ছেলের প্রতি বাবার ভালবাসা
মোহাঃ বেলাল উদ্দিন মন্ডল
রসুলপুর গ্রামে গফুর তাঁর দুই সন্তান ও তাঁর স্ত্রী খুসিনা বেগমের সহিত বসবাস করত।দরিদ্র পরিবারে অভাব নিত্যদিনের ব্যাপার।গফুর দিন মজুরের কাজ করে অর্জিত পয়সায় সংসার চালায় খুব কষ্ট করে।একদিন ছেলে রহিম তার বাবার কাছে আবদার করিলো সে পায়ের জুতা নিবে।বিদ্যালয়ে তার সহপাঠীকে পায়ে দিতে দেখেছে।বেশ কিছু দিন থেকে গফুরের পায়ের চটি ছেঁড়ে গেছে।অভাবে গফুর সেটা পায়ে দিয়ে কোনো রকমে চলা ফিরা করছিলো।গফুর ভেবেছিলো টাকা পেলে নিজের জন্য নতুন চটি কিনবে।কাজের দুই হাজার টাকা পেয়ে তা নিয়ে বাজারে দোকানে গিয়ে গফুর ছেলের জন্য জুতা ও তাঁর জন্য চটি দিতে বললো। গফুরের জানা ছিলোনা জুতার দাম সম্পর্কে কাজেই দোকানি বিল করতে জানতে পারলো ছেলের জুতার দাম দুই হাজার টাকা।গফুর নিজের চটি দুটি নাড়া চাড়া করতে করতে ছেলে রহিমকে বললো আমার চটি দুটি একটু সেলাই করে নিলে নতুন হয়ে যাবে রে তাই না।
বলতে বলতে গফুর তার জন্য নেওয়া চটি দুটি ফেরত দিয়ে ছেলের জন্য জুতা নিয়ে নিলো।দোকানি গফুরকে তাঁর ছেড়া চটি পরে যেতে দেখলো যা পরার মত নয় ।তবুও নিজের ইচ্ছাকে বলিদান দিয়ে ছেলের জন্য জুতা নিয়ে চলিলো । দুই হাজার টাকা গফুরের কাছে অনেক টাকা।দোকানির চোখে জল চলে এলো।সে ও একজন বাবা ।জানে কত অভিনয় করে চলতে হয় দরিদ্র মানুষকে। সে বলিলো হে ঈশ্বর আমরা দরিদ্র তাই কত দুঃখই না মনে চেপে রেখে মুখে হাসি নিয়ে অভিনয় করে ঘুরে বেড়ায়। গফুরকে দেখে জানলাম আমি বেশ ভালোই আছি।আমার মত কত গফুর পৃথিবীতে অভিনয় করে মনে দুঃখ চেপে রেখে ঘুরে বেড়ায়।হে ঈশ্বর সেটা তুমিই জানো।