছে। সবমিলিয়ে ওসমানী বিমানবন্দর হবে অত্যাধুনিক বিমানবন্দর। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিলেট–লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালুর আগে যুক্তরাজ্যের ডিএফটির প্রতিনিধি দল দুদফা ওসমানী বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আকাশ যোগাযোগের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক বলেই বিমানের বহরে নতুন নতুন উড়োজাহাজ সংযোজন হয়েছে। বিমানের সুন্দর সুন্দর নামগুলো প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া। প্রধানমন্ত্রী বিমানে যাত্রাকালে সিট থেকে উঠে গিয়ে সহযাত্রীদের খোঁজ খবর নিয়ে থাকেন। তিনি আরও বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার পরও অত্যাধুনিক বিমান বহরে যুক্ত করে সেবা দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, এযাবত ৫৩ টি দেশের সঙ্গে বিমান চলাচলের চুক্তি হয়েছে।বঙ্গবন্ধুও স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশে একদিন এভিয়েশন হাব হবে। তার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।