ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: করোনাকালে কাজ, খাদ্য, চিকিৎসা ও কর্মহীনদের রেশনিং এবং কৃষক ও কৃষি উৎপাদন রক্ষায় সার–বীজ–কীটনাশক ও সেচে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ–ডিজেল বিনামূল্যে কৃষককে প্রদানের দাবি জানান কৃষক সংগ্রাম সমিতির নেতৃবৃন্দ ২২ জুলাই ২০২০ বুধবার সকাল ১১টায় কেশবপুরের নারায়ণপুরে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, নিরবতা পালন, শপথ পাঠ ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহাসিক ডহুরী দিবস ও শহীদ গোবিন্দ দত্তের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের কৃষক সংগ্রাম সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফিজুর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট যশোর জেলার সহ–সভাপতি আশুতোষ বিশ্বাস ও কৃষক সংগ্রাম সমিতি যশোর জেলার সহ–সভাপতি আবু বক্কার সরদার প্রমূখ। স্মরণসভাটি পরিচালনা ও শপথ পাঠ করেন সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হক। সভায় নেতৃবৃন্দ ঐতিহাসিক ডহুরী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও ভূমিহীন আন্দোলনের পুরোধা পুরুষ সাইফুল্লাহ লস্কর, কালীপদ দাস, কৃষকনেতা আব্দুর রাজ্জাক সরদার, গোবিন্দ সরকারসহ জলাবদ্ধতা নিরসন আন্দোলনের নেতৃত্বদের স্মরণ করে ডহুরীর শিক্ষাকে অগ্রসর করার আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ করোনা মহামারীকালে কাজ, খাদ্য, চিকিৎসা ও কর্মহীনদের পূর্ণাঙ্গ রেশনিংয়ের দাবিতে আন্দোলন অগ্রসর করার জন্য সর্বস্তরের শ্রমিক–কৃষক–জনতাকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। দেশের চলমান দীর্ঘস্থায়ী বন্যাপীড়িতদের সর্বাত্মক ত্রাণ সহায়তা প্রদানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ কৃষক ও কৃষি উৎপাদন রক্ষায় সার–বীজ–কীটনাশক ও সেচে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ–ডিজেল বিনামূল্যে কৃষককে প্রদানের দাবি জানান। সাথে সাথে অন্যান্য কৃষি উপকরণে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন খরচ কমানোর কথা বলেন। এবারের বাজেটে ভ্যাট আইনের নতুন মাত্রায় সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওপর যে প্রভাব পড়বে, তা মেটাতে হবে সাধারণ জনগণকে। বিশেষ করে নিম্ন আর মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রায় পণ্যের ওপর ভ্যাটের আরোপের ফলে মূল্য বৃদ্ধি গণমানুষকে বিপদের মুখোমুখি করবে। অনেক পণ্যে নতুন করে ভ্যাট সংযোজন, আবার ভ্যাটযুক্ত জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে দুঃসহ করে তুলতে পারে।
করোনা মহামারীতে কর্মহীনসহ সর্বস্তরে এই মূল্য বৃদ্ধি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’-এর শামিল। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির টিকিয়ে রাখার পেছনে যাঁরা মূল শক্তি সেই কৃষক, দেশীয় ও প্রবাসী শ্রমিক করোনার বড় শিকার ও বাজেটে অবহেলিতই রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো সরকার, লুটেরা ও খেলাপিদের হাতে বন্দী। কেবল আয়বৈষম্যই নয়, আঞ্চলিকবৈষম্য, গ্রাম–শহরের বৈষম্য অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট করছে। দেশের সম্পদ এখন মুষ্টিমেয় ধনীর হাতে কেন্দ্রীভূত। স্বাস্থ্যখাতে সমন্বয়হীনতা, দুর্নীতি, ও অব্যবস্থাপনায় মানুষের আস্থা হারিয়ে ভেঙ্গে পড়েছে। সার্বিক র্অর্থনীতি মন্দার দিকে যেতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা। এমতাবস্থায় নেতৃবৃন্দ ডহুরীর শিক্ষাকে উর্দ্ধে তুলে ধরে শ্রমিক–কৃষক–জনগণকে প্রচলিত সমাজ ও রাষ্ট্রের ব্যর্থতার স্বরূপ তুলে ধরে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে কৃষক আন্দোলনকে অগ্রসর করার আহ্বান জানান।