সোমেনের স্বপ্ন – প্রথম পর্ব
এন.কে.মণ্ডল
সেদিন ছিল শনিবার সোমেন ফিরছে তখন প্রায় সঁন্ধা সাতটা কি সাড়ে সাতটা হবে। রোজ প্রায় সঁন্ধার আগেই বাড়ি চলে আসে।আজ অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। চায়ের দোকানে আড্ডা দিতেই। তাতে আবার আসার পথে গ্রামের প্রধান মোড়ল ডাক দিয়েছে।কি আর করা যাবে গ্রামের প্রধান মোড়ল বলে কথা যেতেই হবে।আর সেই জন্যই এতো লেট হয়ে গেছে।বাজারের চায়ের দোকান থেকে অনেকটা দূরে বাড়ি।তাতে করে কিছুটা দুরেই স্বশান আছে তা ছেড়ে আবার মুসলমান ভায়েদের কবরস্থান আছে বাড়ির এককিলোমিটার আগে। রোজ যাতায়াত করা হয় সেই সাহসেই মোড়ল মশাইয়ের বাড়িতে অনেকটা লেট করে ফেলেছে।যাইহোক ওসব কথা বাদ দিই কাজের কথায় আসি। বাড়ির গিন্নী কে সোমেন খুব নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। তাই গিন্নী বলেছিল যে আসার পথে কিছু আনতে যেমন বেগুনি, আলুর চপ বা তেলেভাজা কিছু খাবার।তাই সে সেদিন বাজার শেষে গিন্নীর জন্য আলুর চপ আর বেগুনি আনছিল।আসতে আসতে দেখল যে আকাশে কালো ও ঘন মেঘ জমেছে আর তা ইতিমধ্যেই এসে যাবে। কিছুটা পথ অতিক্রম করার পর বৃষ্টিটা এসেই গেলো আর ধরে রাখা গেলো না।মেঘ ডাকছে হরাম হরাম করে ভয়ও লাগছে। কেন না একে দেরি করে বাড়ি ফেরা এবং তাতে আবার অনেক রাত্রি হয়ে গেছে বৃষ্টি নেমে গেছে।
শরীর ভেজে একদম ভেজা কাক।হাড় হিম হয়ে আসছে।গ্রামের লাল কাঁদা রাস্তা। কিছুটা চলার পর আচমকা হঠাৎ হুড়মুড় করে সাইকেল নিয়ে পড়ল রাস্তার ধারের ছোটো নালায় যেগুলি এক কথায় বলায় হয় রাস্তা তৈরি করার জন্য মাটি লেগেছিল সেই ডোবায়। সোমেনের বড় আঘাত লাগে নি তবুও কিছুটা লেগেছে। ভয়ে ভয়ে সে কাতরাচ্ছে। কারণ স্বশানের কিছুটা আগেই বড় বটগাছের কাছের রাস্তায়। আর শোনা আছে। বাবা কাকার কাছে যে ওই বটবৃক্ষের মাথায় নাকি ভূত পেত্নী থাকে। সবাই যায় সঁন্ধার আগে পরে কিন্তু কোনোদিন কোনো কিছু চোখে পড়ে না। সোমেন মনে মনে ভাবে হাই ভগবান তবে কি বাবা কাকার কথাগুলি সত্যি হলে কি করব।আরো ভয়ে কাঁপছে থরথর করে। বাজার করেছিল আলুর চপ,বেগুনি। হটাৎ খেয়াল পড়ে গেলো। শুনেছে যে তেলেভাজা জিনিস থাকলে নাকি এগুলি বেশি বেশি হয়। তাকে ভূতে ধরবেই।সোমেন আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি ব্যাগ থেকে বেগুলি আর চপ ফেলে দিতে যায় এমন সময় বিবেক বাঁধা দেয়। যে তাঁর প্রিয় স্ত্রী খেতে চেয়েছে।আবার ব্যাগেই রাখল। যা কপালে আছে তাই হবে। সাইকেল নিয়ে হেঁটে চলেছে কারণ প্যাঁচপ্যাঁচে লালকাঁদা রাস্তায় সাইকেলে যাওয়া যাচ্ছে না। বিপদ হলে চারিদিকেই বিপদ হয়।খানিকক্ষণ যাওয়ার পর লাল নীল বাতি জ্বলছে নিভছে বারবার।
