বাংলাদেশে দলের নেতৃত্ব নির্ধারণে কঠোর অবস্থানে শেখ হাসিনা


মঙ্গলবার,২৯/১০/২০১৯
673

ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: দলের নেতৃত্ব নির্ধারণে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। দলীয় পদ ব্যবহার করে দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত কারো আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়ে স্থান হবে না বলে একাধিকবার হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।  নীতিবান, সততা ও পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করেই আসন্ন কাউন্সিলে দলীয় নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হবে। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনেও এই নীতি অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছে দলের হাই কমান্ড।  অন্যদিকে সরকারি দলের সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও বিগত ৩টি জাতীয় সংসদের সাবেক ও বর্তমান এমপিসহ শতাধিক নেতা নজরদারিতে রয়েছেন। দলীয় যেসব এমপিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়াও চলমান।

দলীয় পদ ব্যবহার করে যারা সন্ত্রাস-দুর্নীতি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে অনেকেই দলের ভাবমূর্তি নষ্ট ক্ষুন্ন করেছেন এমন অভিযোগ মুখে মুখে। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন অনেক নেতা। গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও দলীয় তদন্তের মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এরপরই তাদেরকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড সূত্রে জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের শাসনামলে দলীয় একাধিক এমপির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কথা- অন্যায়কারীকে ছাড় নয়, শাস্তি পেতে হবে। দলের ভেতরে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে যারা প্রবেশ করেছে, কিভাবে তারা দলে প্রবেশ করলো? কারা, কী কারণে অন্যদলের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে আনলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে ধরা হবে। দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরএক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স অবস্থানে রয়েছে। অন্যায়-অনিয়ম যেই করুক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।

জাতীয় সম্মেলন করতে আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ প্রস্তত জানিয়ে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আমাদের কিছু জেলায়, উপজেলা ও ইউনিয়নের সম্মেলন বাকি আছে। এই সময়ের মধ্যে এসব সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এখন কিছু ছাত্র, কিছু তরুণ-যুবক আছে, যারা ফেসবুকে রাজনীতি করে। ছবি একটা তুলবে আর ফেসবুকে দিয়ে দেবে। অনেকে এখন বলছে এরা সেলফি লীগ। এই সেলফি লীগ, ফেসবুক লীগের যন্ত্রণায় আমরা অতিষ্ঠ। এদের কাছ থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের সংগঠনে অনেক আগাছা-পরগাছা ঢুকেছে। অনেকে নানাভাবে পদ পেয়েছে। আগাছা-পরগাছা সংগঠনের সব পর্যায় থেকে দূর করতে হবে। কমিটি গঠনের সময় আগাছা-পরগাছা যাতে সংগঠনে পদ না পায়, সেদিকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় কাউন্সিলের সার্বিক কার্যক্রমে ন্যূনতম অভিযোগ রয়েছে এমন কাউকেই কোনো দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশের আওয়ামী লীগের প্রতিটি কার্যালয়ে আদর্শিক, ত্যাগী সংগঠকদের উপস্থিতি বাড়ছে। যারা এতোদিন নানা রঙের গাড়ি নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসতেন তাদের আনাগোনা কমেছে। নীতি আদর্শ ভুলে যারা দলীয় পদ ব্যবহার করে অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন তাদেরকে এবার দলীয় পদ থেকে বাদ দেয়া হবে। তৃণমূলের নেতাকর্মিরা আশা করছেন এবার দলে ত্যাগী নেতাকর্মিরা পদ-পদবী পাবেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা মনে করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের অযোগ্য নেতাদের চিহ্নিত করার কাজে হাত দেয়ার পর দলের নীতিনির্ধারকরাও কিছুটা নড়েচড়ে বসেছেন। অনেক নেতাই আগামীতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই পাচ্ছেন না এটা এখন নিশ্চিত। কেউ কেউ শাস্তির মুখেও পড়তে পারেন। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের এবারের কাউন্সিলে বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে ৪০ শতাংশ বাদ পড়তে পারে। প্রতিবারই ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বাদ পড়ে। এবার এ সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ হতে পারে।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট