জন্মদিনে মালালা ইউসুফজাই


শুক্রবার,১২/০৭/২০১৯
1832

মালালা ইউসুফজাই (জন্ম: ১২ই জুলাই, ১৯৯৭) একজন পাকিস্তানি শিক্ষা আন্দোলনকর্মী, যিনি সবচেয়ে কম বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সোয়াত উপত্যকা অঞ্চলে শিক্ষা এবং নারী অধিকারের ওপর আন্দোলনের জন্য পরিচিত, যেখানে স্থানীয় তালিবান মেয়েদের বিদ্যালয় শিক্ষালাভের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।

২০০৯ খ্রীস্টাব্দে মালালা বিবিসির জন্য ছদ্মনামে একটি ব্লগ লেখেন।পরের বছর গ্রীষ্মকালে সাংবাদিক অ্যাডান এলিক তাঁর জীবন নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের জন্য একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন।

২০১২ খ্রীস্টাব্দের ৯ই অক্টোবর, স্কুলের বাসে একজন বন্দুকধারী তাঁকে চিহ্নিত করে তিনটি গুলি করে, যার মধ্যে একটি তাঁর কপালের বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে চামড়ার তলা দিয়ে তাঁর মুখমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে কাঁধে প্রবেশ করে। পরবর্তী বেশ কয়েকদিন তিনি অচৈতন্য ছিলেন ও তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর অবস্থার উন্নতি হলে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য বার্মিংহ্যাম শহরের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

ডয়েশ্‌ ওয়েল ২০১৩ খ্রীস্টাব্দের জানুয়ারী মাসে তাঁকে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত কিশোরী বলে মনে করে। জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষাকার্যক্রমের বিশেষ দূত গর্ডন ব্রাউন ইউসুফজাইয়ের নামে জাতিসংঘের একটি আবেদনে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের শেষে বিশ্বের সকল শিশুকে বিদ্যালয়মুখী করার দাবি করেন; যা পাকিস্তানের প্রথম শিক্ষার অধিকার বিলের আনুষ্ঠানিক সমর্থনের পক্ষে সহায়ক হয়। ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ খ্রীস্টাব্দে টাইম পত্রিকা ইউসুফজাইকে বিশ্বের ১০০জন সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের একজন বলে গণ্য করেন। তিনি ২০১১ খ্রীস্টাব্দে পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় যুব শান্তি পুরস্কার এবং ২০১৩ খ্রীস্টাব্দে শাখারভ পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৩ খ্রীস্টাব্দের জুলাই মাসে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার পক্ষে সওয়াল করেন ও অক্টোবর মাসে কানাডা সরকার তাঁকে সাম্মানিক কানাডীয় নাগরিকত্ব প্রদান করার কথা ঘোষণা করে।

২০১৪ খ্রীস্টাব্দের ফেব্রুয়ারী মাসে তাঁকে সুইডেনের বিশ্ব শিশু পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। ২০১৪ খ্রীস্টাব্দের মে মাসে হ্যালিফ্যাক্সে ইউনিভার্সিটি অব কিং’স কলেজ তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট প্রদান করে। এই বছরের শেষের দিকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য কৈলাশ সত্যার্থীর সঙ্গে যুগ্মভাবে মালালার নাম ঘোষণা করা হয়। মাত্র সতেরো বছর বয়সে তিনি ছিলেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব। ২০১৫ খ্রীস্টাব্দের একাডেমি পুরস্কারের জন্য বাছাইকৃত তথ্যচিত্র হি নেমড মি মালালা তাঁর জীবন নিয়ে তৈরি হয়।

মালালা ইউসুফজাই ১৯৯৭ খ্রীস্টাব্দের ১২ই জুলাই উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সোয়াত জেলায় পাশতুন জনজাতির অন্তর্ভুক্ত এক সুন্নি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দক্ষিণ আফগানিস্তানের বিখ্যাত মহিলা পাশতু কবি ও যোদ্ধা মালালাই-এ-ম্যায়ওয়ান্দের নামানুসারে তাঁর নামকরণ করা হয় মালালা, যার আক্ষরিক অর্থ “দুঃখে অভিভূত”। ইউসুফজাই পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার অধিবাসী পাশতুন জাতিগোষ্ঠী বিশেষ। মিঙ্গোরা নামক স্থানে মালালা তাঁর পিতা জিয়াউদ্দিন, মাতা তোর পেকাই ও দুই কনিষ্ঠ ভ্রাতার সঙ্গে বসবাস করতেন।

জিয়াউদ্দিন একজন শিক্ষা-আন্দোলনকর্মী ও কবি যিনি খুশহাল পাবলিক স্কুল নামক বেশ কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং ইংরেজি, উর্দু ও পাশতু ভাষাতে দক্ষ মালালা তাঁর নিকট হতেই শিক্ষালাভ করেন। একটি সাক্ষাতকারে তিনি জানান যে তাঁর চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও তাঁর পিতা তাঁকে রাজনৈতিক জীবন বেছে নিতে উৎসাহত করেন। রাতে সকলে ঘুমিয়ে পড়ার পর জিয়াউদ্দিন মেয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা করতেন।

মালালা ২০০৮ খ্রীস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে থেকে শিক্ষার অধিকার নিয়ে সরব হতে শুরু করেন, যখন তাঁর পিতা তাঁকে পেশাওয়ার প্রেস ক্লাবে একতি বক্তব্য রাখতে নিয়ে যান, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও টেলিভেশন চ্যানেলে উপস্থাপিত হয়। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে মালালা ইনস্টিটিউট ফর ওয়ার অ্যান্ড পিস রিপোর্টিং প্রতিষ্ঠানের মুক্তচিন্তা পাকিস্তান যুব প্রকল্পে একজন শিক্ষানবিশ ও পরে একজন প্রশিক্ষক হিসেবে কিছুকাল কাজ করেন, যা সাংবাদিকতা, তর্ক-বিতর্ক ও আলোচনার মাধ্যম তরুণ সমাজের মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ের ওপর গঠনমূলক আলোচনা করতে উৎসাহিত করত।

মে মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্বিতীয় সোয়াত যুদ্ধ চলাকালীন মিঙ্গোরা প্রবেশ করে; এই সময় শহর খালি করে দেওয়া হয়, যার ফলে ইউসুফজাই পরিবার গৃহচ্যুত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জিয়াউদ্দিন পেশাওয়ার চলে যান ও মালালা তাঁর আত্মীয়দের নিকট গ্রামে চলে যান। এই সময় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে উগ্রপন্থীদের সমালোচনা করার জন্য জিয়াউদ্দিনকে একজন তালিবান রেডিও মারফত প্রাণনাশের হুমকি দেন। পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত মালালা এই সময় চিকিৎসক না-হয়ে একজন রাজনীতিবিদ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জুলাই মাসে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তালিবানদের শহর থেকে হঠিয়ে দিতে সক্ষম হলে প্রধানমন্ত্রী সোয়াত উপত্যকায় ফিরে যাওয়া নিরাপদ বলে ঘোষণা করেন ও ২৪শে জুলাই ইউসুফজাই পরিবার আবার একত্রিত হন। এই সময় তাঁরা তৃণমূল পর্যায়ের আন্দোলনকর্মীদের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিশেষ মুখপাত্র রিচার্ড হলব্রুকের সঙ্গে সাক্ষাত করেন, যেখানে মালালা তাঁকে এই পরিস্থিতিতে সাহায্য করার অনুরোধ করেন।

বিবিসির জন্য লেখা শেষ হওয়ার পর নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার সাংবাদিক অ্যাডাম এলিক একটি তথ্যচিত্র বানানোর উদ্দেশ্যে মালালা ও তাঁর পিতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই তথ্যচিত্র বানানো হয়ে গেলে মালালা জাতীয় পাশতু সংবাদমাধ্যম এভিটি খাইবার ও উর্দু সংবাদমাধ্যম ডেইল আজ এবং কানাডার টরন্টো স্টারে সাক্ষাতকার দেন। ২০০৯ খ্রীস্টাব্দের ১৯শে অাগস্ট তিনি ক্যাপিটাল টক অনুষ্ঠানে দ্বিতীয়বার অংশ নেন। এই বছর ডিসেম্বর মাসে বিবিসি ব্লগের লেখিকার আসল পরিচয় হিসেবে তাঁর নাম জানা যায়। এই সময় তিনি নারীশিক্ষার জন্য সর্বসমক্ষে টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে শুরু করে দেন।

২০১১ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দোলনকর্মী ডেসমন্ড টুটু আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারের জন্য মালালার নাম মনোনীত করেন। তিনি প্রথম পাকিস্তানী হিসেবে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার মিশেল মাইক্রফট এই পুরস্কার লাভ করেন। দুই মাস পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি তাঁকে প্রথম জাতীয় যুব শান্তি পুরস্কার প্রদান করেন। মালালা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না-হলেও শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে তাঁর দ্বারা কোনো রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে এই সময় গিলানি আশা প্রকাশ করেন। মালালার অনুরোধে গিলানি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সোয়াত ডিগ্রি কলেজ ফর উইমেন প্রতিষ্ঠানে একটি তথ্যপ্রযুক্তি কার্যক্রম চালু করার নির্দেশ দেন। একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মালালার নামে নামাঙ্কিত করা হয়।n ২০১২ খ্রীস্টাব্দে তিনি মালালা এডুকেশ ফাউন্ডেশন তৈরি করে দরিদ্র মেয়েদের বিদ্যালয়মুখি করার প্রচেষ্টা শুরু করেন।

মালালা ধীরে ধীরে বিখ্যাত হতে শুরু হলে তাঁর বিপদ বাড়তে শুরু করে। সংবাদপত্রে প্রকাশ করে, বাড়িতে ও ফেসবুকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া শুরু হয়। ২০১২ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মকালে তালিবান নেতারা তাঁকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১২ খ্রীস্টাব্দের ৯ই অক্টোবর, মালালা পরীক্ষা দিয়ে বাসে বাড়ি ফেরার সময়, একজন তালিবান বন্দুকধারী সেই বাসে উঠে পড়েন। এই বন্দুকধারী বাসে উঠে মালালা কে তা জানতে চেয়ে বাসের সকল যাত্রীকে মেরে ফেলার হুমকি দেন এবং অবশেষে মালালাকে চিহ্নিত করে তিনটি গুলি ছোড়ে, যার মধ্যে একটি তাঁর কপালের বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে মুখমণ্ডল ও গলা দিয়ে কাঁধে পৌঁছয়। এই ঘটনায় কায়নাত রিয়াজ ও শাজিয়া রমজান নামক আরো দুই মেয়ে আহত হন।

মালালাকে পেশাওয়ার শহরের একটি সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাঁর ওপর অস্ত্রোপচার করেন। পাঁচ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা তাঁর কাঁধ থেকে গুলিটিকে বের করে আনতে সক্ষম হন। গুলির প্রভাবে মস্তিষ্কের কিছুটা অংশ ফুলে উঠেছিল বলে পরদিন পুনরায় ডিকম্প্রেসিভ ক্রেনিয়েক্টমি নামক অস্ত্রোপচার করে তাঁরা মালালার খুলির কিছুটা অংশ অপসারণ করতে বাধ্য হন। ১১ই অক্টোবর, পাকিস্তানি ও ব্রিটিশ চিকিৎসকের একটি দল তাঁকে রাওয়ালপিণ্ডি শহরের আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওলজি প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গৃহমন্ত্রী রেহমান মালিক আশ্বাস দেন যে মালালাকে সরকারি খরচে চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে জার্মানিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে। ১৩ই অক্টোবর মালালার ঘুমের ওষুধের মাত্রা কমানো হয় এবং এই দিন তিনি তাঁর হাত পা নাড়াতে সক্ষম হন।

সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মালালার চিকিৎসার জন্য প্রস্তাব আসতে থাকে। ১৫ই অক্টোবর, চিকিৎসক ও পরিবারের সম্মতিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্পূর্ণ সরকারি খরচে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহ্যাম শহরের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০১২ খ্রীস্টাব্দের ১৭ই অক্টোবর চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে মালালা চেতনা ফিরে পান এবং পরবর্তী কয়েকদিন সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই চললেও তাঁর অবস্থা ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং ৮ই নভেম্বর তিনি বিছানায় উঠে বসতে সক্ষম হন। ২০১৩ খ্রীস্টাব্দের ৩রা জানুয়ারী তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস অঞ্চলে তাঁর পরিবারের সাময়িক বাসস্থানে তাঁর পরবর্তী চিকিৎসা চলে। ২রা ফেব্রুয়ারী, তাঁর খুলির অংশ পুনর্গঠনের জন্য এবং ককলিয়ার ইমপ্লান্ট বসিয়ে শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়।

২০১৪ খ্রীস্টাব্দের ১০ই অক্টোবর, শিশুদের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে ও শিক্ষার অধিকারের লড়াইয়ের জন্য মালালা ইউসুফজাই ও ভারতীয় সমাজকর্মী কৈলাশ সত্যার্থীকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়। মাত্র ১৭ বছরে মালালা এই পুরস্কারলাভের সময় বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ীর সম্মান লাভ করেন। ১৯৭৯ খ্রীস্টাব্দে পদার্থবিজ্ঞানী আব্দুস সালামের পর তিনি দ্বিতীয় পাকিস্তানী নাগরিক যিনি এই পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর নোবেল জয় সম্বন্ধে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

২০১৪ ইগুয়ালা গণ অপহরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মেক্সিকোর একজন নাগরিক এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাধা দিলেও নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যান। মালালা পরে এই ব্যক্তির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।
সৌজন্যে – উইকিপিডিয়া

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট