বাংলা এক্সপ্রেস, কলকাতা: 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে দেশজুড়ে চরম বিপর্যয় ঘটেছে বামেদের। ব্যতিক্রম ঘটেনি পশ্চিমবঙ্গেও। লোকসভায় পাঠাতে পারেনি এ একজন সাংসদ। রাজ্যপাট চলে যাওয়ার পর 2014-র লোকসভা নির্বাচনেও এ রাজ্য থেকে দুটি আসনে জয়ী হয়েছিলেন বামফ্রন্ট প্রার্থীরা। কিন্তু 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে সেই জেতা রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ দুটি আসনেই খোয়াতে হয়েছে বামেদের। শুধু আসন খোয়ানোয় নয়, এক ধাক্কায় বামেদের ভোট কমে তলানিতে এসে ঠেকেছে। অন্যদিকে 42 টি আসনের মধ্যে 18 টি আসনে জয়লাভ করে শাসক তৃণমূলের ঘুম কেড়ে নিয়েছে বিজেপি। বিজেপির ভোট পার্সেন্টেজও বেড়েছে কয়েকগুণ। তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল বামেদের এই চরম বিপর্যয়ের পরও দখল হয়ে যাওয়া প্রায় 200 -র মতো পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে তারা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিজেপির সৌজন্যেই হারানো পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করে অনেক জায়গাতেই লাল পতাকা উড়িয়েছে স্থানীয় বাম নেতৃত্ব। দলের নিচুতলার কর্মীদের এহেন বাহাদুরীতে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে আলিমুদ্দিনের ম্যানেজারদের।
দলের সিংহভাগ ভোট গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়ায় আতঙ্ক বোধ করছেন তারা। হারানো ভোট আদৌ কি পুনরুদ্ধার সম্ভব তা নিয়ে সন্দিহান বাম নেতৃত্ব। ভোটের ফলাফল নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গিয়েছে সিপিএম নেতৃত্বের। দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আসন ধরে ধরে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা ওয়ারী ভোটের ফলাফল নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। সূত্রের খবর, নেতৃত্তের পর্যালোচনায় এমন তথ্যও উঠে এসেছে, নিচু তলার বাম কর্মীরা স্বতপ্রণোদিত ভাবেই বিজেপিকে সমর্থন করেননি, রাজ্যের বহু জায়গাতেই পরিকল্পনামাফিক স্থানীয় নেতৃত্বের মদতে বিজেপিকে সমর্থন করা হয়েছে। দলকে ডুবিয়েছেন সেইসব ‘ঘরের শত্রু বিভীষণদের’ চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার পথেই হাঁটবে আলিমুদ্দিন। আগামী 4 জুন রাজ্য কমিটির বৈঠক বসতে চলেছে। ওই বৈঠক থেকেই এমন কঠোর সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে চলেছে আলিমুদ্দিন। সিপিএম নেতাদের এই নড়েচড়ে বসার পর দলের হারিয়ে যাওয়া ভোটব্যাঙ্ক ফিরিয়ে আনা আদৌ সম্ভব কি না সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।