রাজ্য সরকারি দপ্তরে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমাতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এখন থেকে দুটো শিফটে কাজ হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি
জানিয়েছেন। বর্তমানে রাজ্য সরকারি দপ্তরে 70 শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চলছে। এখন থেকে একটি শিফটের বদলে সকাল সাড়ে নটা থেকে দুপুর আড়াইটা এবং দুপুর বারোটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দুটি আলাদা শিফটে সেখানে কাজ হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। নবান্নে আর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকের পর তিনি বলেন অর্থনীতির স্বার্থে সরকারি-বেসরকারি অফিস শিল্প সংস্থায় কাজ শুরু হলেও ট্রেন মেট্রোর মত গণপরিবহন না চলায় কর্মীরা কর্মস্থলে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়েছেন। শহরে প্রতিদিন 5 হাজার বাস চালানো হলেও মানুষের সমস্যা হচ্ছে।
সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি দপ্তরে কর্মীদের অফিসের পৌছানোর সময় এর ক্ষেত্রেও কিছুটা ছাড় দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করেছেন। নির্ধারিত সময়ের 1 ঘন্টা পর্যন্ত দেরিতে এলেও সংশ্লিষ্ট কর্মীকে দেরিতে আসার জন্য চিহ্নিত করা হবে না বলে তিনি জানান। অন্যদিকে বেসরকারি দপ্তরের কর্মীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে যথাসম্ভব বাড়িতে থেকে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে অনুরোধ করেছেন। যেখানে তো সম্ভব নয় সেখানে কাজের সময় ভাগ করে দেওয়ারও তিনি আবেদন জানান। কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা না করার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। লকডাউন শুরুর সময় কাজ না করলেও কর্মীদের পুরো বেতন দেওয়ার কথা বলেও পরে কেন্দ্রীয় সরকার অবস্থান বদল করে কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে তার অভিযোগ।
করোনা এবং ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও একমাত্র এরাজ্যই কর্মচারীদের পুর বেতন দিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন।লক ডাউন এর জেরে রাজ্যে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে রাজ্য সরকার একশো দিনের কাজ প্রকল্পে এখনো পর্যন্ত সাত কোটি কর্ম দিবস তৈরি করতে পেরেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন। আজ নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে আরো বেশি করে কর্ম দিবস সৃষ্টি করার জন্য সব জেলার জেলাশাসক দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৩৩টি ট্রেনে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এগারো লাখ পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্য থেকে ফিরে এসেছেন বলে তিনি জানান। আগামী চার দিনে আরো ২২ টি ট্রেনে ৩০ হাজার শ্রমিক রাজ্যে আসবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। যেসব পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরে আসছেন স্টেশনে তাদের স্ক্রিনিং করে ১৪ দিনের পরিবর্তে সাত দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
পরিকল্পনাহীন ভাবে গাদাগাদি করে অধিক সংখ্যায় শ্রমিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন।আগামী জুলাই মাসে রাজ্যে স্কুল-কলেজ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন। নবান্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন কোন না উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে। সেজন্য জুলাইতে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে। তবে নির্ধারিত সূচি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য দেশজুড়ে করো না সংক্রমনের নিরিখে রাজ্য সরকার এর আগে 30 জুন পর্যন্ত স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অন্যদিকে বেসরকারি স্কুল গুলিকে চলতি বছর তাদের ফিজ না বাড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন।