ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: বাংলাদেশের সরকারি ক্রয়ে জবাবদিহীতা ও দুর্নীতির প্রতিরোধ জোরদারের প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাংক। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের নতুন একটি প্রতিবেদনে এই প্রশংসা করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বর্ধিত স্বচ্ছতায় এবং নাগরিকদের অংশগ্রহণে ই–গভর্ণমেন্ট প্রকিউরমেন্ট বাস্তবায়ন দরপত্রগুলোর একক দরদাতার সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস করে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছে। এর ফলে অ–স্থানীয় সংস্থাগুলোর কনট্রাক্ট পাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে এবং সফল দরদাতাদের শীর্ষে রয়েছে ভাল দাম দেয়া দরদাতারা। প্রতিবেদনে সরকারি কার্যকারিতা এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ খাতগুলোতে দুর্নীতিবিরোধী কৌশলগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানোর উপায়ের ওপর আলোকপাত করা হয়। করোনা মোকাবেলার এই সময়ে যখন নজিরবিহীনহারে জরুরি তহবিল সচল করা হয়েছে, তখন এই রিপোর্টে সরকারি জবাবদিহিতা বাড়াতে কিছু কার্যকর উপায় এবং উপকরণের উপর নজর দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, এমনকি সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অগ্রগতি অর্জন করা যেতে পারে।
প্রচলিত উপকরণগুলোর প্রয়োগ তীক্ষ্ণ করার জন্য আরও কাজ করার ক্ষেত্রে এটি নীতি নির্ধারকদের এবং দুর্নীতি দমনের জন্য একটি রেফারেন্স গাইড হিসাবে কাজ করে। বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেরি পাঙ্গেস্তু বলেন, করোনা পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে এবং ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র ও অসহায়দের সুরক্ষার জন্য দ্রুত গতিতে সরকার বড় আকারের জরুরি ব্যয় করেছে। যেহেতু দেশগুলোর আরও স্বচ্ছল হতে ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধারের পথে এগিয়ে চলেছে, তাই স্বচ্ছ উপায়ে সম্পদের সঠিক ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী সকল পরিবেশে অগ্রগতি সম্ভব এবং দুর্নীতি ও এর ক্ষয়–ক্ষতিজনিত প্রভাব মোকাবেলায় সরকার, সিভিল সোসাইটি এবং বেসরকারি খাতের অংশীদারের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড–১৯ এর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন কিছু জরুরি ব্যয় নিয়মিত ভারসাম্যতার নীতি না মেনেই করা হয়েছে। যদিও এসব বিষয়ের গতি যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বোঝা যায়, তবুও এটি সরকারকে বিভিন্ন ধরণের দুর্নীতির ঝুঁকির মুখোমুখি করে, যা তাদের প্রতিক্রিয়াগুলোর কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। বৃহত্তর জবাবদিহীতা বাড়াতে প্রতিবেদনে সরকারগুলোকে স্বচ্ছ পদ্ধতিতে তাদের কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলা, যথাযথ নিয়ম প্রয়োগ করা, নিয়ম লঙ্ঘন মোকাবেলা করা এবং সমস্যাগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রতিকারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে পাঁচটি মূল বিষয়ভিত্তিক ক্ষেত্র রয়েছে। এগুলো হলো– সরকারি ক্রয়, অবকাঠামো, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ, শুল্ক প্রশাসন এবং পরিষেবা বিতরণ ব্যবস্থা। এছাড়া, এতে উন্মুক্ত সরকারি উদ্যোগ এবং গভটেকের মতো ক্রস–কাটিং থিমসহ সারাবিশ্বের বিভিন্ন কেস স্টাডির উদাহরণ রয়েছে। বিশ্বব্যাংক গভর্ণন্সের গ্লোবাল ডিরেক্টর এড ওলোও–ওকেরে বলেন, সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন, নাগরিক সমাজকে জড়িত করা এবং সরকারি কার্যক্রমে বৃহত্তর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ। বৈশ্বিক প্রতিবেদনটি এমনকি চ্যালেঞ্জিং ও ভঙ্গুর পরিবেশেও দুর্নীতি মোকাবিলার জন্য গভটেক এবং ই–প্রকিউরমেন্টের মত উন্নত ব্যবস্থার সাথে দুর্নীতির মোকাবিলার প্রচলিত পদ্ধতির প্রশংসা করার গুরুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে।