আবারও কেন্দ্রের হয়ে ব্যাট ধরলেন ধনকর, আক্রমন মমতাকে ?


মঙ্গলবার,২২/০৯/২০২০
1374

কলকাতা : কেন্দ্রীয় সরকার গায়ের জোরে কৃষি বিল সংসদে পাশ করিয়েছে এই অভিযোগ তুলে সোচ্চার বিরোধীরা। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদে সামিল হয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল সহ দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রবিবার রাজ্যসভায় গভীর রাতে এই বিল পাস হওয়ার পর সোমবার কেন্দ্রের মোদি সরকারকে নিশানা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণ করেছিলেন “ব্ল্যাক সানডে” বলে। মমতার অভিযোগ ছিল কেন্দ্রের মোদি সরকার গায়ের জোরে এই বিল পাশ করিয়েছে। কৃষক স্বার্থের পরিপন্থী এই বিল। নয়া এই বিল কৃষকদের আরো বিপদ গ্রস্থ করে তুলবে। কর্পোরেট দুনিয়ার স্বার্থ দেখতে গিয়ে কৃষকদের স্বাস্থ্য কেন্দ্র জলাঞ্জলি দিয়েছে এমন অভিযোগ তোলেন মমতা। মমতার এই আক্রমণের পাল্টা আক্রমণ শোনালেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে ব্যাট ধরলেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার টুইট করে রাজ্যপাল লিখেছেন, “মমতার কুমিরের কান্না কৃষকদের দুঃখ উপশম করবে না।” এই ইস্যুতে রাজনীতির ময়দান যখন উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে তখন ফের রাজ্যপালের তোপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার কিষাণ সম্মান নিধি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নিলেন রাজ্যপাল।

টুইটার পোস্টে রাজ্যপাল বলেছেন ‘মুখ্যমন্ত্রীর কুমিরের কান্না কৃষকদের দুঃখ উপশম করবে না।’ সেই সঙ্গে মমতার বিরুদ্ধে সংকীর্ণ রাজনীতির অভিযোগও তিনি তুলেছেন। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে আসছেন। আইন-শৃংখলার প্রশ্ন থেকে চিটফান্ড কিংবা সিন্ডিকেট কোন ইস্যুতেই থেমে থাকেননি তিনি। কৃষি বিল নিয়ে যখন গোটা দেশের রাজনীতির পারদ চড়ছে তখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শানিয়ে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘বাংলা প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধিতে অংশ না নেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের ৭০ লক্ষ কৃষক ৮,৪০০ কোটি টাকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কৃষকরা ১২ হাজার টাকা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেয়ে যেতেন। কিন্তু তা তাঁরা পাননি৷’ রাজ্যপালের মতে, বাংলা ছাড়া দেশের দেশের সব প্রান্তের কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী কিষাণ নিধি প্রকল্পের দ্বারা উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সরকারের অনিচ্ছার কারণে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বাংলার লক্ষ লক্ষ কৃষক। রাজ্যপালের মতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কৃষক দরদী হতেন তাহলে এই প্রকল্পের সুবিধা বাংলার কৃষকদের পাইয়ে দিতেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন রাজ্য সরকার এই বিষয়ে আরো উদ্যোগী ভূমিকা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের স্বার্থে কাজ করবেন।

রাজ্যসভায় কৃষি বিল পাশ করার পদ্ধতি নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিলে কৃষকদের কোনও উপকারে লাগবে না বলেই দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। কৃষকদের স্বার্থরক্ষার লড়াই করতে গিয়ে আট সাংসদ সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেও বর্ণনা করেছেন তিনি। একই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে ‘ফ্যাসিবাদী’ তকমা দিয়ে রাস্তায় নেমে লড়াই করার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের শাসক দলের প্রধান। তারপরই মমতা সরকারকে নিশানা করে রাজ্যপালের এই টুইট। যা আদতে রাজভবন-নবান্ন সংঘাতে নতুন ইন্ধন যোগ করল বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজভবন বনাম নবান্নের লড়াই যখন জমজমাট তখন তৃণমূল কংগ্রেস রাস্তায় নেমে আন্দোলন সংগঠিত করে চলেছে।জমি বিলের প্রতিবাদে সিঙ্গুর আন্দোলনের ঢেউ

সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ লক্ষ্মী দাস আবারো রাজপথে। ষাটোর্দ্ধ এই বৃদ্ধা সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের রমনীদের নিয়ে সটান কলকাতায়। কেন্দ্রের মোদি সরকারের জমি বিলের প্রতিবাদ জানাতে তাঁরা হাজির কলকাতায়। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভ সমাবেশ। আর এই বিক্ষোভ সমাবেশে বরণ ডালা নিয়ে নেত্রীদের বরণ করেন তাঁরা।

কৃষি বিল এর প্রতিবাদে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। আর পরদিনই দলের মহিলারা অবস্থান বিক্ষোভে বসলেন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে। এই আন্দোলন ধারাবাহিক ভাবে চলবে বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস এর অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, রত্না ঘোষ, অসীমা পাত্র, বিধাননগর পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী প্রমুখ। আজ বুধবার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভে অংশ গ্রহণ করবে ছাত্র-যুবরা। আগামীকাল অংশগ্রহণ করবে কৃষক সভার সদস্যরা এই ভাবেই আন্দোলন দীর্ঘায়িত হবে বলে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এদিকে তৃণমূলসহ বিজেপি বিরোধী সাংসদদের সংসদের ও আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পল।ডেরেক ও’ব্রায়েন, দোলা সেনরা সংসদে যে আচরণ করেছেন তাতে বাংলার লজ্জা। বিশ্বের কাছে বাংলার মুখ ছোট হয়েছে। মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। তিনি বলেন যে দলের নেত্রী কয়েক বছর আগে সংসদে ঠিক এরকম আচরণ করেছিলেন তাদের দলের সাংসদদের পক্ষেই এ ধরনের ঘটনা শোভা পায়। বাংলার মানুষ এ ধরনের আচরণ কখনই মেনে নেন না বলে মন্তব্য করেন অগ্নিমিত্রা।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট