সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভার প্রেস বিবৃতি
সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির দু’দিনব্যাপী সভা বুধবার শেষ হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিমান বসু। বৈঠকে নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি ও পার্টির সাংগঠনিক প্লেনামে গৃহীত সিদ্ধান্ত রূপায়ণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি সভায় বলেন, দ্বিতীয় মোদী সরকার শুরু থেকেই সংবিধান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নাগরিক অধিকারের ওপরে আক্রমণ নামিয়ে আনছে। একের পর এক বিল পাস করানো হচ্ছে যা নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন করবে। সঙ্ঘ পরিবার আরো আগ্রাসী হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বামপন্থীদের সমর্থন পুনরুদ্ধারের কঠিন কাজ করতে হবে।
ইয়েচুরি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে যে কৃত্রিম দ্বৈরথ ও মেরুকরণ ঘটানো হচ্ছে তা ভাঙতে হবে। বিকল্প রাজনৈতিক ভাষ্য তুলে ধরতে হবে। বাংলার নবজাগরণ ও সমাজ সংস্কারের উত্তরাধিকারী বামপন্থীরাই। সেই মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। জনগণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ তৈরি করতে হবে। ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছাড়াও সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্রের ওপরে আক্রমণের মতো প্রশ্নে ব্যাপকতম মঞ্চ গড়ে তুলতে হবে।
রাজ্য কমিটির সদস্যরা আলোচনার সময়ে সাংগঠনিক দুর্বলতার বিভিন্ন দিক উল্লেখ করলেও জানান ছোট-বড় আন্দোলন ও কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পার্টিকর্মীরা রাস্তায় রয়েছেন। শ্রমজীবী মানুষের দাবিদাওয়া, স্থানীয় প্রশ্নে আন্দোলন ও জমায়েত করা হচ্ছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে প্রচার আন্দোলন আরো তীব্র হবে। সেপ্টেম্বরে জেলায় জেলায় পার্টির নিজস্ব উদ্যোগে বড় আকারের জনসমাবেশ সংগঠিত হবে।
রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র বলেন, যাঁরা নির্বাচনে বামপন্থীদের বদলে বিজেপি বা তৃণমূলে ভোট দিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিরিয়ে আনার অভিযান চালাতে হবে। এই মানুষ স্থায়ী ভাবে অন্যত্র গেছেন, এমন মনে করার কারণ নেই। বাস্তবে নির্বাচনের পরে বহু সন্ত্রস্ত এলাকাতেও কর্মসূচিতে মানুষের উপস্থিতি ভালো। বিজেপি যে উগ্র জাতীয়তাবাদ বা পরিচিতিসত্ত্বার মিথ্যা নির্মাণ করেছে, তা বেশিদিন টিকবে না। রুটিরুজির প্রশ্নে এবং মানুষের প্রতিদিনের জীবনে ধারাবাহিক লেগে থেকে বামপন্থীদের শক্তি সংহত করতে হবে। পার্টির নিজস্ব শক্তি বৃদ্ধি, বামফ্রন্ট ও বৃহত্তর বাম ও বাম সহযোগীদের ঐক্য গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী শক্তিগুলির ব্যাপকতম মঞ্চ গঠন করতে হবে।
২৪জুলাই, ২০১৯
কলকাতা