কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন এবং মঠ কামারপকুর নামক গ্রামে অবস্থিত। কামারপুকুর গ্রামটি হুগলী জেলার আরামবাগ সাব ডিভিশনের গোঘাটের ২ নং ব্লকে অবস্থিত। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জণ্মস্থান হিসাবে বিখ্যাত।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের আর্বিভাব এবং তাঁর শিষ্য ও ভক্তদের এই পুণ্য স্থানে যাতায়াতের জন্য এই স্থানটি তীর্থস্থান হয়ে উঠেছে। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ তথা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ভক্ত বৃন্দ আসেন এই স্থান পরিদর্শনের জন্য এবং নিজেদের আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটান।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের বাস-ঘর
একসময়ে কামারপুকুরের প্রাঙ্গনের পশ্চিম দিকের দক্ষিণ মুখী ঘরে ঠাকুর বাস করতেন, বর্তমানে সেটি মন্দির প্রাঙ্গনের একটি অংশ। একদা ঠাকুর মা সারদা কে বলেছিলেন “আমার মৃত্যুর পরে, তুমি কামপারপুরে থাকবে, সবুজ শাক সব্জী চাষ করবে, সহজ ভাবে জীবন যাপন করবে এবং ঈশ্বরের নাম নিয়ে তোমার দিন কাটাবে। ভক্তরা তোমার জন্য যে ব্যবস্থাই করুক না কেন তা ভালবেসেই করবে, কামারপুকুর তোমার নিজের বাড়ি তাকে ধংস্ব হতে দিও না”। তাই অনেক আর্থিক অনটন সত্ত্বেও ঠাকুরের মৃত্যুর পর মা কামারপুকুরের বাড়িতেই তাঁর জীবন অতিবাহিত করেন।
রঘুবীরের মন্দির
কামারপুকুরের রঘুবীরের ঘরটি ছিল পূর্বমুখী। খড়ের ছাউনি আঁটা ঘরটির মেঝে এবং দেওয়াল ছিল মাটির। বর্তমানে রঘুবীরের মন্দিরটি ঐ একই স্থানে, একই পরিমাণ যায়গা নিয়ে তৈরী হয়েছে। এই মন্দিরের রঘুবীরের শালগ্রাম শিলা, মা শীতলার মাটির ঘট, রামেশ্বর শিবলিঙ্গ, নারায়ণ শালগ্রাম শিলা এবং একটি গোপালের চিত্র প্রতিদিন পূজিত হয়।
বৈঠকখানা ও আম গাছ
বৈঠকখানাটি ছিল মানুষজনের সাথে আলোচনা করার যায়গা। বৈঠকখানায় পুরানো কাঠের দরজাটি আজও যথাস্থানে আছে। বৈঠকখানার পূর্বে রয়েছে ঠাকুরের হাতে লাগানো আম গাছ, যা আজও ফলদায়ী।
ঠাকুরের জণ্মস্থান
১৮৩৬ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী, বাংলার ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে সূর্যোদয়ের ১২ মিনিট পূর্বে ঠাকুরের আর্বিভাব ঘটে। তাঁর জণ্মের একটু পরেই তাঁর ধাত্রী মাতা ধনী তাঁকে খুঁজে পায়নি, খুঁজতে গিয়ে দেখে শিশুটি পিছলে গিয়ে উনুনের মধ্যে ছাই মাখা অবস্থায় পড়ে আছে কিন্তু কোন কান্না নেই। তাঁর পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং মাতা চন্দ্রা দেবী।
যোগী এর শিব মন্দির
ঠাকুরের ঘরের উত্তর দিকে যোগীর শিব মন্দির। একবার এই মন্দিরের সামনে ঠাকুরের মা ধাত্রী মা ধনী ঠাকুরানীর সাথে কথা বলছিলেন, এমন সময় হঠাৎ শিবের মূর্তি থেকে একটি আলো আর্বিভূত হয় সেই আলোকে গোটা মন্দিরটি আলোকিত হয়ে ওঠে এবং আলোটি দ্রুত তাঁর শরীরে প্রবেশ করে। আশ্চর্যে, ভয়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন, যখন তাঁর জ্ঞান আসে তখন তিনি অনুভব করেন সেই আলোটি তাঁর গর্ভে তখনও রয়েছে এবং তিনি গর্ভ ধারণ করেছেন। ফলস্বরূপ গদাধরের জণ্ম।
হালদার পুকুর
