হাবড়া: কথায় বলে মানুষ মানুষের জন্য তা আবার প্রমান করলো হাবড়ার একটি মানবাধিকার সংস্থা। শুরুটা হয়েছিল ২০১০ সালে। সেই থেকে পথ চলা শুরু। দিনের পর দিন অসংখ্য সামাজিক কাজ করার মধ্য দিয়ে সমাজের মধ্যে প্রচলিত সংস্থার নাম। যে নামটি এখন বেশিরভাগ অসহায়, মানবাধিকার বঞ্চিত মানুষের কাছে শোনা যায়। আজ এক অভিনব অনুষ্ঠান করল টুনিঘাটা পিপলস মুভমেন্ট অফ হিউম্যান হিউম্যান রাইটস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামে হাবড়ার কুমড়াকাশিপুরের এই মানবাধিকার সংগঠন। বলাবাহুল্য, যেখানেই সংস্থাটি দুর্নীতি, মানুষের বিপদ চোখে পড়েছে সংস্থার সদস্যরা সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিনা পারিশ্রমিকে। এদিনও একটি অভিনব উদ্যোগ এর মধ্য দিয়ে তাদের মহান কার্যকলাপ ফুটে উঠল হাবরা কাশিপুর এলাকায়। ১ টাকার পাঠশালা। অনেকেই ভাবতে পারেন সেটা আবার কি?
সমাজে উপেক্ষিত মানুষ আছে যারা।যারা একরাশ অপেক্ষা নিয়ে বেঁচে আছে। আর্থিক দূরাবস্তা থাকার কারনে অনেকে পড়াশোনা করতে হিমশিম খেয়ে যায়।তাদেরক ১ টাকার পাঠশালায় পড়ানো হবে।দেওয়া হবে বই খাতা থেকে সমস্ত কিছু। কারণ একটাই দারিদ্রতার কারনেঅনেকেই পড়াশুনা করতে হিমসিম খায়।এছাড়াও কবিতা আবৃতি, জিমনাস্টিক অংকন করানো হবে।
শুরুতেই ফিতা কেটে পাঠশালার শুভ সূচনা করেন সংস্থার সভাপতি কনিকা কীর্তনীয়া। পাঠশালাতে পড়াশুনায় সামিল হয় অভিজিৎ মন্ডল,
রাজ মন্ডল অলিক কাঞ্জিলাল অয়ন বিশ্বাস রীতা সর্দার -সজল সাঁতরা প্রমুক। এদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খাতা, টুথপেস্ট, ব্রাশ, ও হাত ধোলাই করার ডেটল সাবান। ছাত্রছাত্রীদের সকলেই প্রতিজ্ঞা করল হাত ধুয়ে তারা প্রতিনিয়ত বাড়িতে ভাত খাবে এবং বাথরুমে গেলে হাত ধুলাই করবে। সকালে উঠে তারা দাঁত ব্রাশ করবে। শুধু তাই নয়, সুস্মিতা ঘোষ, কনিকা কীর্তনীয়া,তুহিনা বিশ্বাসরা পড়াশুনার পাঠ পড়িয়ে ছাত্রীদের পড়িয়ে ছুটি দেন। পিতৃহারা এক ছাত্র অভিজিৎ বিশ্বাস জানায়, বাবা নেই, মা দিন মজুরের কাজ করে। ৩০০ টাকা দিয়ে পড়তে হয় দূরে কোথাও। এতো টাকা দিয়ে কি করে পড়বো তাই এখন থেকে এখানে ১ টাকা দিয়ে এখানে পড়বো। তাই এখানে পড়তে এসেছি। অন্তত মায়ের ৩০০ টাকা তো বাঁচবে। এমনই আর এক পিতৃহারা ছাত্র অনুপ বাড়ুই বাবা নেই। অভাবের সংসার নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
সেও খুশি হলো এখানে এসে পরশনা করতে। এদিন অমৃত বিশ্বাস সমীরণ কাঞ্জিলাল সবিতা বিশ্বাস,বিশ্বজিৎ বাগচী,অনিল কাঞ্জিলাল বিশ্বাস, লাল্টু বিশ্বাস,সজল মালাকারের এর মতো অনেকেই এই কাজে এগিয়ে এলো। কেন এই এক টাকার পাঠাশাল তা জানতেই সংস্থার সেক্রেটারি সঞ্জীব কাঞ্জিলাল জানান, হতদরিদ্র যারা। যাদের দুবেলা পেট চালানোই কঠিন। তাদের সন্তানদের একত্রিত করে কিছু করার তাগিদ।অনেকদিন ধরেই কিছু করার চেষ্টায় ছিলাম আমরা। কিছু না হোক কিছু ছেলেমেয়ে তো মানুষ হবে। তাছাড়া গ্রামবাংলার অনেক ছেলেমেয়ে আছে অনেক প্রতিভা আছে। যাদের সুযোগের অভাবে অনেক বড় জায়গায় যেতে পারে না। তাই জিমন্যাস্টিক, আবৃত্তি ও অঙ্কনের মধ্য দিয়ে আমরা তাদের মূল লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করব। পাশাপাশি যারা এই দুস্থ ছাত্র ছাত্রীদের সম্পূর্ণ ফ্রিতে পরিষেবা দিচ্ছে তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি।