পশ্চিম মেদিনীপুর:- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বুধবার বীরসিংহ গ্রামে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অগণিত মানুষ। এদিন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইও বীরসিংহে মা ভগবতী দেবী ও বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
১৮৯১ সালের (২৯ জুলাই) আজকের দিনে মারা যান উনবিংশ শতকের এই বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকারল সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজবোধ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই।রচনা করেছেন জনপ্রিয় শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয় সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক ও সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ।
বিধবা বিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষার প্রচলন, বহুবিবাহ ও বাল্য বিবাহের মতো সামাজিক অভিশাপ দূরীকরণে তাঁর অক্লান্ত সংগ্রাম আজও যথোচিত মর্যাদায় স্মরণ করা হয়। বাংলার নবজাগরণের এই পুরোধা ব্যক্তিত্ব দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে পরিচিত ‘দয়ার সাগর’ নামে। দরিদ্র, আর্ত ও পীড়িত কখনই তাঁর কাছ থেকে ফিরে যেতেন না। নিজের চরম অর্থসংকটের সময়ও তিনি ঋণ নিয়ে পরোপকার করেছেন। তাঁর পিতামাতার প্রতি তাঁর ঐকান্তিক ভক্তি ও বজ্রকঠিন চরিত্রবল তাঁকে প্রবাদপ্রতিম করে তোলে।
অন্যান্য বছর এই দিনটিতে বিদ্যাসাগর স্মরণ হয় বিভিন্ন সভা, প্রভাতফেরি এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কিন্তু এই বছর করোনা আবহে পরিস্থিতি এবং ছবি বদলে গিয়েছে। ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চব্বিশে সেপ্টেম্বর বীরসিংহ গ্রামে এসেছিলেন এবং তিনি বীরসিংহকে আদর্শ গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন । পাশাপাশি তাঁর জন্মভিটে ও বীরসিংহ ভগবতী বিদ্যালয়কে হেরিটেজ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এই বছর প্রভাতফেরি ,আলোচনা সভা হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে এসে অনেকে বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করছেন। যে সমস্ত সংস্থা কয়েকজনকে নিয়ে মাল্যদান করতে এসেছেন তারা থানা থেকে অনুমতি নিয়ে আসছেন।