শিব মন্দিরের উল্টো দিকে বৃহৎ জলাশয়টির নাম হালদার পুকুর। এই পুকুরে গদাধরের ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছ। গদাধর ছেলেবেলায় তাঁর বন্ধুদের নিয়ে এই পুকুরে সাঁতার কাটতে আসতেন।
লাহাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়
লাহাদের দূর্গা মন্দিরের সামনে যে বিশাল নাটমন্দির সেখানেই স্কুল হত। গদাধর পাঁচ বছর বয়সে সেখানে ভর্তি হয়। সে খুব তাড়াতাড়ি লিখতে এবং পড়তে শিখে গিয়েছিল কিন্তু লেখাপড়ায় তার আগ্রহ কমে গিয়েছিল, অন্য এক ভাবের বিকাশ ঘটছিল তার মধ্যে। কোন সময়ে বিশেষ দৃশ্য দেখে অথবা বিশেষ দেবতার চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ত। তার এই অবস্থাকে তার মা অসুখ হয়েছে বলে ভাবতেন এবং তাকে অনেকদিন পর্যন্ত স্কুলে পাঠাতেন না। স্কুলের লেখাপড়া অপেক্ষা গ্রামের নাটকে অংশ গ্রহণ করতে পুরাণ পাঠ করতে বেশী ভালবাসত। পড়াশোনায় গদাধর তেমন ভালো ছিল না কিন্তু তার হাতের লেখা খুব ভালো ছিল।
গোপেশ্বর শিবের মন্দির
রামকৃষ্ণের ঘরের পূর্ব দিকে গোপেশ্বর শিবের মন্দির। সুখলাল গোস্বামী অথবা তাঁর ঠাকুরদা গোপীলাল গোস্বামী এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং এতে একটি বিরাট শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন। একবার রামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ভাবের ঘোরে মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েছিলেন, তাঁর মা খবর পেলেন গদাধর পাগল হয়ে গেছেন, তিনি এই গোপেশ্বরের মন্দিরে ঈশ্বরের কাছে কঠিন ব্রত করেন ছেলেকে সুস্থ করে দেওয়ার জন্য।তখন তিনি একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পান যে তাকে একই ভাবে মুকুন্দপুরের শিবের কাছে প্রার্থনা করার নির্দেশ দিচ্ছে, তাঁর এই কঠিন ব্রতর পর তিনি আশ্বাসিত হয়েছিলেন তাঁর পুত্র সুস্থ হয়ে উঠবে।
ধনী কামারানীর জণ্মস্থান এবং মন্দির
রামকৃষ্ণের ঘরের দক্ষিণ পূর্ব দিকে ধনী কামারানীর ঘর। সেই জায়গাতে এখন তাঁর ভক্তরা মন্দির বানিয়েছেন। সেখানে ধনীর কোলে গদাধর এইরূপ তৈলচিত্র করা আছে। ধনী ছিল কামার ঘরের মেয়ে, গদাধরের ধাত্রী মাতা। একবার ধনীকে গদাধর কথা দিয়েছিলেন যে গদাধরের উপনয়নের সময় গদাধর যেন ধনীর কাছ থেকে প্রথম ভিক্ষা গ্রহণ করেন। কিন্তু অব্রাহ্মণেকে ভিক্ষা দান চট্টোপাধ্যায় পরিবারের প্রথা বিরুদ্ধ ছিল। গদাধরের দাদা রামকুমার এর বিরোধিতা করেছিলেন, কিন্তু গদাধর এই ব্যাপারে তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। অবশেষে গদাধরের পিতার বন্ধু ধর্মদাস লাহা রামকুমারকে বোঝালেন, এতদিন তাদের পরিবারে এরকম হয়নি ঠিকই কিন্তু অনেক ভাল ব্রাহ্মণ পরিবারে অব্রাহ্মণের কাছ থেকে ভিক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে তাই এতে কোন দোষ নেই। অন্যদিকে গদাধরও খুশী হয়েছিল। এই ভাবে সমস্যার সমাধান হয়েছিল, গদাধর তার ধনীকে ভালোবেসে দেওয়া কথা রেখেছিল।
মুকুন্দপুর শিব মন্দির
ঠাকুরের জণ্মস্থানের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে এই মন্দিরটির অধিষ্ঠান। গোপেশ্বরের মন্দিরের আদেশ পেয়ে গদাধরের মা এই মন্দিরে অন্ন, জল ত্যাগ করে শিবের কাছে প্রার্থনা করেন তার ছেলেকে পাগলামির হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। তখন তিনি এই দৈব বাণী শুনতে পান – “ তুমি ভয় পেও না তোমার ছেলে পাগল নয়, সে ঈশ্বরের নেশায় উন্মত্ত তাই সে এরূপ করছে। সেই থেকে অনেক মানুষ সেই মন্দিরে যান তাদের মনস্কামনা পূর্ন করতে এবং ঈশ্বরে
