শেষ ঠিকানা – (পর্ব ১)


বুধবার,১১/০৯/২০১৯
1793

শেষ ঠিকানা

(পর্ব ১)

এসকেএইচ সৌরভ হালদার

খুলনায় যখন নতুন ট্রেন স্টেশন তৈরি করে, তখন আমার খুব ইচ্ছা যে আমি ট্রেনে করে সফরে যাব।সেই ইচ্ছা পূরণের জন্য আমার মামা কে আমি বলি। আমার মামা সে একজন ইঞ্জিনিয়ার এত সহজে আমাকে আপন করে নেয় আমি নিজেও জানিনা। আমার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমার মামা রাজি হয়ে, গেল ট্রেন সফরে যাওয়ার।

ঘুরতে যাওয়ার জন্য তৈরি হলাম শিলিগুড়ি।শুনেছি শিলিগুড়ি নাকি একটা সুন্দর জায়গা ,যেখানে আছে প্রকৃতিতে ভরা এক মুগ্ধকর পরিবেশ আছে নাকি পাহাড় তবে যায়নি কোনদিন পড়েছি শুধু বইতে আর শুনেছি শুধু মুখে ।আজ সেখানে যাব আনন্দে আত্মহারা হতে আমার বাকি নাই।

তবে পরের দিন সকালে যখন যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছি তখন থেকে আমার যেন মনে হচ্ছে কখন পৌছাবে শিলিগুড়ি। এক কথায় বলতে গেলে দেরি আর সহ্য হচ্ছে না।

আর বিলম্ব না করে অতি শীঘ্রই রওনা হইলাম খুলনা স্টেশন। খুলনা স্টেশন যাওয়ার জন্য রূপসা নদী পার হয়ে একটা রিক্সা ভাড়া করে নিয়ে স্টেশনের দিকে যাচ্ছি।যাওয়ার পথে দেখি কিছু লোকজন হইচই করেছ। তাহার সাথে খুব আচার্য হলাম। কারনে এত লোক একসঙ্গে হই হই করছে একটা বিস্ময়কর ব্যাপার।

তারপর মামাকে বলে আমি ওই জায়গায় যেতে চাইলাম মামা বাধা না দিয়ে সেখানে নিয়ে গেল।

সেখানে গিয়ে দেখি একটা বেদে তার নিজস্ব উপায় নিজস্ব ভাবে সাপ খেলা দেখাচ্ছে যেন সাপ দুলে দুলে বেদের সাথে নাচছে। এবং সেই বেদে সুর দিয়ে বিন বাজাচ্ছে।

তখন কিছুক্ষণ ওখানে সাপ খেলা দেখে ট্রেন ষ্টেশনের দিকে রওনা দিলাম।স্টেশনে আমার মামা পৌঁছে দিয়ে চলে গেল আর আমি ঘুরতে চলে গেলাম শিলিগুড়ি মনটা খুব সুন্দর এবং মনোরম লাগছে।

ট্রেনে যেতে যেতে হঠাৎ মাঝপথে ইঞ্জিন খারাপ হয়ে গেল। এইসময় মধ্যরাত, সবাই হয়তো ঘুমিয়ে আছে কিন্তু আমি এখনো জেগে ফেসবুকে একটু উঁকি মারছি। হঠাৎ করে একটু বিস্মিত হলাম। কারণ স্টেশন থেকে ট্রেন টি যদি ইঞ্জিন পরীক্ষা করে চলে আসবে। তাহলে এখানে হঠাৎ করে থেমে যাবে কেন। মনে সন্দেহ প্রশ্ন টা একটু বেশি হল।

এরপর দেখি কিছু লোকজন হইচই করে ট্রেনের কেবিনের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। তারপর দেখি মুখে মুখোশ পরা এবং হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়ছে সরবর করে। আর চিৎকার করে বলছে সবাই “জেগে যাও” যার কাছে যা আছে দিয়ে দাও” ।

এই শুনে মনের ভিতর আমার একটু ভয় কাজ করতে লাগল আর আমি ভাবছিলাম এরা সামান্য ৩-৪ জন লোক আর আমরা এত লোক মিলে কিছুই করতে পারবোনা।

ওদের অস্ত্রপাতি দেখে কোন লোক প্রতিবাদ করলো না।আমি প্রতিবাদের সহিত উত্তর দিলাম

-আপনারা কে ?

