ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে অবস্থা ততটা খারাপ নয়। বিশেষ করে মৃত্যুহারে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। করোনা সংক্রমিত শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬তম। এই দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র সৌদি আরবের তুলনায় বাংলাদেশে মৃত্যুহার কিছুটা বেশি। সৌদি আরবে মৃত্যুহার ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ আর বাংলাদেশে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। সুস্থতার হারেও বাংলাদেশ খুব একটা পিছিয়ে নেই। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুহার বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। একইভাবে দেশটি সুস্থতার হারেও বাংলাদেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশ, বিশেষ করে রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালির তুলনায় মৃত্যুহার বাংলাদেশে কম। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশ ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায়ও বাংলাদেশে মৃত্যুহার কম। মৃত্যুহার কম ও সুস্থতার হার বৃদ্ধির বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে নানা অব্যবস্থাপনা থাকলেও মৃত্যুহার ও সুস্থতার হারের বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। তবে মৃত্যুহার কম হওয়ার কারণ কী, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেনি তারা। এটি নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকে।
কারণ, বস্তি এলাকায় মানুষ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানলেও সংক্রমণ কম। আবার কোমরবিডিটি থাকার পরও অধিকাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন। এর পেছনে কারণগুলো খুঁজে বের করা জরুরি বলে মনে করেন কেউ কেউ। করোনাভাইরাসের তথ্য–উপাত্ত সংরক্ষণ করছে ওয়ার্ল্ডওমিটারস.ইনফো নামে একটি ওয়েবসাইট। ওই ওয়েবসাইটের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বিশ্বের এক কোটি ৮৭ লাখ ২৮ হাজার ৯০৮ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে সাত লাখ চার হাজার ৮৬৮ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন এক কোটি ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৮ জন। এ হিসাবে মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৬৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সংক্রমণ, মৃত্যু ও সুস্থতার হারে কোন দেশ কী অবস্থায় রয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো– যুক্তরাষ্ট্র :সর্বোচ্চ সংক্রমিত যুক্তরাষ্ট্রে ৪৯ লাখ ১৮ হাজার ৭৭০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার ৩২৩ জনের। সুস্থ হয়েছেন ২৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৯ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ছয় কোটি ১৬ লাখ ২১ হাজার ৯১৬ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। মৃত্যুহার ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৫০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ব্রাজিল :দ্বিতীয় সংক্রমিত দেশ ব্রাজিলে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ২৮ লাখ আট হাজার ৭৬ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯৬ হাজার ৯৬ জনের।
সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৭৬৭ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি ৩৩ লাখ ২৯ হাজার ২৮ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৭০ দশমিক ১৮ শতাংশ। ভারত :তৃতীয় সংক্রমিত দেশ ভারতে এ পর্যন্ত ১৯ লাখ ১০ হাজার ৬৮১ জন শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৯ হাজার ৮৫৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৮২ হাজার ৯১৭ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪০২ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ। মৃত্যুহার ২ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৬৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। রাশিয়া :সংক্রমণের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে থাকা রাশিয়ায় এ পর্যন্ত আট লাখ ৬৬ হাজার ৬২৭ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১৪ হাজার ৪৯০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৬৯ হাজার ২৬ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ কোটি ৯৪ লাখের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। মৃত্যুহার ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৭৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। দক্ষিণ আফ্রিকা :পঞ্চম স্থানে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকায় এ পর্যন্ত ৫ লাখ ২১ হাজার ৩১৮ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৮৮৪ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫১ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩০ লাখ ৭৮ হাজার ২০২ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মৃত্যুহার ১ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৬৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মেক্সিকো : ষষ্ঠ স্থানে থাকা মেক্সিকোতে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬১ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৮ হাজার ৮৬৯ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লাখ ২৫৪ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ লাখ ২৬ হাজার ২৯৪ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৪৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
মৃত্যুহার ১০ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৬৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। পেরু :সপ্তম স্থানে থাকা পেরুতে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯০ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ৭ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২ হাজার ৪৫৭ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৪ লাখ ৪০ হাজার ১৮৪ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ০২ শতাংশ। মৃত্যুহার ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৬৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চিলি :অষ্টম স্থানে থাকা চিলিতে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৯৬২ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯ হাজার ৭৪৫ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩০ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৪১৫ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ। মৃত্যুহার ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। স্পেন :নবম স্থানে থাকা স্পেনে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯৪ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৪৯৮ জন মারা গেছেন। সুস্থতার কোনো হিসাব দেওয়া হয়নি। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭০ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৯ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। মৃত্যুহার ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। কলোম্বিয়া :দশম স্থানে থাকা কলোম্বিয়ায় ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৯ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ১১ হাজার ৩১৫ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ২৫৮ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৭ লাখ ২৩ হাজার ৫০৮ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৫৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। ইরান :১১তম স্থানে থাকা ইরানে ৩ লাখ ১৪ হাজার ৭৮৬ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ১৭ হাজার ৬১৭ জন মারা গেছেন।
সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৫৩৫ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৫ লাখ ৬০ হাজার ৩৭৪ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। মৃত্যুহার ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। যুক্তরাজ্য :১২তম স্থানে থাকা যুক্তরাজ্যে ৩ লাখ ৬ হাজার ২৯৩ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ৪৬ হাজার ২৯৯ জন মারা গেছেন। সুস্থতার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৪২ হাজার ৯৯২ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১ দশমিক ৮০ শতাংশ। মৃত্যুহার ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ। সৌদি আরব :১৩তম স্থানে থাকা সৌদি আরবে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৬ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ২ হাজার ৯৮৪ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭১৩ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ২৮ হাজার ৪০ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। মৃত্যুহার ১ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। পাকিস্তান : ১৪তম স্থানে থাকা পাকিস্তানে ২ লাখ ৮১ হাজার ১৩৬ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ৬ হাজার ১৪ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৮৬ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২০ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭০ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মৃত্যুহার ২ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ইতালি : ১৫তম স্থানে থাকা ইতালিতে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪১৯ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৩৫ হাজার ১৭১ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৭৬৬ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮৯ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। মৃত্যুহার ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
বাংলাদেশ : ১৬তম স্থানে থাকা বাংলাদেশে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৪ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ হাজার ২৬৭ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৫০ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ লাখ ১২ হাজার ৪১৬ জনের। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বিশেষজ্ঞ বলছেন, গবেষণা প্রয়োজন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে মৃত্যুহার কম এবং সুস্থতার হার বৃদ্ধির বিষয়টি ইতিবাচক। তবে এর পেছণে কী কারণ, তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে হলে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা দরকার। কারণ দেশে বস্তি এলাকায় করোনা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানার পরও সেখানে সংক্রমণ কম। আবার শারীরিক পরিশ্রম বিশেষ করে রিকশাচালক, কৃষক, দিনমজুরসহ শ্রমজীবী মানুষের মধ্যেও সংক্রমণ অত্যন্ত কম। একই সঙ্গে কোমরবিডিটি আছে, এমন মানুষ আক্রান্ত হলেও অধিকাংশ সুস্থ হয়ে উঠছেন। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন। তাহলে এর প্রকৃত কারণ বের হবে। এ সংক্রান্ত গবেষণা আগামী সপ্তাহের মধ্যে শুরু হতে পারে বলেও জানান এই বিশেষজ্ঞ। চাইল্ড হেলথ রিচার্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অণুজীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সমীর সাহা বলেন, সংক্রমণের বিষয় নিয়ে বিশ্বে খুব একটি গবেষণা হয়নি। তবে ভারতের একটি অঞ্চলে কিছুদিন আগে খুব সীমিত পরিসরে একটি বস্তি এলাকায় গবেষণা হয়। এতে দেখা যায়, বস্তি অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেড়েছে। এ কারণে তাদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ কম হয়েছে। তবে বাংলাদেশের বস্তি অঞ্চল, শ্রমিক ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষের মধ্যেও সংক্রমণ কম। তাদের মধ্যেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে নাকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে করোনা সংক্রমণ হচ্ছে না, এটি জানতে গবেষণার প্রয়োজন। বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের তালিকা করে এই গবেষণা হওয়া উচিত। কারণ দেখা যাচ্ছে, শারীরিক পরিশ্রম কম করে, এমন মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
আবার বিদেশে সুস্থ ছিল কিন্তু দেশে আসার পর অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কী কারণে এমনটি হচ্ছে, তা জানতে জরুরি গবেষণার প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য :সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাসের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেকে না জেনে সমালোচনা করছেন। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ভালো না হলে মৃত্যুহার অনেক বেশি থাকত। সুস্থতার হারও এতটা হতো না। বাসাবাড়িতে অবস্থান করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করেও অধিকাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আবার হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যেও অধিকাংশ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। করোনা ডেডিকেটেড অনেক হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা পড়ে আছে। কারণ টেলিমেডিসিন সেবা অনেক বেশি সক্রিয় করা হয়েছে। ফোনের মাধ্যমে উপদেশ নিয়ে ওষুধ সেবনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে আক্রান্তদের উল্লেখযোগ্য অংশ সুস্থ হয়ে উঠছেন। তা ছাড়া বর্তমানে সংক্রমণও কমে আসতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় সবার প্রতি আহ্বান থাকবে– যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি ও সমাজিক দূরত্ব মেনে চলুন।