ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশগামী যাত্রীদের সঠিকভাবে করোনার লক্ষণ শনাক্তের পরীক্ষা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে বিদেশে যাওয়ার পর অনেক যাত্রীর দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়ছে। এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী আকার ধারণ করার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ মার্চ থেকে কয়েকটি ছাড়া আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। গত ১৫ জুন সীমিত আকারে সে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমানে চড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। কিন্তু শাহজালালে যাত্রীদের শুধু তাপমাত্রা মাপা ও একটি ফরম পূরণ ছাড়া নিবীড়ভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না বলে অভিযোগ উঠে। ফলে দেখা যায়, এ দেশের বিমানবন্দর দিয়ে নির্বিঘ্নে অনেক যাত্রী বিমানে চড়তে পারলেও আটকে যাচ্ছেন অন্য দেশে প্রবেশ করতে গিয়ে। তাদের পরীক্ষায় ধরা পড়ছে করোনা থাকার বিষয়টি।
গত ১১ জুন ঢাকা থেকে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট গুয়াংঝু যাওয়ার পর সেখানে ১৭ যাত্রীর শরীরে করোনা ধরা পরে। ফলে ওই এয়ারলাইন্সের ঢাকা–গুয়াংঝু রুটে এক মাসের জন্য ফ্লাইট স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় সে দেশের এভিয়েশন সংস্থা। এর আগে এপ্রিলে বাংলাদেশ বিমানের একটি চার্টার ফ্লাইট জাপান গেলে সেখানের বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় দুজন যাত্রীর করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়লে চার্টার্ড ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটি। এ প্রসঙ্গে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান জানান, এটি বিমানবন্দরে নিয়োজিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দেখে থাকেন। যাত্রী যে দেশে যাচ্ছেন, সে দেশের চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র, ভিসার মেয়াদ ইত্যাদি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ও ইমিগ্রেশন বিভাগ দেখে। তবে কোনো যাত্রীর যদি শরীরে তাপমাত্রা বেশি হয় কিংবা সর্দি–কাশি থাকে, তাহলে তাকে বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। চীন বা জাপানে যাওয়া যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, বিমানবন্দরে বহির্গামী যাত্রীদের কারো শরীরের তাপমাত্রা সন্দেহজনক মনে হলে সিভিল এভিয়েশন আমাদের জানায়। এরপর সেখানে আমরা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করি। চীন ও জাপানগামী ওই যাত্রীরা কীভাবে করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েও বিমানবন্দর পার হল– জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখিয়েছিল বলে যাত্রার অনুমতি পেয়েছিল। এদিকে, সঠিকভাবে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করা হলে এ জন্য বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এখাতের বিশেষজ্ঞ বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, এতে আমাদের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। ফলে অনেক দেশ আমাদের দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল স্থগিত করে দিতে পারে। তিনি বলেন, এখান থেকে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে যাওয়া যাত্রী অন্য দেশে গিয়ে পজেটিভ হচ্ছে, মনে হচ্ছে আমাদের পরীক্ষাগুলোতে কিছুটা কালোবাজারি হচ্ছে। এ জন্য একটা যাচাই প্রক্রিয়া থাকা উচিৎ।