কিভাবে পৌঁছাবেন পূণ্যস্থান কামারপুকুরে (পথনির্দেশ) :
ট্রেনে করে কামারপুকুর
কামারপুকুরের নিকটতম রেল স্টেশনের নাম গোঘাট। হাওড়া থেকে সরাসরি গোঘাট লোকালে করে গোঘাট স্টেশনে নেমে বিভিন্ন প্রকার গাড়ী (যেন টোটো,ভ্যান প্রভৃতি) পাওয়া যায় সরাসরি কামারপুকুর মঠে পৌঁছে দেবে। গোঘাট পর্যন্ত ট্রেনের সংখ্যা কম তাই আপনারা হাওড়া থেকে আরামবাগ লোকালে করে আরামবাগ স্টেশনে নেমে সেখান থেকে কামারপুকুরের অনেক বাস পাবেন।
আরও একটু দূরবর্তী স্টেশনের নাম তারকেশ্বর কিন্তু এখানে ট্রেনের সংখ্যা আরামবাগ বা গোঘাট স্টেশনের থেকে অনেক বেশী। হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকালে তারকেশ্বর স্টেশনে নেমে পাশেই তারকেশ্বর বাস স্ট্যাণ্ড সাখান থেকে পেয়ে যাবেন কামারপুকুরের বাস।
বাসে করে কামারপুকুর
কলকাতার ধর্মতলা বাসস্ট্যাণ্ড থেকে বিভিন্ন প্রকার বেসরকারি এবং সরকারি (সি.এস.টি.সি / এস.বি.এস.টি.সি) বাস আছে কামারপুকুর যাওয়ার জন্য।
তারকেশ্বর থেকে বাসে আরামবাগ হয়ে কামারপুকুর। আরামবাগ থেকে বাস, বিভিন্ন প্রকার প্রাইভেট গাড়ী পাওয়া যায় কামারপুকুর যাওয়ার জন্য।
বিষ্ণুপুর থেকে কামারপুকুর বাস পাওয়া যায়।
বর্ধমান থেকে বাসে করে আরামবাগ, আরামবাগ থেকে বাসে কামারপুকুর। দূর্গাপুর থেকে বাসে বাঁকুড়া, বাঁকুড়া থেকে বাসে কামারপুকুর।
মেদিনীপুর থেকে বাসে রামজিবনপুর/খিরপাই রোড/ইন্দাস রোড/কতুলপুর সেখান থেকে বাসে কামারপুকুর।
কলকাতা থেকে কামারপুকুরের দূরত্ব ১০৫ কি.মি। প্রাইভেট গাড়ীতে করে কামারপুকুর যেতে গেলে ৩-৩.৩০ ঘণ্টা সময় লাগবে।
₹299.00 (as of বৃহস্পতিবার,২৬/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹499.00 (as of বৃহস্পতিবার,২৬/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹250.00 (as of বৃহস্পতিবার,২৬/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹369.00 (as of বৃহস্পতিবার,২৬/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹14,999.00 (as of বৃহস্পতিবার,২৬/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, সৌদি আরব সহ বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ পাকিস্তানের অন্তত ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন…
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ৭১ হাজারেরও বেশি প্রাপকের হাতে চাকরীর নিয়োগ পত্র…
ডিসেম্বর মাসে ভারতীয় পুঁজিবাজার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের (এফপিআই) কাছ থেকে ব্যাপক লগ্নি লাভ করেছে। পুঁজিবাজারে জমা…
কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে গতকাল আইএসএল ফুটবলে কেরালা ব্লাস্টার্স এক দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ৩-০ গোলে মহামেডান…
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর আজ থেকে হয়ে উঠেছে ঐতিহ্যের এক নতুন উজ্জ্বল মঞ্চ। সূচনা হয়েছে ৩৭তম বিষ্ণুপুর…
প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী ও গুরু পৌষালী মুখোপাধ্যায় প্রয়াত। শনিবার কলকাতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস…