কলকাতা : পুজো বৈঠকে কল্পতরু হয়ে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হওয়ার কথা ছিল করোনা কালে দুর্গাপুজো করার ক্ষেত্রে কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে পুজো কমিটি ও প্রশাসনকে তা নিয়ে আলোচনা। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পুজো কমিটিগুলোর কাছে কার্যত কল্পতরু হিসেবে ধরা দিলেন। কোভিড পর্বে বেহাল আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে ঘোষণা করলেন প্রত্যেক পুজো কমিটিকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে রাজ্য সরকার। এছাড়া দমকল ও প্রশাসনের পারমিশন করতে কোনও টাকা লাগবে না। রাজ্যের সমস্ত মণ্ডপে বিদ্যুতের খরচের অর্ধেক যোগাবে নবান্ন। পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রিন পুলিশ ও আশা কর্মীদের বেতন ১ হাজার করে বৃদ্ধি করেছেন। রাজ্যের ৮১ হাজার হকারকে ২ হাজার টাকা করে পুজো ভাতা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মমতা ব্যানার্জি।পুজো হবে। তবে যে কোনও মূল্যে ভিড় এড়াতে হবে। সে জন্য যা যা ব্যবস্থা করা দরকার করতে হবে প্রশাসন ও পুজো কমিটিগুলোকে। কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে তা এদিন নেতাজি ইনডোরের সভা থেকে স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, খোলামেলা মণ্ডপ করুন। একান্তই মায়ের চালা ঢাকতে হলে চারপাশ খোলা ছাড়ুন।
দুর্গা ঠাকুর দেখতে গিয়ে যাতে ভিড় না হয় তার জন্য বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে পুজো কমিটিকে। মণ্ডপের আধ কিলোমিটার আগেই প্রত্যেকের হাতে বারবার স্যানিটাইজার দিতে হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে মণ্ডপে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
পুরোহিত উন্নয়ন প্রকল্পে দু’মাসের পেনশনের টাকা এদিন মুখ্যমন্ত্রী তুলে দেন বেশ কয়েকজন পরোহিতের হাতে। সেইসঙ্গে গৃহনির্মানের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকাও। এই প্রথম কোন রাজ্য সরকার পুরোহিতদের জন্য ভাবনা চিন্তা করাই খুশি তারা।
কোভিড পর্বে পুজো করার গাইডলাইন দিলেও বৃহস্পতিবারের নেতা ইনডোরজুড়ে ছিলেন কল্পতরু মমতা। ভগ্নপ্রায় অর্থনীতির কারণে এমনিতেই এবার পুজোর বাজার খারাপ। তার উপর বোঝার উপর শাকের আঁটির মতো সংক্রমণের ত্রাস। বাজেট নিয়ে রাতের ঘুম ছুটেছিল পুজো উদ্যোক্তাদের। এবার বাংলায় আদৌ পুজো হবে কি, তা নিয়ে কিছুদিন আগে জল্পনা ছড়িয়েছিল। বিধি নিয়মের নামে ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার নাম না করে সেই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, মনে রাখবেন পুজোর পরে সংক্রমণ বাড়লে কিন্তু শকুনেরা বলা শুরু করবে মমতা কেন পুজো করতে দিল। তাই যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের শ্রেষ্ঠ পার্বন উপভোগ করুন।