করোনার পর আম্পান, এতসব বিপর্যয়ের পরেও মানুষের মাঝে দেখা মিলছে না স্থানীয় সাংসদের। এই নিয়ে বিরোধীরা শুধু নয়, দলের অন্দরেও চলছে কানাঘুষো। এবার সেই বিতর্কের মাঝে জল ঢাললেন প্রাক্তন সাংসদ ও বর্তমানে বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলাম। নাম না করে বসিরহাট লোকসভার সাংসদ অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে বিঁধলেন হাজী নুরুল।
সোমবার উত্তর 24 পরগনার শাসনের খামারপাড়ায় বারাসত 2 ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন বসিরহাট লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ, বর্তমানে হাড়োয়া বিধানসভার বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলাম। উল্লেখ্য, হাজী নুরুল বসিরহাটের সাংসদ থাকাকালীন সময়ে আয়লা ঘূর্ণিঝড় হয়। সেসময় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বসিরহাটের মানুষের মাঝে দাঁড়িয়েছিলেন বলে তাঁর দাবি। তবে আম্পানের মতো এতবড় বিপর্যয়ের পরেও সাংসদ নুসরত জাহানকে কেন সেভাবে দেখা যাচ্ছে না? এনিয়ে কানাঘুষো চলছে বসিরহাট এলাকায়। বিরোধীরা শুধু নয়, তৃণমূলের অন্দরেও চলছে গুঞ্জন। রাগঢাক না করে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সজাগ জবাব দিলেন বসিরহাটের প্রাক্তন সাংসদ হাজী নুরুল। তাঁর স্পষ্ট জবাব, দেখুন জন প্রতিনিধি হিসাবে বিপদের সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক কর্তব্য। যা আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছ থেকে আমরা শিখেছি বলে সজাগ মন্তব্য করেন হাজী নুরুল।
বলাবাহুল্য, আম্পান পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিনে ক্ষতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে বসিরহাটে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সেই বৈঠকে স্বামীকে নিয়ে ঢুকতে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের বাঁধার মুখে পড়তে হয় সাংসদ নুসরত জাহানকে। নাছোড়বান্দা সাংসদ স্বামীকে ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সভায় ঢুকবেন না। অগত্যা নিরাপত্তারক্ষীদের বাঁধার মুখে পড়ে সভায় না গিয়ে শেষে স্বামীকে নিয়ে সভাস্থল ছাড়েন ওই তরুণী সাংসদ। আর তারপর থেকেই বসিরহাট এলাকায় দেখা মেলেনি সাংসদের। আর তাই সাংসদ হিসাবে তাঁর কর্তব্যটা ঠিক কি? তা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিলেন বসিরহাটের প্রাক্তন সাংসদ হাজী নুরুল।
এদিন তিনি বলেন, করোনা, আম্পানের পরেও একমাত্র মানুষের মাঝে আছে তৃণমূল কংগ্রেস দল। আর অন্যান্য রাজনৈতিক দল এই সময়েও রাজনীতি করছেন বলে নিন্দা প্রকাশ করেন হাজী নুরুল। তাঁর কথায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের মাঝে আছেন। আর দিলীপ ঘোষরা মিডিয়ার ক্যামেরার সামনে আছেন বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢোক গিলে বলেন, আমার বিধানসভা এলাকায় কোনো গোষ্ঠীকোন্দল। অথচ সম্প্রতি শাসনের চোলপুর গ্রামে আম্পান পরবর্তী সময়ে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছনো নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চরমে ওঠে। অন্যদিকে, আম্পান এর পর ত্রাণ সহ মানুষের পাশে দাঁড়াতে কোনো দলীয় নেতাকে দুর্নীতি করতে দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানান হাজী নুরুল। এ ব্যাপারে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে দল তাঁকে রেয়াত করবে না। দুর্নীতি প্রমাণ হলে দলীয় ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সোজাসাপ্টা জানান বিধায়ক।