নদিয়া: নদিয়ার চাকদা থানা এলাকার শিমুরালি তাঁতিগাছি গ্রাম। এই গ্রামের এক কোনে বসবাস করেন যাযাবর সম্প্রদায়ের মানুষ। দেশে দেশে ঘুরতে ঘুরতে বছর ৪০ আগে এই গ্রামে বসতি স্থাপন করেছিল তারা। একসময় পশুপালন তাদের প্রধান পেশা হলেও এখন তা অতীত। বর্তমানে কেউ কান পরিষ্কার করে কিংবা কেউ হাবু খেলা দেখিয়ে রুটিরুজি সংগ্রহ করে থাকেন এখানকার অধিকাংশ পরিবার। জনমজুর এর কাজও করেন কেউ কেউ। দারিদ্রতা এদের নিত্যসঙ্গী। সন্তানদের নতুন পোশাক দেওয়ার সামর্থ্য তাদের সব সময় হয়ে ওঠে না। নতুন পোশাকে পুজোর আনন্দে যখন বাকিরা আনন্দে আত্মহারা তখন দারিদ্রতার বারমাস্য এই পাড়ায়।
একসময় অশিক্ষা ও কুসংস্কাের নিমজ্জিত ছিল প্রায় গোটাপাড়া। বর্তমানে মাধ্যমিক পাস করেছে বেশ কয়েকজন। সৌজন্যে প্রশান্ত ঘোষ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। এই সংস্থার ফ্রি কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করছে এই পাড়ার নতুন প্রজন্ম। আর পড়ুয়াদের নতুন পোশাকের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে বিশিষ্ট সমাজসেবী নীহারিকা মুখোপাধ্যায়ের সংস্থা ডিভাইন ব্রেথ। কলকাতার একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা নীহারিকা মুখোপাধ্যায় সারা বছর ধরেই সমাজসেবামূলক কাজ করেন। রবিবার তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন নদীয়ার ওই প্রত্যন্ত গ্রামে।
তাঁতিগাছি সর্দার পাড়ার ওই সব দুঃস্থ দরিদ্র পরিবারের বাচ্চাদের হাতে তুলে দিলেন পুজোর নতুন পোশাক। পুজোয় নতুন পোশাক পেয়ে খুশি কচিকাঁচারা। নীহারিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, তিনি বারবার আসবেন পাশে থাকবেন। কচিকাঁচাদের পড়াশোনার প্রতি নজর দেওয়ার আবেদন রাখেন তিনি। প্রশান্ত ঘোষ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন পরিচালিত ফ্রি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক নবজিত বিশ্বাস বলেন এই পাড়ায় শিক্ষার আলো ছিল না। এখন এই পাড়ার ছেলে কলেজে পড়ছে। ডিভাইন ব্রেথের মতো সংস্থা তাদেরর পাশে দাঁড়ানোই ওই পাড়ার নতুন প্রজন্মকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার কাজ আরও সহজ হয়েছে।