সমস্যা যা আন্দাজ করেছিলাম বাস্তবে সেটি আরো ভয়ঙ্কর


মঙ্গলবার,১৪/০৪/২০২০
1672

প্রতিবেদনটি লিখছেন- হেমন্ত কপাট : স্বামী বিবেকানন্দ (তখন নরেন) একবার তাঁর বাবা বিশ্বনাথ দত্তের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে “বাবা সংসারে কিরুপে চলা উচিত ?” উত্তরে বিশ্বনাথ দত্ত বলেছিলেন “দেখ নরেন সংসারে কোনো কিছুই দেখে অবাক হবি নে ।” কিন্তু ঠাকুর তুমিতো অবাক করিয়ে দিলে , চারিদিকে লকডাউন আর করোনা আতঙ্ক এর মাঝে আর একটি চিন্তা ঘিরে ধরেছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে “তারা খাবে কি” হ্যাঁ এরকমি একটি চিন্তা থেকে কয়েকজন সাথী মিলে তৈরি হয় NIDE Humanity Welfare , তৈরি হয় নিজেদের একটি ফান্ড, ৫০০ পরিবারকে ২ দিনের খাবার দেওয়ার মতো সামর্থ্য নিয়ে কাজটিতে নেমে পড়া হয়। পরে অন্যান্য সুহৃদয় ব্যক্তিরা এগিয়ে আসেন।

তৈরি হয় একটি Facebook Page , অনেকেই নিজ নিজ এলাকার দুঃস্থ পরিবার গুলোকে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। আমরা তাদের ফান্ড পাঠিয়েছি সাধ্যমত। কাজটি করতে গিয়ে বুঝতে পারছিলাম অনেক বড় কাজে হাত দিয়ে ফেলেছি, সমস্যা যা আন্দাজ করেছিলাম বাস্তবে সেটি আরো ভয়ঙ্কর, চোখের সামনে দেখছিলাম সাহায্য সঠিক ভাবে সঠিক জায়গায় পৌঁছাচ্ছে না । স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের ব্যর্থতাটাই ফুটে উঠছিল। যাক সেকথা; কাজটি করতে গিয়ে আমাদের ফান্ড তখন শেষ, NIDE চেয়ারম্যান রাজু আলম পথ খুঁজে বেরাচ্ছেন কি করা যায় ! এই মূহুর্তে ঘঠল একটি আশ্চর্য ঘটনা WhatsApp দেখলাম একটি মেসেজ “আমাদের এখানে অনেক গুলো গরিব আছে ” DP তে একগৃহ বধূর মুখ।

ভদ্রমহিলা কে লিখলাম আপনার বাড়ি কোথায়, জানা গেল পাতিহাল, জগৎবল্লব পুর, হাওড়া। জানতে চাইলাম আপনাদের ওখানে কটি অত্যন্ত দুঃস্থ পরিবার আছে, সহজ উত্তর আমাদের পাড়ায় চারটি , WhatsApp ওনার সঙ্গে যা কথা হচ্ছিল তাতে বুঝতে পারছিলাম উনি তাদের সাহায্য করতে ভীষণ রকম উৎসাহি । ওনাকে আমাদের Guide Line মেনে ২০ জনের তালিকা পাঠাতে বললাম । এ ও জানালাম সব কাজটিই আপনাকে করতে হবে আমরা শুধু ফান্ড দেব। উনি জানাতে চাইলেন “আপনি থাকবেন তো ; আমাকে আমার বাপের বাড়ি ও শশুর বাড়ি দুটোই সামলাতে হয় এখানে অনেক দুঃস্থ মানুষ আছেন তাঁদের কেউ দেখেন না। আমার সাথে আরো দুটি মেয়ে আছে আমি পারব।” হ্যাঁ ঠাকুর আশ্চর্য হলাম একজন গৃহবধূ নিজের সংসার ছেড়ে ভাবছেন বিশ্ব সংসারের কথা ।

কঠোর ভাবে জানালাম সব কাজটি আপনাকে করতে হবে “ছবিও পাঠাতে আপনি দিচ্ছেন এরকম, কারণ এর আগে কয়েকটি জায়গা থেকে আমরা প্রতারিত হয়েছি , আমরা ফান্ড দিয়েছি কিন্তু ছবি পাইনি , পরে জানতে পারি ফান্ডটি যথাযত ব্যবহার হয় নি।, থাক সে বিতর্কে আর গেলাম না। ” ফান্ড পাঠালাম উনি সকলকে বিতরন করলেন ,ছবিও পাঠালেন তাতে কোথাও ওনার মুখটি রাখলেন না, লিখে পাঠালেন হিসেবে টা পাঠিয়ে দিচ্ছি । বললেন “যানেন আমার স্বামী মাছের কারবার করেন ভেটকি, রুই,কাতলা, ইলিশ, চিংড়ি আপনি যদি কখনো আসেন আপনি যেটা ভালো বাসেন সেটাই খায়াবো।” জানিনা সম্ভব হবে কিনা তবুও মুচকি হেসে লিখলাম- চিংড়ি। সত্যই এরকম করুণাময়ী, আত্মপ্রচার বিমুখ, কৃতজ্ঞচিত্ত গৃহবধূর কথা না লিখে পারলাম না , আমি নিশ্চিত করোনা যুদ্ধ আমরা জয়ী হবই , সকলে বাড়িতে থাকুন সরকারি নির্দেশ মেনে চলুন। সকলের পাশে থাকুন।

যে সব সুহৃদয় ব্যক্তিরা এই কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন বা করছেন , তারাই সমাজের আসল “হিরো” , তাদের প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে শতকোটি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় , “করোনা হেল্প ফান্ড ” এ কান্ট্রিবিউশন এর জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন :

Contribution Link : https://imjo.in/5dZCUN

কেবল মাত্র ১০০ টাকা একটি পরিবারের এক দিনের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারে , যদি সেটাও না পারেন তাহলে পোস্টটি শেয়ার করে অন্যকে জানতে সাহার্য্য করার অনুরোধ থাকলো।

আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত থাকুন এবং আমাদের কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে জানুন :
ফেইসবুক
টুইটার
ব্লগ

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট