পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের টালবাহানা ও বাকযুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে শনিবার সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র বলেছেন, অযথা বিলম্ব করা হচ্ছে শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর কাজে। কেন্দ্র এবং এরাজ্যের সরকার সময়ে দায়িত্ব পালন করেনি বলেই এই অবস্থা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজকে চিঠি পাঠিয়েছেন, কিন্তু তিনি কী করছিলেন যখন কর্ণাটক থেকে এরাজ্যে ফিরতে চাওয়া শ্রমিকদের আটকাতে কর্ণাটক সরকার ট্রেন বাতিল করে দিয়েছিল? শ্রমিকদের আন্দোলন ও বিক্ষোভের চাপেই শেষ পর্যন্ত তারা ট্রেন দিতে বাধ্য হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সরকারও শ্রমিকদের ফেরাতে কোনও আগ্রহ দেখায়নি। কেরালা থেকে বাংলার শ্রমিকদের ফেরা আটকাতে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীই ট্রেন আটকে রেখেছিলেন। এখন ট্রেনের আসা সম্পর্কে রাজ্য সরকার যা ঘোষণা করছে তার সঙ্গে রেলের ঘোষণার মিল নেই। রেল থেকে জানানো হচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্পেশাল ট্রেনের জন্য প্রস্তাবই পাঠায়নি। এই অস্পষ্টতা কেন?
সূর্য মিশ্র একথাও বলেছেন, এখন শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার কথা যা বলা হচ্ছে সেটা অবিরাম লড়াইয়ের ফল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত না আঁচালে এই দুই সরকারকেই কোনো বিশ্বাস নেই। রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে, কবে কোথায় কোন ট্রেনে শ্রমিকরা আসছেন এবং সেই অনুযায়ী প্রশাসনকে প্রস্তুতি নিতে হবে। শুধু তো ট্রেনে আনলেই হবে না, তাঁদের যথাযথভাবে ঘরে ফেরাতে স্বাস্থ্যপরীক্ষা, প্রয়োজনে কোয়ারান্টিনে রাখা এবং অন্যান্য সাহায্যের ব্যবস্থা রাজ্য সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। অন্য রাজ্য থেকে এরাজ্যের শ্রমিকদের আনা ছাড়াও আমাদের রাজ্যের ওপর দিয়ে অনেক শ্রমিক অন্য রাজ্যে যাচ্ছেন, এখনও তাঁরা রেললাইনের ওপর দিয়ে হাঁটছেন বলে আমাদের কাছে খবর আছে। এদের সবার ঘরে ফেরার যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। আর এই সব কাজে অযথা কালক্ষেপ করা হলে আবারও কোনো খারাপ ঘটনা ঘটতে পারে।
বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের সুষ্ঠুভাবে ঘরে ফেরার বিষয়ে শুধু সরকারের ভরসায় না থেকে জেলায় জেলায় সিপিআই(এম)’র নেতৃবৃন্দ ও কর্মীবৃন্দকেও সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ পাঠিয়েছেন সূর্য মিশ্র। তিনি বলেছেন, ট্রেনে শ্রমিকদের ফেরার প্রসঙ্গে কোন ট্রেন কোথা থেকে কোথায় আসছে তার সূচীগুলো সরকার স্পষ্ট করে জানালে আমাদের বামপন্থী কর্মীরাও ঘরে ফেরাদের সাহায্য করতে পারবেন। এরজন্য আমরা জেলায় জেলায় পার্টি কর্মীদের সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে বলেছি। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা নিয়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কোনো বিরোধ, নৈরাজ্য বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা যাতে না হতে পারে তার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।