শেষ ঠিকানা (দ্বিতীয় পর্ব)


সোমবার,১৬/০৯/২০১৯
1832

শেষ ঠিকানা
দ্বিতীয় পর্ব
এসকেএইচ সৌরভ হালদার

পিছন তীর ছুড়ে কিছু সাঁওতাল লোক আমাকে তীর বিদ্ধ করতে চেয়েছিল ।আরেকটু এগিয়ে গিয়ে দেখলাম তারা সাঁওতাল না তারা ছিল জংড়ী এবং আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করছি। পথ হারিয়ে ফেলেছি। মোবাইলে ছবি তুলতে তুলতে মোবাইল চার্জ শেষ, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

জঙ্গলে পাহাড়ের কাছে সরু রাস্তা দিয়ে আমি যাচ্ছি গাছগাছালিতে পাখিরা কিসমিস করছে ।মাঝে মাঝে ও ও বলে শব্দ আসছে বহুদূর থেকে।

আমি ভীতু হয়ে যাচ্ছি। কিছু দূর এসে বড় রাস্তা পেলাম এবং দূর থেকে যেন হা হু বলে মানুষের আওয়াজ শুনতে পেলাম । এই আওয়াজ শুনে আমি তাদের কাছে সাহায্যের জন্য এগিয়ে যেতে লাগলাম। এমন এক সময় কে যেন উপর থেকে জাল ফেলল এবং সেই জালে আমি আটকে গেলাম পরে দেখি এখানে ফাঁদপাতা ছিল।
তারপর উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম একটি জংড়ী গাছের উপর বসে আছে। জোরে জোরে হাসছে এবং দুই হাত নাড়িয়ে নাচতে শুরু করল আমাকে ধরে।
এরপর আমাকে টানতে টানতে নিয়ে গেল ওদের স্থানে যেখানে আমি শুনছিলাম অনেক আওয়াজ তারপর দেখি সেই আওয়াজগুলো মানুষের নয় জংড়ীদের।ওরা আমাকে বেধে চিৎকার করে ডাকছিল এবং পাশে থাকা ডলের মত একটি বাদ্যযন্ত্র জোরে জোরে বাজাচ্ছিল আর অদ্ভুত আওয়াজ করছিল।

সাধারণত ভাবে ওরা কথা বলতে পারেনা তাই একে অপরকে ইশারা করে বলছিল, যেহেতু ওদের কথা আমিও সেরকম বুঝতে পারছিলাম না। তবে ইশারা-ইঙ্গিত এর মাধ্যমে কিছু কিছু কথা বুঝতে পারছি। আমাকে ওরা মেরে ফেলার কথা বলছিল সেরকম একটা ইঙ্গিত দিল আমার তাই মনে হল।

আমি ভয়ে থরথর করে কাঁপছে যেন গলা থেকে জল শুকিয়ে যাচ্ছে। তারপর ওদের রাজা গুহা থেকে বেরিয়ে আসলো। তার শরীর এবং তাকে দেখলে একটা ভয়ানক অবস্থা হয়ে যাবে যে কারোর।

মাথাই বিভিন্ন রঙের গাছ গাছালি দিয়ে তৈরি একটি মুকুট। হাতে বিভিন্ন সরু গাছ কেটে চুরি বানিয়েছে ওরা। তাছাড়া গাছের শিকড় দিয়ে পায়ে গোল করে একটা শিকল তৈরি করেছে। অস্ত্র হিসেবে ওই রাজার হাতে ছিল বিশাল বড় একটা ভাঙ্গা কুড়াল। আমি এসব দেখে ভয়ে চমকে উঠলাম।

নিজেকে নিয়ে একটু ভাবছি প্রথমে ওই ডাকাতদল আমাকে মারতে চেয়েছিল এবার এরা ।আমাকে মারতে চেয়েছে। তারপর নিজের মনকে সাহস করে একটা বুদ্ধি বের করলাম নিজের পকেটে থাকা মোবাইল ঘড়ি দিয়ে ওদের সামনে গান বাজাতে শুরু করলাম ।

এটা শুনে ওরা ঘুরে ঘুরে নাচতে লাগল ও আমার সামনে মাথা নত করে হাত একবার নিচে এবং উপরে তুলতে লাগল। আমি ইশারা করে ওদেরকে ওদের ভাষায় বলছিলাম আমাকে খুলে দেওয়ার কথা শরীরের বন্ধন। ওরা বিনয়ের সাথে খুলে দিলো। আমি ওদের মধ্যে একজন কে ইংগিত করে সাহায্য চাইলাম‌। ওরা সাহায্য করতে রাজি হল, তারপর আমি ওদের মধ্যে একজন সঙ্গীকে নিয়ে জঙ্গল থেকে বাইরে বেরিয়ে আসলাম। বাইরে এসে আমার একটা অদ্ভুত ধারণা তৈরি হলো ভিন্ন জায়গায় ভিন্নভাবে আমাকে যেন এক আপন করে নিলো অচেনা মানুষ যারা ছিল জংড়ী।

এসকেএইচ সৌরভ হালদার
বাংলাদেশ

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট