শিলিগুড়ি শহরের উন্নতির ইতিহাস এবং কিছু অজানা তথ্য 


মঙ্গলবার,১৯/০৫/২০২০
7917

অচিন্ত্য দাস: শিলিগুড়ি শহরের ইতিহাস নিয়ে অনেক পর্যবেক্ষণ করে কিছু ভালো তথ্য পেলাম যা আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের জানা অবশ্যই দরকার।লেখক শৈলেন দেবনাথ খুব ভালো বর্ণনা দিয়েছেন ” শিলিগুড়ি শব্দের “অর্থ হলো পাথর এবং নুড়ি এর স্তূপাকার  কুন্ড। শিলিগুড়ি যে আধুনিক নামটা আমরা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ রা রাত দিন শুনি আসলে এই নামটার উৎপত্তি হয়েছে শিলচাগুড়ি নামটির থেকে। বর্তমান সময়ে এই শহর কে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটা উন্নত এবং বর্ধনশীল শহর হিসেবেই দেখা হয়ে থাকে।  কিন্তু উন্নতির আগে এই অঞ্চলের বিস্তীর্ন অঞ্চল জুড়ে অর্থাৎ শহরায়ণের আগে এই অঞ্চলের বেশির ভাগ অঞ্চল ছিল দৌলকা বন এবং জঙ্গলে ভর্তি। 
যেহেতু শিলিগুড়ির জমি বেশ উর্বর এবং চাষযোগ্য ছিল তাই সিকিমের রাজা শিলিগুড়ি কে দখল নিয়ে দক্ষিণ প্রান্তের সিকিম এর আয়তন বৃদ্ধি করেছিলেন, যতদিন পর্যন্ত না নেপালের রাজা এটার বিরোধিতা করেছিলেন।এর পরে সুযোগ সুবিধার জন্য নেপালের কিরাটি প্রজাতি এবং নেপালি রা অনেক বেশি পরিমানে শিলিগুড়ি অঞ্চলে থাকতে শুরু করেন ক্রমশই সিকিমের রাজ পরিবারের প্রভাব শিলিগুড়ি এর বর্ধিঞ্চু এলাকাতে কমে আসে।  শিলিগুড়ি কে চোগিয়াল, নামগ্যাল বংশ শাসন করেছিল। এই শিলিগুড়ি অঞ্চল টা এর এক অদ্ভুত ভৌগোলিক স্বাচ্ছন্দ্য আছে।  যেমন মহানন্দা নদীর পোর্ট অঞ্চল এর মাধ্যমে দক্ষিণ শিলিগুড়ির ফ্যান্সিদেওয়া  হয়ে মালদা জেলা , পুরো পশ্চিম বাংলা , এবং বিহার রাজ্য এর ব্যবসায়িক রুট আছে যা খুব গুরুত্তপূর্ণ। 
৮৮১ সালে শিলিগুড়ি শহরের সাথে রেল যোগাযোগ শুরু হয়ে যাই এবং সাথে সাথে কালের নিয়মে তা অনেক উন্নতি লাভ করে যার ফলে শিলিগুড়ি শহরের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে। জনসংখ্যার নিরিক্ষে ২০১১ সালের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিসেব অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে শিলিগুড়ির জনসংখ্যা কলকাতা , আসানসোল এবং তার পরেই তৃতীয় স্থানে এ আছে।  শিলিগুড়ি শহর এক গুরুত্তপূর্ণ জায়গায় অবস্থান করবার জন্য এটাকে আন্তর্জাতিক করিডোর বা পরিবহন এর হাব ও বলা হয়ে থাকে।  শিলিগুড়ি শহর দিয়ে চারটে দেশের আন্তর্জাতিক বর্ডার এ পৌঁছানো যাই চীন, বাংলাদেশ , নেপাল ও ভুটান।  তাই প্রতি দশকে যদি লক্ষ্য করা যাই তাহলে দেখা যাবে এক সুষ্ঠূ নিয়মে শিলিগুড়ির জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে হয়তো ২০৪০ সালের মধ্যে যদি শিল্প এবং সরকারের পর্যটন শিল্পের উন্নতি করা যাই তাহলে কলকাতার পরে সব থেকে গুরুত্তপূর্ণ শহর হয়ে যেতে পারে শিলিগুড়ি যেহেতু দার্জিলিং কে শিলিগুড়ি কানেক্ট করে।
১৯৯৪ সালে ভারত এবং চীনের সাথে একটা নাথুলা পাস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং তার পরেই শিলিগুড়ির গুরুত্ব এতো টায় বৃদ্ধি পাই যে শিলিগুড়ি এখন একটি আন্তর্জাতিক পরিবহণ হাব বলা চলে।  পুরো পূর্ব ভারতের মধ্যে এক রেকর্ড সৃষ্টিকারী শহর বলা চলে শিলিগুড়ি কে ৫৭% গ্রোথ রেট ছিল ১৯৭১-১৯৮১ এই সময় কালে।  ১৯৮১-১৯৯১ সালে পুরো শিলিগুড়ি শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল  ৪৬.৮৩% যা এক বিস্ময়কর বেপার বলা যেতে পারে।  আজকের দিনে দাঁড়িয়ে পুরো পূর্ব ভারতের গুয়াহাটির মতো একটা গুরুত্ত পূর্ণ  বড়ো শহরের উন্নতি হচ্ছে এবং গুয়াহাটির পরেই শিলিগুড়ি শহরের স্থান গ্রোথ রেট এর নিরিক্ষে।  ১৯৯৪ সালে শিলিগুড়িতে মিউনিসিপাল কর্পোরেশন তৈরী করে ফেলা হয় শহর টা কে সুন্দর করে উন্নতি করবার জন্য এবং ব্যবস্থাপনা করবার জন্য।  এই মুহূর্তে কলকাতার পরে পুরো পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যতে দ্বিতীয় বৃহত্তম মেট্রোপলিটন সিটি হলো শিলিগুড়ি।  

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট