প্রেমের ছ্যাঁকা– এন.কে.মণ্ডল
(ষষ্ঠ পর্ব)
সাবিলা রোহানের কথামত পাশে বসে পার্থীদের ইন্টারভিউ নিলেন। তারপর রোহানের বাড়িতে নিয়ে গেলেন। ওর নিজের বাড়িতে নয়। (সরকারি দেওয়া বাংলোতে) এখনো ডি.এম পদে আছেন চাকরি করেন। তারপর পুরো ব্যাপারটা বল্লেন।
তারপর সাবিলাকে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা আমার তো সবকিছু বললাম। এবার তোমার খবর বলো।
—সাবিলা: আমি আর কি বলব, আমার এখন একটা জরুরি চাকরির প্রয়োজন।
—রোহান: আর তোমার বরের খবর কি।
—-সাবিলা: আমরা দুজন দুজনে ডিভোর্স দিয়েছি, জানো প্রথমে আমাদের সংসারটা ভালোই চলছিলো তারপর কি হল, কি জানি কেউ কাউকে আর সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই আমরা দুজনে খুশির সহিত ডিভোর্স করেছি। এখন আমি একা।
—রোহান: আচ্ছা আমি একটা কথা বলব,যদি কিছু না মনে কর।
—সাবিলা: হ্যাঁ বল।
—রোহান: আচ্ছা আমরা দুজনে এক হতে পারি না। তাহলে আমাদের বাকি জীবনটা সুখের হত।
—সাবিলা: না তা হতে পারে না, আমি একজন ডিভোর্সড আর তোমার স্থান কত উপরে।
অনেক কথাকাটি করার পর রাজি হয় সাবিলা।
এবং তা বাবা মায়েদের জানায়। অবশেষে বিয়ের দিন ধার্য্য করা হল।
রোহান বাংলাদেশে এসে গ্রামের সবাই কে নিমন্ত্রন সমেত ফ্লাইটের টিকিট দিয়ে আসলেন।
রোহান পুঁজিপতি হওয়া সত্তেও তাঁর গ্রাম ও গ্রামের মানুষ কে ভুলে যায় নি। সে গ্রামের মানুষের জন্য যথার্থ আর্থিকভাবে সাহায্য করে।
রোহান অফিসের সমস্ত কর্মচারী এবং জেলার প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তিদের নিমন্ত্রণ করেন, যেহেত রোহান একজন ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট।
একমাস পর বিয়ের দিন—————-
একমাস পর বিয়ের দিন চারিদিকে ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে,গ্রামের সকলে এসেছে, হাই প্রোফাইল ও অফিসের বিভিন্ন কর্মচারীবৃন্দ এসেছেন। সবাই এসে হাজির বিয়ের গিফট প্রদান করছে দুজন কে।
কিন্তু কোম্পানির ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের আসতে একটু লেট হয়ে গেলো, মূল অনুষ্ঠানের কক্ষে গিয়ে ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের স্ত্রীর মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে বা আকাশ থেকে পড়ল। ম্যানেজিং ডাইরেক্টর তাঁর স্ত্রীকে বললেন স্যার ও ম্যাডাম কে গিফট দাও। গিফট দিয়ে চলে আসার সময় রোহান বললেন। একটু দাঁড়িয়ে যাও।
থমকে দাঁড়িয়ে গেলো ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের স্ত্রী।
—-রোহান: আমাকে চিনতে পারছো, আমি কে।
—–মেয়েটি: আজ্ঞে হ্যাঁ, আপনাকে চিনতাম।
তখন ম্যানেজিং ডাইরেক্টর তথা জর্জ ফ্রেজার বলে উঠে “সুমিয়া তুমি চেনো স্যার কে”।
সুমিয়া কোনো কথা বলে না, কথা না বলে কক্ষ ত্যাগ করে।
তখন সাবিলা অর্থাৎ রোহানের হবু স্ত্রী বলে উঠে ম্যানেজিং ডাইরেক্টরকে। আমি বলছি।
রোহান সাবিলার হাতখানা চেপে ধরে এবং না বলার বারণ করে। কিন্তু সাবিলা ওরকম মেয়ে নয়। তাই বহুদিনের চেপে রাখা যন্তণা বলে ফেলল।
মিস্টার ফ্রেজার আপনি কি জানেন, আপনার স্ত্রীর জন্য আমার হবু বর পাগল,মাথা খারাপ বনমানুষ হয়ে গেছিলো। আমি কষ্ট করে ওকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলাম শুধু একজন ভালো মানুষ কে ভালো করার জন্য।
সে এতোটাই স্বার্থপর যে নিজের ভালোবাসা কে নর্দমায় ফেলে দিয়ে আপনার টাকার লোভে বিয়ে করে। আর আজ সেই ছেলে আপনার মালিক শুনে তাঁর মাথাব্যথা হচ্ছে।
যাইহোক যা হবার তা হয়ে গেলো,ভালোভাবে বিয়ে সম্পুর্ন হয়ে গেলো।
এবং মিস্টার ফ্রেজার বাড়ি গিয়ে সবকিছু ভালোভাবে স্ত্রীর কাছে শোনার পর।
মিস্টার ফ্রেজার সুমিয়াকে আইনের মাধ্যমে ডিভোর্স দিলেন। এবং সে নতুন গরীব একটি মেয়েকে বিয়ে করে সংসার শুরু করলেন।
আর নতুন স্ত্রীকে বল্লেন আমার মালিক কে যে ব্যাক্তি কষ্ট দেয় বা শত্রু তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না, এবং সেও আমার শত্রু। রোহানও অনেক খুশি সাবিলা কে পেয়ে মনের আনন্দে দিন কাটাতে থাকে।
আর কোম্পানির বেশিরভাগ দায়িত্ব এখন মিস্টার ফ্রেজার কে দিয়েছেন।
————-সমাপ্ত