Categories: ভ্রমণ

দ্বীপের নাম মৌসুনী

দ্বীপের নাম মৌসুনী

অমিত কুন্ডু: আমরা তিন বন্ধু 7ই অক্টোবর নবমীর দিন মৌসুনী দ্বীপ এর উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। সকাল 5. 12 তে শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকালে চড়ে বসলাম। শিয়ালদহ থেকে নামখানা প্রায় 120 কিমি সময় লাগে প্রায় 3 থেকে 3.30 ঘন্টা। নামখানা তে নেমে সকালের টিফিন করে একটি টোটো বুক করে প্রায় পঁচিশ মিনিট দুরত্বে আমরা হাতা নিয়া দোয়ানিয়া ব্রীজ পার হয়ে হুজ্জতি ঘাটে পৌছালাম। চলার পথে বৃষ্টি ছিল আমাদের সঙ্গী। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে নৌকা করে চিনার নদী পার হয়ে মৌসুনী দ্বীপ এ পৌছালাম। মৌসুনী দ্বীপ থেকে টোটো করে পথের ধারেগ্রাম বংলার নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতে প্রায় 30 মিনিটে আমাদের গন্তব্যে চলে আসলাম।

আমাদের আগে থেকে বুকিং ছিল না টোটো চালক ভাই কে বলে সে আমাদের আনন্দধারা রিসট এ ব্যবস্থা করে দিল। আমরা রিসট এ পৌঁছাবার সাথে সাথে ডাবের জল দিয়ে অভ্যর্থনা জানালেন রিসটের মালিক। রিসটে অনেক তাবু ও ঘর আছে। আমরা ঘর বুক করেছিলাম মাথাপিছু 1100 টাকা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা। এখানে সব রিসটে মোটামুটি একই ব্যবস্থা। ঘরে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে সমুদ্রে বেড়াতে গেলাম। ঘর থেকে সমুদ্র দেখা যায় এখানে সমুদ্রে গর্জন আছে কিন্তু ঢেউ খুব কম সি বিচ টা বেশ বড়।

সমুদ্রে যখন এসেছি তখন স্নান না করলে পুরোপুরি স্বাদ মেটে না। এখানে সবাই মিলে খুব আনন্দ করে মনের সুখে স্নান করে আমাদের রিসটের দিকে পা বাড়ালাম। আমাদের হোটেল মালিক বাবলু দা সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দুপুরের খওয়ার ব্যবস্থা করলেন। পোনামাছ তপসে মাছ চিংড়ি সহযোগে দুপুরে এলাহি আয়োজন দুপুরে খাওয়ার পর সারাদিনের ক্লান্তি দুর করার জন্য একটু ঘুমিয়ে বিকালে আবার সমুদ্র দেখতে বের হলাম। বিকালে আমাদের সংগী ছিল হোটেল মালিক বাবলু দা তার সাথে হাটতে হাটতে এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে অনেক কথাই বললেন। এখানে একটা ইংরেজ দের তৈরি ওয়াচ-টাওয়ার আছে সেটি এখন ও বিদ্যমান। আমরা সি বিচ এ হাটতে হাটতে একেবারে শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। বাবলু দাই আমাদের দেখালেন কিভাবে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এখানে অনেক বাড়ি সমুদ্রের গ্রাসে চলে গেছে সরকার যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয় আগামী দিনে সমুদ্রের গ্রাসে এই দ্বীপের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। সন্ধ্যার সময় রিসটে পৌঁছে মুরি চপ চা সহযোগে নির্ভেজাল আড্ডা পাশেই অন্য টুরিস্ট দল এর কাঠের আঁচে বার্বিকিঊ দেখতে দেখতে কখন যে রাত ঘনিয়ে আসল তা টের পেলাম না। বাবলু দার ডাকে রাতে দেশি মুরগীর মাংস রুটি সহযোগে আহার করলাম।

সমুদ্রের ডাক ঘর থেকে শুনতে শুনতে কখন যে ভোর হয়ে গেল তা টের পেলাম না। সকালে ফ্রেশ হয়ে ব্যগপত্র গুছিয়ে রওনা দিলাম কলকাতার উদ্দেশ্য। যাওয়ার আগে আবার বলব নির্জনতায় মোরা মৌসুনী দ্বীপে একবার আসলে বারবার আসতে ইচ্ছা করবে এখানে দীঘা মন্দার মনি মত উজ্জ্বলতা নেই কিন্তু প্রকৃতি যেন মনপ্রাণ ঢেলে দিয়েছে। ইচ্ছে না থাকলে প্রকৃতি ই ডাকবে ওরে তোরা আবার ফিরে আয়।

অমিত কুন্ডু

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী

আজ, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, আমরা উদযাপন করছি স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী। এই দিনটি কেবল তাঁর…

2 months ago

কবি এ কে সরকার শাওনের প্রথম উপন্যাস “অতল জলে জলাঞ্জলি” প্রকাশিত।

১০ জানুয়ারি ২০২৫ এর বই মেলা উপলক্ষে বাজারে এসেছে কবি এ কে সরকার শাওনের প্রথম…

2 months ago

উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া আপডেট

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চল ও সিকিমের আবহাওয়া রইবে বিশেষভাবে পরিবর্তনশীল। পার্বত্য অঞ্চল ও…

2 months ago

সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের উপর কড়া নির্দেশ জারি

রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশিকা জারি করল…

2 months ago

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ আজ, অপেক্ষা ভোটের দিন ঘোষণার

জাতীয় নির্বাচন কমিশন আজ দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করবে। দুপুর ২টায় এক সাংবাদিক সম্মেলনের…

2 months ago

নেপাল-তিব্বত সীমান্তে তীব্র ভূমিকম্পে ৫৩ জনের মৃত্যু, আহত ৬২ জন

নেপাল-তিব্বত সীমান্তে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ৫৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আরও ৬২…

2 months ago