কলকাতা : প্রায় ৬ মাস পরে, কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই উত্তরবঙ্গে সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রের খবর, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর তিনি উত্তরবঙ্গে পৌঁছবেন একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে।
জানা গেছে, উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন উত্তরবঙ্গের মন্ত্রী এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। সূত্রের খবর, মূলত করোনা পরিস্থিতির মধ্যে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি কোথায় অবস্থান করছে, তা খতিয়ে দেখবেন মুখ্যমমন্ত্রী। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে উন্নয়নের হিসেব নেবেন তিনি, কোন কোন জেলা কোন কাজে এগিয়েছে, কোন জেলাই বা কীসে পিছিয়ে পড়েছে, সেসব নিয়ে সরকারি ভাবে জানতে চাইবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের কাছে।
পাশাপাশি, ওই সফরে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধনও করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একগুচ্ছ কর্মসূচি সেরে ২৪ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ফেরার কথা তাঁর।
গত মার্চে শেষ উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মালদায় প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন তিনি। সেখানে বলেছিলেন, দিল্লি দাঙ্গা থেকে নজর ঘোরাতে করোনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে মোদী সরকার। এর পরই করোনার জেরে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। তার পর থেকে কলকাতার বাইরে বেরোননি মমতা।
রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সামনেই ২০২১-এর নির্বাচন আসছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য প্রাক নির্বাচনী প্রচারে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। অন্যান্যবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বিভিন্ন জেলা ধরে ধরে নিজে গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন, এবার তা সম্ভব হয়নি। তবে নিজে যেতে না পারলেও নবান্ন সভাঘর থেকে জেলাকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী কিছু দিন আগে বলেছিলেন, সেপ্টেম্বর মাসের ১৯-২০ তারিখ করে করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন অনেকেই। সেই পরিস্থিতি দেখেই জেলাসফর শুরু করার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সূত্রের খবর, করোনার সংক্রমণ বলার মতো না কমলেও, তাঁর সেই কথামতোই করোনা আবহেই প্রথম জেলাসফর শুরু করে দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উত্তরবঙ্গ দিয়েই শুরু হচ্ছে সফর। নবান্ন সূত্রের খবর, প্রাথমিক লক্ষ্য একটাই, করোনার কারণে বা অন্য কারণে যে ঘাটতিগুলি তৈরি হয়েছে, তা আগামী দিনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পূরণ করে দিতে হবে। সামনেই ভোট, সেদিকে নজর রেখেই সামনে থেকে খতিয়ে দেখে কাজের রূপরেখা তৈরি করতে চাইছেন তিনি। বস্তুত, এটাই তৃণমূল নেত্রীর পুরনো অভ্যাস। জেলাসফরে গিয়ে সামনে থেকে সুবিধা-অসুবিধা খুঁটিয়ে দেখে সেই বুঝে দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের নির্দেশ দিতে সিদ্ধহস্ত তিনি।