ছেলে আজ বিশ্বজয়ী। ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ছেলের সাফল্যে গর্বিত মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু তাঁর একার সন্তান নন, এই দেশমাতৃকার সন্তান বলে উল্লেখ করেন তিনি। হিন্দুস্থান পার্কের বাড়িতে বসে মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘আমার ছেলে নয়, দেশের ছেলে অভিজিৎ।’নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও অর্থনীতির গবেষক ছিলেন। দীর্ঘদিন অর্থনীতি নিয়ে চর্চা করেছেন। তাঁর সন্তান নোবেলজয়ী গবেষক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে এমআইটি-র অধ্যাপক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবাও ছিলেন অর্থনীতির অধ্যাপক।
এমন এক পরিবারের সন্তান হয়ে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনীতিতে আসা যেন সুনির্দিষ্টই ছিল। যদিও তাঁর মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, প্রথমে সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে পড়তে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপর পড়াশোনা ও পরবর্তীতে গবেষণার জন্য বেছে নেন অর্থনীতিকে।তিনি নিজে অর্থনীতির গবেষক ছিলেন। মা হয়ে ছেলেকে কী টিপস দিতেন? সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে রত্নগর্ভা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় সহাস্যে জানালেন, “হাত ধরে কিছুই শেখাইনি। আমি বিশ্বাস করি, তুমি যা করবে, তা থেকেই শিখবে।” জানালেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়েও মাঝে মাঝে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয়।
কখনও কখনও অনেক বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি কী এটা করবে? তুমি কী এটা দেখবে?” উত্তরে অনেক সময়ই মায়ের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।অর্থনীতির খুব জটিল বিষয় খুব সুন্দর সহজভাবে তাঁর ছেলে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিতে পারেন বলে গর্বের সঙ্গে জানান মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, অভিজিৎবাবুর একটাই কথা গরিবি কমাতে গেলে, তাঁদের উন্নতিসাধন করতে গেলে, তাঁদেরকেই তাঁদের কথা বলতে দিতে হবে। নির্মলাদেবী জানিয়েছেন, চলতি মাসেই দেশে ফিরছেন অভিজিৎবাবু। দিল্লিতে তাঁর একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠান রয়েছে। তারপরই একদিনের জন্য কলকাতায় আসার কথা রয়েছে তাঁর।উল্লেখ্য, তাঁর লেখা ‘Poor Economics: A Radical Rethinking of the Way to Fight Global Poverty’ বইটির জন্য বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার দিল্লিতে সেই সিরিজেরই পরবর্তী বইপ্রকাশ বলে জানা গিয়েছে তাঁর মায়ের কথায়।