স্বাধীনতার পর কোনো বাংলাদেশি কখনো ভারতে যায়নি: মির্জা ফখরুল


বুধবার,১১/০৯/২০১৯
2251

মিজান রহমান, ঢাকা: স্বাধীনতার পরে কোন বাংলাদেশি কখনো ভারতে যায়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ দাবি করেন। ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি উপলক্ষে বেলা সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়। ভারতের আসামের নাগরিকপঞ্জীর বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আসামে তাদের মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতারা হুমকি দিচ্ছেন, ভারতে বাংলাদেশিরা অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের তারা আবার বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, স্বাধীনতার পরে কোন বাংলাদেশি কখনো ভারতে যায়নি। সুতরাং আজকে বাংলাদেশকে আবার বিপদগ্রস্ত ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার জন্য গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে।

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আসুন আজকে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। দল, মত, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা আমাদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় এবং স্বাধীনতা- গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন- নিজেদের অধিকার, ভোটের অধিকার ও কথা বলার অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই এবং তাদেরকে সরিয়ে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করি। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে তিনি বলেন, বেগম জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার ডায়াবেটিস ও গায়ের ব্যথা বেড়ে গেছে। তিনি সাহায্য ছাড়া হাঁটতে ও চলতে পারেন না। কিন্তু এই সরকার ও পিজির ডাক্তাররা বলছেন, তিনি সুস্থ আছেন। কিন্তু তিনি একেবারেই সুস্থ নন। আজকে একেবারেই অসুস্থ অবস্থায় সেখানে কারারুদ্ধ দিন পার করছেন তিনি। অবিলম্বে এই অসুস্থ নারী ও নেত্রীর সুচিকিৎসার জন্য মুক্তি দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে পারছে না। কারণ তাদের সেই বৈধতা ও সাহস নাই।

তাদের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। তাই দুই বছরে একটা রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি! সামনের দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে বর্তমান দানব সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় মির্জা ফখরুল জিয়ার সৈনিক, জিয়ার সৈনিক, মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই বলে স্লোগান দেন। তার স্লোগানে জবাবে কর্মীরা বলেন, এক হও- এক হও, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আইনী প্রক্রিয়ায় বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আইনী প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সারা বাংলাদেশে কর্মসূচি দিতে হবে। এজন্য আমাদের কর্মসূচি দিতে হবে। কারণ একমাত্র রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম জিয়াকে মুক্তি করতে পারি। সরকারকে উদ্দেশ্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মানে মানে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেবেন? না কি আমাদের রাজপথে নামতে হবে। আমরা যদি মনে করি, সরকার বেগম জিয়ার মুক্তিতে একমাত্র বাধা। তাহলে সরকারের পতনই আগে ঘটাবো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আদালতকে প্রভাবিত করে বেগম জিয়ার মুক্তির বিলম্বিত করা হচ্ছে। এজন্য জনগণ সাথে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করতে হবে এবং নেত্রীকে মুক্তি করতে হবে। মানববন্ধনে মুক্তি মুক্তি মুক্ত চাই- খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, জেলের তালা ভাঙবো খালেদা জিয়াকে আনবোসহ বিভিন্ন স্লোগানে প্রেসক্লাবের প্রাঙ্গন মুখরিত করে তুলেন নেতাকর্মীরা। এদিকে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সমবেত হতে দেখা যায়। অপরদিকে মানববন্ধনকে ঘিরে প্রেসক্লাবের সামনে এবং এর আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়। মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকট আহমদ আযম খান, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী- খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, শিরিন সুলতানা, মীর সরাফত আলী সপু, আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট