বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নদীগুলো নিয়ে নানা পরিকল্পনা

মিজান রহমান, ঢাকা: রাজধানী ঢাকার চারপাশের নদীতে উচ্ছেদ অভিযানের পর উদ্ধার অংশে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এরই মধ্যে নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। দুই পাড়ে হাঁটার পথ, অপেরা মঞ্চ, ৩টি ইকোপার্ক ও পর্যটন এলাকা গড়ে তোলা হবে। এদিকে, উদ্ধার জমি যেন আবারও দখল না হয় সেজন্য ২২৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রমের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, বালু নদী ঘিরে ৫২ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে, সবুজে ঘেরা তিনটি ইকোপার্ক, নগরবাসীর ব্যবহারের জন্য নদীর বিভিন্ন স্থানে ১০০ ঝুলন্ত সিঁড়ি ও ৪০৯টি বসার স্থান। সীমানা জটিলতার স্থায়ী সমাধানে বসানো হবে ১০ হাজার ৮২০টি বিশেষ সীমানা পিলার। আহসান মঞ্জিল পাবে নতুন রূপ। সদরঘাট থেকে বাবুবাজার ব্রিজ, কামরাঙ্গীরচর থেকে খোলামোড়া পর্যন্ত তৈরি হবে পর্যটনবান্ধব এলাকা।

শিশুদের জন্য খেলার মাঠ, বিনোদন পার্ক, স্থাপন করা হবে বাণিজ্যিক ঘাট, থাকবে এম্পিথিয়েটারও। দুই ধাপে যা ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য সরকার এসব মহাপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করেছে। জানা গেছে, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে গ্রামগঞ্জের সব মানুষের কাছে উন্নয়নের সব সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে—এই লক্ষ্যে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলো দূষণমুক্ত করে নাব্য ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু হয়েছে। মহাপরিকল্পনায় আছে—‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’, ‘স্বল্পমেয়াদি’, ‘মধ্যমেয়াদি’ এবং ‘দীর্ঘমেয়াদি’ পরিকল্পনা। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ১০ বছর। প্রাথমিকভাবে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলছে। নদী দখলমুক্ত করা হচ্ছে, ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। তাছাড়া ওয়াসার নেতৃত্বে স্যানিটেশনের কাজ শুরু হচ্ছে।

দূষিত পানি যেন নদীতে না যায় সেজন্য ঢাকার স্যুয়ারেজ লাইনও ঠিক করার কথা রয়েছে এই মহাপরিকল্পনায়। পাশাপাশি গৃহস্থালি ও শিল্প বর্জ্য যাতে আর নদীতে না যায় সেই ব্যবস্থা নেওয়া কথাও পরিকল্পনায় রয়েছে। প্রসঙ্গত, গত মার্চে এক রিট মামলার রায়ে ঢাকার তুরাগ নদকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা করে দেশের সব নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়কে রক্ষার জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে ‘আইনগত অভিভাবক’ ঘোষণা করে হাইকোর্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘মাইলফলক’ ওই রায়ে নদী দখলকারীদের নির্বাচন করার ও ঋণ পাওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। নদী রক্ষা কমিশন যাতে নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয় রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে সেজন্য আইন সংশোধন করে ‘কঠিন শাস্তির’ ব্যবস্থা করতে বলা হয় সরকারকে। পাশাপাশি জলাশয় দখলকারী ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের তালিকা প্রকাশ, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের সব নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ের ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরি এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানায় নিয়মিত সচেতনতামূলক কর্মসূচি নিতে বলা হয় হাইকোর্টের রায়ে।

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন দোহাল

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোহাল আজ বেজিংয়ে, ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন।…

4 days ago

ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন

আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন। ৩৯ টি দেশের…

4 days ago

তারা আর কোনো চাকরির পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী’- NTA, আগামী বছর থেকে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা…

4 days ago

গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এবারের গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।…

4 days ago

‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি :সুকান্ত

রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে ন্যাশনাল ‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা…

4 days ago

বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে নিবন্ধিকৃত হতে হবে

সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া SEBI জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে…

4 days ago