ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত বিদেশে পলাতক দালালদের গ্রেফতার করতে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারি করার ঘোষণা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ৪ অক্টোবর রবিবার দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল্লাহ হেল বাকী। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ হেল বাকী বলেন, দেশের দালালদের সিংহভাগকে আমরা গ্রেফতার করেছি। বিদেশে পলাতকদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে। ১০–১২ জন দালালের নাম ইতোমধ্যে আমরা পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার আবেদন করবো আমরা। লিবিয়ার মিজদা শহরে পাচারের শিকার আহত নয় জনকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার পর এই ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, লিবিয়ার ১২ জন ভিকটিমের মধ্যে নয় জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাকি তিন জনকে আনা সম্ভব হয়নি। যাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে তারা হলেন– ফিরোজ বেপারি, জানু মিয়া, ওমর শেখ, সজল মিয়া, তারিকুল ইসলাম, বকুল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, সোহাগ আহমেদ ও সাইদুল ইসলাম। যাদের আনা সম্ভব হয়নি তারা হলেন– বাপ্পী দত্ত, সম্রাট খালাসি ও সাজিদ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদা শহরে মানব পাচারকারীদের দ্বারা বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত এবং ১২ জন আহত হন। এই ঘটনায় ২৬টি মামলা করা হয়। তার মধ্যে ১৫টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। ইতোমধ্যে ৪৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিআইডি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হেল বাকী বলেন, ‘মামলার তদন্তকালে অনেক আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত দালাল ও মূল আসামিদের গ্রেফতারের জন্য শিগগিরই রেড নোটিশ জারি করা হবে।’ বর্বরোচিত ঘটনার পর সিআইডি আহত ভিকটিমদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। যার ফলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাংলাদেশ ও লিবিয়ার যৌথ উদ্যোগে তারা বোরাক এয়ারের বিশেষ ফ্লাইট ভি জেড ২১৮ যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিআইডির মানব পাচার ইউনিট লিবিয়া থেকে আসা নয় জন ভিকটিমকে সিআইডির সদর দফতরে নিয়ে আসে। মামলার তদন্তের স্থার্থে ঘটনাস্থলের বর্ণনা, ঘটনার সার্বিক বিবরণ ও প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য নেওয়ার জন্যে ভিকটিমদের বক্তব্য নেওয়া হয়। ঘটনায় শিগগিরই ভিকটিমদের জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এ ঘটনায় সিআইডি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন ও বনানী থানায় তিনটি মামলা করে। সিআইডির তদন্তাধীন ১৫টি মামলায় এখন পর্যন্ত ৪৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে বিদেশে অবস্থারনত ৮ থেকে ১০ জন আসামিকে গ্রেপতার করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হবে।