কলকাতা : বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বাকি থাকায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর রোষে পড়লেন মন্ত্রী, আমলারা। মঙ্গলবার নবান্নে ভার্চুয়াল বৈঠক থেকে মমতার সাফ নির্দেশ, পুজোর আগেই সরকারি প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ফেলতে হবে। মমতার কথায়, প্যান্ডেমিক বলে বাড়ির দরজা বন্ধ করে খালি ঘুমিয়ে থাকব, তা হয় নাকি!
এদিন পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে গতি কমায় উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কখনও ডিজিকে হুঁশিয়ারি, কখনও জেলাশাসক ও দলের নেতাদের কাজে গতি আনতে নির্দেশ দেন তিনি। ধরে ধরে জেলাগুলোর প্রকল্পের কাজের হিসেব নেন মমতা। জেলাশাসকদের প্রশ্ন করেন, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে কেন করোনা বাড়ছে? পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক জানান, ভিন রাজ্য থেকে প্রচুর মানুষ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তার জন্য সংক্রমিতের সংখ্যা কিছুটা বেশি। মমতা বলেন, অন্য রাজ্য থেকে এ রাজ্যে এলে তাঁদের চিকিৎসা করুন। কিন্তু তাঁদের রাজ্যের করোনা রোগীর সংখ্যার সঙ্গে কাউন্ট করবেন না।
পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার ওসি-সহ ১৬ জন পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীর করোনা সংক্রমিত হওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় পরামর্শ দিলেন পুলিশ কর্মীদের বারাক ভাগ করে দেওয়ার। যাতে সামাজিক দূরত্ব মানা সহজ হয়। তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সেখানকার সুস্থতার হার নিয়ে।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে জটিলতার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তাই সেই কাজ আর এক মুহূর্তও ফেলে রাখতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, খুব বেশি হলে এর জন্য অতিরিক্ত ৭ দিন সময় দেওয়া যেতে পারে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার রাস্তার কাজ বাকি থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়েন ওই জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। মমতার কথায়, লজ্জা লাগছে না শুনতে? প্যান্ডেমিক বলে যদি দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘুমিয়ে থাকি, তাহলে চলবে? সাতদিনের মধ্যে ওই কাজের গতিপ্রকৃতির রিপোর্ট চেয়ে পাঠান তিনি। পাশাপাশি বাংলা আবাস যোজনার কাজ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়ে মমতার বার্তা, যদি ভাবেন সামনে নির্বাচন আছে, তাই কোনওভাবে কয়েকমাস কাটিয়ে দেব, তাহলে ভুল ভাবছেন। সরকার কাজ করে যাবে। আপনারাও কাজ ফেলে রাখবেন না।
বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও সড়ক যোজনার ছোট রাস্তা দিয়ে ভারী গাড়ি কেন চলছে তা নিয়ে এদিন রাজ্য পুলিশের ডিজি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েন। বলেন, কতবার বলেছি ছোট রাস্তা দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে। এর পরে হলে আমি কিন্তু ছাড়ব না, ডিজিকে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর।১০০ দিনের কাজে পারিশ্রমিক কেন আটকে রয়েছে তা নিয়েও জেলাশাসকদের প্রশ্ন করেন মমতা। তাঁরা জানান ৭ শতাংশ কর্মীর পেমেন্ট আটকে আছে। শোনামাত্র মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অবিলম্বে সার্ভে করে দেখতে হবে কারা টাকা পাননি। কোভিড পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক আটকে রাখা চলবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি। মমতার কথায়, গত কয়েক মাস কোভিডের কারণে সরকারি কাজে গতি কমেছিল। সে সব কাজ পুজোর আগেই শেষ করতে হবে।