মিজান রহমান, ঢাকা: শুরুটা চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে। এরপর এক এক করে বিশ্বের ১৪৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে গেছে রোগটি। এতে মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে ৫ হাজারের কাছাকাছি। আক্রান্ত ১ লাখ ৪৬ হাজার। এমন অবস্থায় করোনাভাইরাস যেন বাংলাদেশে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সতর্কতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে—সম্ভব হলে গণজমায়েত এবং গণপরিবহন পরিহার করা। ১৪ মার্চ শনিবার রাজধানীর শাহবাগ, টিএসসি চত্বর, গুলিস্তান, পল্টন, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আগের চেয়ে কম লোক দেখা যায়। জনসমাগম কম কেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে একাধিক ব্যক্তি এবং ফুটপাতে ব্যবসা করা লোকজন জানান, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে মানুষ খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাসা থেকে বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন তারাও কাজ শেষ করে দ্রুত বাড়ি ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সে কারণেই রাস্তাঘাটে লোকজন কম দেখা যাচ্ছে। পল্টন এলাকায় মগবাজার নিবাসী শিমুল বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ, বাসায় বসে বসে খাওয়ার মতো টাকা–পয়সা আমাদের নেই। কাজ না করলে আমাদের চলবে না। তবে এই ভাইরাসের কারণে কাজকর্মের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।
এই অবস্থা বেশি দিন চললে আমার মতো খেটে খাওয়া মানুষের অনেক সমস্যা হয়ে যাবে। অন্যদিকে রাজধানীতে চলাচলকারী, সাভার পরিবহন, ট্রান্স সিলভা পরিবহন, বিহঙ্গ পরিবহন, সদরঘাট থেকে গাবতলীতে চলাচল করা ৭ নম্বর পরিবহনসহ আরো কয়েকটি পরিবহনের যাত্রীর সংখ্যাও অনেক কম লক্ষ করা যায়। এসব পরিবহনে এর আগে যাত্রীরা সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে, গাদাগাদি করে যেতে দেখা যেত। সেসব পরিবহনেও দেখা যায় অনেক আসন খালি রয়েছে। বাসের মধ্যেও দেখা যায় যাত্রীদের বেশির ভাগই মাস্ক ব্যবহার করছে। সাভার পরিবহনে সদরঘাট অভিমুখে যাওয়া শ্যামলী নিবাসী আবদুল বারেক নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, করোনাভাইরাসের ভয়ে অনেকে বাসে চলাচল কম করছে। আমার মতো বা যাদের আয়–রোজগার কম, তাদের তো বাস ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া–আসার অন্য কোনো উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়েই বাসে চলাচল করি। প্রেস ক্লাবের সামনে দায়িত্ব পালনকারী বিহঙ্গ পরিবহনের টিকিট চেকার গোবিন্দ এ বিষয়ে বলেন, যেদিন থেকে ভাইরাস ধরা পড়ছে, তারপর থেকেই আমাদের যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। বর্তমানে আগের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা অর্ধেক বলা যায়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর অধিকাংশ রাজনৈতিক দল তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের চেয়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গণসচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করছেন।