ডেস্ক রিপোর্ট ঢাকা: যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট, ধরলাওবারোমাসীয়নদীরপানিকমতেশুরুকরলেওএখনোবিপৎসীমারওপরদিয়েবইছে।অপরদিকেপানিবাড়ছেপদ্মায়।
২ জুলাই বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর ভাগ্যকূল পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। সেখানে আরো বলা হয়েছে, ব্রক্ষ্মপুত্র–যমুনা নদ–নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা–পদ্মা নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সুরমা ব্যতীত আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এ অববাহিকার প্রধান নদী সমতল হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। পর্যবেক্ষণাধীন ১০১টি পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৪টি, হ্রাস ৪৫টি এবং অপরিবর্তিত আছে দুটির। গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি জানায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকার বিভিন্ন নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী দৌলতদিয়া ইউনিয়নের কুশাহাটা, যদু মাতবরপাড়া, নতুনপাড়া, হাতেম মন্ডলপাড়া, লালু মন্ডলপাড়া, ইদ্রিসপাড়া, মালতপাড়া, জয়দার মন্ডলপাড়া, ২ নম্বর বেপারীপাড়া, বাহিরচর গ্রাম, দেবগ্রাম ইউনিয়নের বেতকা, রাখালগাছি, মধু সরদারপাড়া, জলির মুন্সিরপাড়া ও কাউয়ালজানি গ্রাম। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদী অববাহিকার নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের আরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যেই বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলায় ১২৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়ছে বলে জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়। গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি কমতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও গতকাল বৃহস্পতিবারেও ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বানভাসি মানুষের মধ্যে খাবার, বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা ও গবাদি পশুর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নদ–নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ধরলা নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ধরলা ও বারোমাসীয় নদীর তীববর্তী এলাকার প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি। তলিয়ে গেছে ৩০০ হেক্টর জমির পাট, ৩০ হেক্টর সবজি খেত, বীজতলা ৩ হেক্টর ও আউশ ধান ১০ হেক্টর।
বেগুনের বীজ রোপণ করার সময় চলে যাচ্ছে অথচ উপজেলার বেগুন চাষ করতে না পেরে বড় দুচিন্তায় আছে চাষিরা। বেগুন চাষ পিছিয়ে যাচ্ছে বলে জানান নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক ধীরেন্দ্র নাথ, আশিদুল, হাসেম আলীসহ অনেকেই। জামালপুরের বকশীগঞ্জে বন্যার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এখন পর্যন্ত চার ইউনিয়নে বন্যার পানিতে ৩০টি গ্রামের ৩৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বিলেরপাড়, বাংগাল পাড়া, মদনের চর, চর গাজীরপাড়া, চর কামালের বার্ত্তী, চর আইরমারী, কতুবের চর গ্রামের সব যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে।