বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রশংসায় রাজ্যের পঞ্চায়েতি কাজ

শুধু পরিকল্পনা গ্রহণ নয়, তার বাস্তবায়নও হয়। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যের সাফল্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। সম্প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক স্বশক্তিকরণ গ্রাম পঞ্চায়েত বা IPSGPP কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজ্যের কাজকর্মের অগ্রগতি নিয়ে ভার্চুয়াল পর্যালোচনা করেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা। সেখানেই বাংলার পঞ্চায়েত দফতরের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায় বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের মুখে। বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট কর্মসূচির কাজ চলছে বিভিন্ন রাজ্যে। আধুনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে পঞ্চায়েত স্তরের উন্নয়নের কাজ করার লক্ষ্যে ২০১০ সালে এই আইএসজিপিপি’র সূত্রপাত। প্রথম পর্যায়ের কাজে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছিল। এখন চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। যার মেয়াদকাল ২০১৭ সাল থেকে ২০২২। এই পঞ্চবার্ষিকী কর্মসূচিতে মোট বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। যার ৭০ শতাংশ টাকা দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বাকি ৩০ শতাংশ দেয় রাজ্য। এই কাজকর্মের অগ্রগতি দেখে খুশি বিশ্বব্যাঙ্কের কর্তারা। দেখা গিয়েছে, অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আইএসজিপিপি’তে বরাদ্দকৃত টাকা খরচে বহু এগিয়ে রয়েছে বাংলা। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত মোট বরাদ্দের ৪৫ শতাংশ টাকা খরচ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। এই অর্থ খরচ করলে মিলবে পরবর্তী পর্যায়ের টাকা। এই সময়সীমার মধ্যে ৬৫ শতাংশ টাকাই উন্নয়ন খাতে খরচ করে ফেলেছে বাংলা। রাজ্যের মোট ৩ হাজার ২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের কাজের অগ্রগতি ও বরাদ্দকৃত অর্থের হিসেব তুলে ধরেন আধিকারিকরা। তা দেখেই সন্তোষ প্রকাশ করে বিশ্বব্যাঙ্ক।

দিল্লিতে বিশ্বব্যাঙ্কের ‘টাস্ক টিম’-এর অফিস আছে। তারাই আইএসজিপিপি সহ একাধিক প্রকল্পের তদারকি করে। মার্চ মাসে ‘টাস্ক টিম’ ও বিশ্বব্যাঙ্কের একটি প্রতিনিধি দলের এ রাজ্যে আসার কথা ছিল। জেলায় জেলায় গিয়ে আইএসজিপিপি’র কাজ পর্যালোচনা করতেন তাঁরা। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে তা সম্ভব না হওয়ায়,নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের ‘টাস্ক টিম’। সেখানে বাংলার কাজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন ‘টাস্ক টিম’ এর প্রতিনিধিরা।

আইএসজিপিপি’র দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের পুনর্গঠন, আসবাব তৈরি, নতুন ভবন, যাত্রী প্রতিক্ষালয় ইত্যাদি নির্মাণ সহ পরিকাঠামো উন্নয়নের একাধিক ক্ষেত্রে এবার জোর দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজকর্মকে ডিজিটাল নির্ভর করে তোলাও এই কর্মসূচির অন্যতম অঙ্গ।
বাৎসরিক কাজে মূল্যায়নের নিরিখে এই প্রকল্পের টাকা পায় পঞ্চায়েতগুলি। যারা যোগ্যতার মাপকাঠি ছুঁতে পারে, তারা প্রায় ২০ লক্ষ টাকা করে পায়। এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রায় প্রতিটি পঞ্চায়েতই আইএসজিপিপি’র অন্তর্ভুক্ত।

আর এই কর্মসূচির কাজকর্মে বিশ্ব ব্যাঙ্কের বাহবা পেয়ে স্বাভাবিক ভাবে খুশি রাজ্য সরকার। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি বলেন, ”গ্রামীণ এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন এবং পঞ্চায়েত অফিসের পরিকাঠামো উন্নয়নে আমরা অনেকের থেকেই এগিয়ে। আর তা সম্ভব হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দূরদর্শিতায়।’’

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন দোহাল

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোহাল আজ বেজিংয়ে, ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন।…

4 days ago

ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন

আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন। ৩৯ টি দেশের…

4 days ago

তারা আর কোনো চাকরির পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী’- NTA, আগামী বছর থেকে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা…

4 days ago

গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এবারের গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।…

4 days ago

‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি :সুকান্ত

রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে ন্যাশনাল ‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা…

4 days ago

বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে নিবন্ধিকৃত হতে হবে

সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া SEBI জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে…

4 days ago