মুর্শিদাবাদ: হালকা শীতের আমেজ পরতেই মুর্শিদাবাদে পর্যটকদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। মূলত শীতের মরসুমে জমজমাট থাকে ঐতিহাসিক পর্যটন ক্ষেত্র মুর্শিদাবাদ। শুধু এ রাজ্য নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন এই ঐতিহাসিক ক্ষেত্রের ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে। শুধু ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে থেকেই নয়, বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানান দেশ থেকে পর্যটকরা আসেন মুর্শিদাবাদে। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হাজারদুয়ারি। এছাড়াও রয়েছে কাঠগোলার বাগান, ইমামবাড়া, কাটরা মসজিদ, সিরাজ-উদ-দৌলার সমাধি, মতিঝিল সহ আরও অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান। তীব্র গরমের কারণে গ্রীষ্মকালে তেমন পর্যটকের ভিড় জমে না। সেই সময়টাই এখানকার পর্যটন ব্যবসায় যথেষ্টই মন্দা থাকে। ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় থাকেন,’ টুরিস্ট সিজন’এর জন্য। ধীরে ধীরে সেই ‘টুরিস্ট সিজন’ শুরু হচ্ছে। হালকা শীতের আমেজ গায়ে মাখিয়ে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন মুর্শিদাবাদে। ব্যবসায়ীদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে এমনি হাসি ফুটেছে এখানকার টাংগা ওয়ালাদের মুখেও। মুর্শিদাবাদ ভ্রমণের ক্ষেত্রে টাঙ্গা (ঘোড়ার গাড়ি) চেপে ঘুরে বেড়ানো এক আলাদা মজা। তবে অনেকটাই বদল এসেছে এখানকার পরিবহনে। এখন টাঙ্গার জমি অনেকটাই দখল নিয়ে নিয়েছে টোটো।
এখানকার “হোটেল যাত্রিক” এর মালিক কল্যাণ কুমার ঘোষ। এই হোটেল যাত্রিক-এর তিনতলার ছাদ থেকে হাজারদুয়ারিকে খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায়। পূর্ণিমার সন্ধ্যায় চাঁদের আলোয় হাজারদুয়ারি যেন তার রূপ রস গন্ধে ভরিয়ে তোলে পর্যটকদের। এই ছাদে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল কল্যান বাবুর সঙ্গে। তিনি জানালেন পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। মাত্র দু’হাজার টাকাতেই মুর্শিদাবাদে একদিনের জন্য ঘুরে বেড়ানো সম্ভব বলে জানান তিনি। আর ৭ থেকে ১০ হাজার টাকায় তিন চারদিন খুব ভালোভাবে মুর্শিদাবাদ পর্যটন সম্ভব। ৬০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে হোটেল আছে।
বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা মেহেদী হাসান রাজু তার বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন মুর্শিদাবাদে। কথায় কথায় তিনি জানালেন, তাদের পাঠ্যবইয়ে মুর্শিদাবাদ চ্যাপ্টার রয়েছে। আর সেই ইতিহাস পড়ে মুর্শিদাবাদ বারবার টানছিল তাদের। এক সময় রাজধানী ছিল। পুরনো সেই রাজধানীকে ছুঁয়ে যাওয়ার ইচ্ছেতেই চলে আসা।
বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা এসেছেন। পর্যটকদের জন্য ব্যবস্থাপনা দেখে খুশি তারা।