মিজান রহমান, ঢাকা: অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের ঘরের দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেয় জেলা প্রশাসন। গত ১৩ মার্চ তাকে এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। ১৫ মাচ সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুলে নেওয়া ও ভয়াবহ নিগ্রহের বর্ণনা দেন সাংবাদিক আরিফ। ভয়াবহ সেই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আরিফ বলেন, ‘দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেই আরডিসি নাজিম উদ্দিন আমার মাথায় কিল–ঘুষি মারতে শুরু করেন। বাড়ি থেকেই শুয়োরের বাচ্চা বলে গালিগালাজ শুরু করেন তিনি। এরপর আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। আমি বারবার বলেছি, “আমার কী দোষ। আমি তো কোনও অন্যায় করিনি।” তিনি বলেন, “বড় সাংবাদিক হয়ে গেছিস। তোর সাংবাদিকতা ছোটাবো। ডিসির বিরুদ্ধে লিখিস।” এসব বলে আমাকে গাড়িতে ওঠায়। তারপর বলেন, “এর চোখ বাঁধো। এর দিন শেষ।
একে আজই এনকাউন্টারে দেবো।” এই কথা শোনার পর আমি পুরো আপসেট হয়ে ভাবি, সত্যিই তারা আমাকে মেরে ফেলার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। ‘এর পর আমি কান্নাকাটি শুরু করি। ক্ষমা চেয়ে বলি, “বলেন, আমার কী অপরাধ? অপরাধ হয়ে থাকলে ক্ষমা করেন।” তারপরও যখন শুনছিল না তখন বলেছি, “আমার দুটি ছেলে সন্তান আছে। একটার বয়স দেড় বছর, একটার বয়স সাত বছর। আমার বাবা–মা বেঁচে নেই। আমি মারা গেলে ওদের কে দেখবে!” তার পরেও তার মনে একটুও দয়া হয়নি। তারপর চোখ বেঁধে আমাকে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। চোখের বাঁধন একটু আলগা হলে আমি দেখি আমাকে ধল্লা ব্রিজ পার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওখানে বলা হলো, “নে কালেমা পড়ে নে। সময় শেষ।” এ কথা শোনার পর আমি আল্লাহকে ডাকা শুরু করি।