ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: সম্প্রতি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সংখ্যা বেড়েই চলছে। মহেশপুরের জলুলী, পলিয়ানপুর, খোসালপুর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রতিদিনই ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে অসংখ্য নারী-পুরুষ-শিশু। অনুপ্রবেশের বিষয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি কড়া অবস্থানে থাকলেও অনুপ্রবেশ কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, হঠাৎ ‘পুশ-ইন’ বিতর্ক। বাংলাদেশের আলোচিত বিষয় এখন এনআরসি এবং ভারত থেকে অনুপ্রবেশ। ঢাকার খবর, এ মাসে অন্তত ২০৩ জন ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্য প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, ঢাকায় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি ঠিক বুঝি না এনআরসির আতঙ্কটা ওদের হবে কেন? এখনও তো ২৭…৩৪ বছর লেগেছে এনআরসি তালিকাটা করতে। ভারত সরকার আমাদের বারবার বলেছে, এনআরসি অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা কোনওভাবেই বাংলাদেশের ওপর প্রভাব ফেলবে না। পত্রপত্রিকায় দেখছি, ভয়ে লোক আসছে-যাচ্ছে। আমি ঠিক জানি না। আমাদের আলাপ-আলোচনা করতে হবে’।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে পশ্চিবঙ্গের সংবাদ মাধ্যম জানায়, নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বেড়ে গিয়েছে। ঝিনাইদহ মহেশপুর সীমান্তে এ মাসের ১০ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ২০৩ জন ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে তথ্য জানানো হয়েছে। গত রোববার বেনাপোলের বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে পুলিশ ৩২ জনকে আটক করেছে। দেশটির সংবাদ মাধ্যম আরো জানায়, শনিবার বেঙ্গালুরু থেকে ৫৯ জনকে আটক করে কলকাতায় আনা হয় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা এপিডিআর-এর অভিযোগ অমানবিক ভাবে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
তাদের প্রতিবাদে ওই ৫৯ জনকে একটি বাড়িতে রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে নভেম্বরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ২৫৪ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৩ সালের পাসপোর্ট অধ্যাদেশ আইনে মামলা করে জেল-হাজতে পাঠিয়েছে। জজুলী সীমান্তবর্তী যাবদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম শহীদুল ইসলাম জানান, যারা এদেশে আসছে তাদের বেশিরভাগই ভারতের মধ্যপ্রদেশ ও দিল্লিতে গিয়ে কাজ করতো। তাদের অনেকের বাড়ি বাংলাদেশে। আবার অনেকে পাকিস্তানি আমলে গেছেন। যারা আসামে ছিলেন তারা এনআরসি থেকে বাদ পড়েছেন। তাছাড়া সম্প্রতি দিল্লিতে বাবরী মসজিদের রায় ও আসামে এনআরসি হওয়ার কারণে তারা ফিরে আসছে। জানা যায়, ভারত থেকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্তে সতর্কাবস্থায় রয়েছে বিজিবি।