।। সাহিত্য।। খিদে
পিয়ালী গঙ্গোপাধ্যায়
অ্যাকাডেমিতে, কম্পিউটারের সামনে বসে আছি। মেঘলা ছিল সকাল থেকে, বৃষ্টি নামলো এবার, এক ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করলো বাইরে, কিন্তু কাজ। যতটুকু চোখ যাচ্ছে তাতেই বর্ষা মেখে নিতে চাইলাম।
একটু সুর চাইছিলাম জানো বাবা,,,,,,মলহার,,,,,,কিন্তু ইউটিউব চালাতে পারব না, গলাতেও আনতে পারব না সুর, অফিস রুমে যে, পাগল পাগল লাগছে, যদিও কি-বোর্ডে হাত থেমে নেই।
হঠাত্, পাশের রুম থেকে সুর ভেসে এলো ,,,,,,,,,,, “রামদাসী মলহার”,,,,,,,, খাঁ-সাহেবের গলা, যেন স্বর্গ থেকে প্রতিধ্বনিত হল। তারপরই, হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্টের গলা, ওনার তালিম শুরু হল,,,,,, কাজ মাথায় উঠল আমার, স্বপ্নাবিষ্ট হলাম যেন, স্থবির হয়ে শুনতে লাগলাম।
একসময়, থামলো সুর, কিন্তু আমার মন আরও, আরও চাইছে যে। চেয়ার ছেড়ে সিঁড়িতে গিয়ে দাঁড়ালাম। সামনের সবুজ লন-টা গাঢ় সবুজ হয়ে উঠেছে বর্ষার আদরে। জানো বাবা, দেখতে পেলাম তুমি ওই সবুজে বসে রয়েছ, আর আমরা সবাই তোমায় ঘিরে, বৃষ্টির সাথে তোমার মলহার-এ ভিজছি, মোহগ্রস্তের মতো ভিজে সিঁড়ির রেলিংটা আঁকড়ে সুরে ডুবে গেলাম।
কতক্ষণ পর জানি না, কচি গলার আওয়াজ, ‘গুরুমা, লাঞ্চ আওয়ার তো শেষ হতে চললো, তুমি খাবে না? এ মা, ভিজে গেছ তো একদম’, আমার এক আত্মজ, স্কলার। এতক্ষণে খেয়াল করলাম, আমাকে স্নান করিয়ে বিদায় নিয়েছে বৃষ্টি। হাসলাম, ‘না রে বাবু, পেট ভরা’। অবাক হল, ‘কখন খেলে?’।
কি করে বোঝাই বাবা ওকে, তুমি যে সুর খাইয়ে দিলে আমায়,,,,,,,,,,
পিয়ালী গঙ্গোপাধ্যায়