হঠাৎ করেই সামনে দিয়ে বিড়াল চলে গেলো আর চোখদুটি ভাটার মতো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। মাথার ওপর দিয়ে কি যেন উড়ে গেলো মাথার চুল ছিড়ে নিয়ে। আজকে এতো রাত্রি হয়ে গেছে যে রাস্তায় কেউই আসছে না। হঠাৎই মনে পড়ল যে কাছে আগুন থাকলে নাকি ভূত পেত্নী আসতে ভয় পায় তাই সে বিড়ি ধরানোর জন্য প্রস্তুত।কিন্তু বিড়ি কোথায় সে তো ভিজে জবজব করছে। হাটতে হাটতে এবার শ্বশানের কাছে আসতেই আরো শরীর থরথর করে কাঁপছে কারণ শ্বশানেই চলে এসেছ।মিডিল পথ যেদিকেই যাই সেদিকেই সমান রাস্তা।ভারী চিন্তার বিষয়। যা আছে কপালে তাই হবে। কিছুটা যেতেই একজন ব্যাক্তি যাচ্ছে। যাইহোক তাকে দেখে বুকে সাহস হল। মনে মনে ভাবে যে অন্তত একজনের সঙ্গে দেখা তো হল। আর ভয় নেই।তাই সোমেন দ্রুত হেটে চলেছে। কিন্তু দ্রুত হেটে যেতেই দেখা গেলো। যে লোকটি হেটে যেতে দেখা যাচ্ছিল তাঁর আবার পা দেখা যাচ্ছে না অথচ দিব্যি হেটেই চলেছে।লোকে বলাবলি করে যে ভুতের নাকি পা থাকে না।সোমেন সেখানেই থমকে দাঁড়িয়ে গেলো। তখনিই সেই লোকটি সামনে যাওয়ার বদলে তাঁর দিকেই এগোচ্ছে।সোমেন ভীমরি খেয়ে পড়ল বড় নালায় আবার দ্বিতীয়বারের মতো। লোকটি কাছেই আসছে আস্তে আস্তে।অবশেষে তা চলেই এলো। সোমেন স্পষ্ট দেখতে পেলো। ইয়া বড় বড় দাঁত মুখের দুই কষা দিয়ে বেরিয়ে তা থুতনি পেরিয়ে গেছে।চোখ তো দেখায় যাচ্ছে না শুধুই খোপ খোপ। যেন চোখ তুলে নিলে যেমন হয়।সাদা কাপড় পরে আছে গলা থেকে পা পর্যন্ত।চুলগুলি মাথা থেকে পিঠ বেয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে।যাইহোক সোমেনকে আঙুলের ইশারায় সোমেন কে তুলে বসাল রাস্তার উপরে।সোমেন আর সোমেনের জায়গায় নেই মরার জোগাড়। কোনো কিছু কথা বলার আগেই সোমেনের কাছে আলুর চপ,বেগুনী খেতে চাইল।আলুর চপ,বেগুনী গুলি অটোমেটেকলি বের হয়ে আসল আর তা খেতে আরম্ভ করতে লাগল। খাওয়া শেষ না হতেই
সোমেন ভিমরি খেয়ে অঞ্জান হয়ে গেছে।অনেক্ক্ষণ পর চোখ খুলল। চোখ খোলার পর দেখে এক বিশাল ঝকঝকে রাজবাড়িতে শুয়ে আছে।যেখানে সোনা রুপা দিয়ে কারুকার্য করা দেওয়ালগুলি আসবাবপত্রগুলি হিরা,মুক্তা দিয়ে এমন কি নরম বিছানাটাও। সোমেন আশ্চর্য হয়ে ভাবছে।কিন্তু তাঁর কিছুই মনে পড়ছে না বাড়ির কথা বা আগের কর্মকাণ্ড। সে উঠে বসল এবং তারপর একটি মেয়ে আসলো সঙ্গে সুন্দর সুন্দর খাবার নিয়ে। এবং তাঁর পিছুপিছু আরো অনেক দাসদাসী তাঁদের হাতেও অনেক খাবারের নানান সম্ভার।দেখেই আত্মহারা হয়ে গেছে সোমেন।
Highway 61 Revisited
Now retrieving the price.
(as of সোমবার,২৩/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 - More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)