আর আপনাদের আমরা আমাদের জিনিসপত্র দিতে যাব কেন।

ওরা চিৎকার করে বলল এই তোর মরার ভয় নেই। আমি বললাম মরার ভয় থাকলেও তোমাদের মতো জানোয়ারের কাছে আমার মরার ভয় নেই।

ওদের ওস্তাদ বলল একে নিয়ে চল আমাদের ডেরায়।তখন আমি এবং আমার সাথে থাকা কিছু লোকদের ট্রেন থেকে বের করে নিয়ে গেল ওদের ডেরায় তবে যাওয়ার সময় আমাদের চক্ষু বাঁধিয়া নিয়ে গেল।

আর পরে জানতে পারলাম ট্রেনের চালক এবং এই ডাকাত মিলিয়ে ট্রেনটা এখানে থামিয়ে আমাদের উপর আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে।

তারপর রাতে কোনমতে মশার কামড় এবং অক্লান্তভাবে রাতটা কাটালাম। পরের দিন সকালে উঠে যখন দেখি তখন ডাকাতরা আমাদের অন্য দেশে পাচার করার পরিকল্পনা করছে। ওদের সঙ্গে দেখি ওই ট্রেন চালক কে। তারপর বুঝতে পারি ওরা একসঙ্গে কাজ করে এখানে।

আমি মনে মনে ভাবছিলাম আমার শিলিগুড়ি যাওয়ার এই হল শেষ ঠিকানা যা হলো একটা জঙ্গল যেখানে আছে প্রকৃতিতে ভরা নির্জন জায়গা। তখন আমি ভাবছি জীবনটা এভাবেই হয়তো আমার শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এখনো আশা ছাড়েনি।তারপর ডাকাতরা যখন আমাদের এই ডেরা থেকে অন্য ডেরা নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল ,তখন আমি ইশারা করে সবাইকে প্রস্তুত হতে বললাম ওদের উপর আক্রমণ করার জন্য তবে কাজটা সম্পূর্ণভাবে পারব কিনা সেটা জানিনা।

একসঙ্গে অনেকগুলো লোক ছিলাম বোধ হয় ওদের উপর আক্রমণ করতে একটু সহজ হয়েছিল তারপর ডাকাতদের উপর আমরা সবাই একসাথে ঝাপিয়ে পড়লাম এবং ডাকাতদের ফরেস্ট দের হাতে তুলে দিলাম।

ডাকাতদের সাথে এই ঘটনা ঘটতে ঘটতে তখন দুপুর হয়েছে। তারপরে ফরেস্টের জঙ্গল হতে একটি ট্যাক্সি নিয়ে পরের স্টেশন গেলাম তারপর থেকে ট্রেনে করে শিলিগুড়ি রওনা দিলাম।খুবই চমৎকার একটা কাহিনী ঘটে যখন শিলিগুড়ি যাচ্ছিলাম তখন ভাবছিলাম এটাই হবে আমার শেষ ঠিকানা কিন্তু তা আর হলো না।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। শিলিগুড়ি থেকে আবার একটি ঝামেলা তৈরি হলো। শিলিগুড়িতে যখন আমি পাহাড়ের দিকে ঘুরতে বেরিয়েছি তখন খুবই উষ্ণ ছিল পরিবেশটা। চারিদিকে পাখির কিসমিস শব্দ এবং শীতল হাওয়া বইছিলো কেউ কেউ আবার পাহাড়ের দিকে চিৎকার করছিল এবং তাদের শব্দ প্রতিবিম্ব হয়ে ফিরে আসছিল।সেই পাহাড় থেকে পাশে একটি ঝর্ণা ছিল ঝর্ণায় ঝরোঝরো ভাবে জল পরছিল। আমি একাকী মনে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছিলাম ওই পরিবেশটাকে,এমন সময় পাশ থেকে কে যেন একটি তীর মারলো ভাগ্যবশত তীর টা আমার হাতের কাজ থেকে গিয়ে পাশের একটি গাছে ভেদ করল। এই দেখে আমি অবাক হয়ে পিছন দিকে তাকালাম হঠাৎ করে।

এসকেএইচ সৌরভ হালদার
বাংলাদেশ

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট