প্লাস্টিকের বিপদ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হল ইকোনমিক রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল ও সহায় এর সহযোগিতায় ধারাবাহিক কর্মসূচির সূচনা হলো। দক্ষিণ শহরতলির বোড়াল ঋষি রাজনারায়ণ বসু স্মৃতি মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই উপলক্ষে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। জলে ও স্থলে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দ্বারা বিপন্ন প্রাণীদের মডেল তৈরি করে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা হয় প্লাস্টিকের অপব্যবহার কতটা ক্ষতিকারক। আয়োজক সংস্থার পক্ষে মধু বসু বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পর্কে আপত্তির বিষয় নয়, কিন্তু ব্যবহারের পর তা যত্রতত্র ফেলে দেওয়াটা বিপদজনক। সকলকে একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে সচেতন সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
প্লাস্টিক দূষণ পরিবেশের উপর অবিশ্বাস্য রকমের প্রভাববিস্তার করছে, কারণ এর ব্যবহারের ক্ষেত্র বিশাল আর এর স্থায়িত্ব দীর্ঘস্থায়ী বলে। প্লাস্টিকের নেতিবাচক প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বন্যজীবন ও তাদের আস্তানা এবং মানুষ, তার সাথে মাটি, সমুদ্র ও জল জীবন।বন্যপ্রানী এবং সমুদ্র প্রানী প্লাস্টিককে খাদ্য ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছে, তাদের জীবন ধ্বংস হচ্ছে। এমনকি প্লাস্টিকের টক্সিন কেমিক্যাল থেকে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে, তার সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পরিবেশ।
সমাজে পিছিয়ে পরা ২ বছর থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবন শৈলী ও সামাজিক দায়বদ্ধতা ওপর কাজ করে চলেছে এই কর্মসূচি, যাতে আগামী দিনে তরুণ প্রজন্মকে স্বাবলম্বী রুপে গড়ে তোলা যায়।
“চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল ও সহায়”-র আর্থিক সহায়তায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বোড়াল গ্ৰামে ইকনমিক রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির ১৯৯১ সাল থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চাইল্ড স্পনসরশিপ পরিচালনা করে এলাকায় একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা কথা মাথায় রেখে সাধারণের মধ্যে প্লাস্টিকের অপব্যবহার এর ওপর ২২ জুন এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসূচীটির সূচনা হয়।
বোড়াল ঋষি রাজনারায়ন বসু স্মৃতি মন্দির ট্রাস্টির মাঠে। আনুমানিক দেরহাজারের বেশি মানুষের উপস্থিতি চোখে পরে আজকের এই অনুষ্ঠানে।আর এই কাজে তারা স্থানিয় সরকারি বোড়াল হাই স্কুল ও ঝিলমিল বেসরকারি স্কুল,রাজপুর সোনারপুর পৌরসভা,বনহুগলি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতকে সক্রিয় ভাবে যুক্ত করে নেয়।
আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার পৌরমাতা দীপা ঘোঘ, বনহুগলি ২নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান উদয় মন্ডল বোড়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহাশয় সুজিত ঘোঘ মহাশয় ও সহায় থেকে আগত প্রতিনিধিবর্গ, ইকনমিক রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মাননীয় মধু বসু মহাশয় বলেন প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি নেই, কিন্তুু ব্যবহারের পর তা যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হচ্ছে আপত্তি সেই খানেই। প্লাস্টিকের বর্জ্য আজ আমাদের পরিবেশকে এক ভয়াবহ জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।সকলে একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে সচেতনতার মাধ্যমে মানুষকে বোঝাতে হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে কর্মসূচি প্রসঙ্গে বদলাও যুবদলের সদস্য কৃষ্ন মন্ডল বলেন আগামী দিনে আমরা এই কর্মসূচি স্থানিয় সরকারি স্কুল,এলাকার ক্লাব, ছোট ছোট দলে পাড়া স্তরে ছরিয়ে দিতে চাই। এই কাজে আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানিয় প্রশাসন।তা ছারাও আমরা একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যসামগ্রীকে ফেলে না দিয়ে তা পুনরায় ব্যবহার যোগ্য রুপে গড়ে তোলার দিকে জোর দিতে চাই।
আজকের এই অনুষ্ঠানে “বদলাও ও কান্ডারি” যুব বন্ধুদের হাতে তৈরী,ফেলে দেওয়া ঠাণ্ডা পানিয়র বোতল দিয়ে তৈরী করেছ ফুলের টব, দাঁতের ব্রাশ রাখার জায়গা,ঘর সাজাবার সামগ্রী ইত্যাদি।এ ছাড়াও পলি ব্যাগের বদলে হাতে তৈরী কাগজের ও জুটের ব্যাগ প্রস্তুত করে ও আমন্ত্রিত অতিথিদের হাতে তুলে দেয়। জলে ও স্থলে প্লাস্টিক দ্বারা বিপন্ন প্রানিদের মডেল তৈরী করে সাধারণকে বোঝাবার চেষ্ঠা করে প্লাস্টিকের অপব্যবহার ফলাফল।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুন্দর ভাবে পরিচালনার জন্য “বদলাও ও কান্ডারি” যুবদলের সদস্যগের ভূমিকা সত্যি প্রশংসনীয়।