বিকাশ ঘোষ: কলকাতা : সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে চরম ভরাডুবি ঘটেছে বামেদের। বামফ্রন্টের ভোট 26 শতাংশ থেকে এক ধাক্কায় সাড়ে সাত শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে বিজেপির ভোট 11 শতাংশ থেকে এক ধাক্কায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে 40 শতাংশে। বামেদের হারানো ভোটেই রাজ্যজুড়ে পদ্মের শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের। বামেদের ভোট বিজেপির ঝুলিতে যাওয়াতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাম-বাম তত্ত্বে সীলমোহর দিয়েছেন। কেন বামেদের ভোট ব্যাঙ্কে এত বড় ধস তা খতিয়ে দেখতে শনিবার আলিমুদ্দিনে বসে ছিল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক। রাজ্যের সামগ্রিক ফলাফল নিয়ে প্রাথমিক ময়না তদন্ত করেন সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যরা।
আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির মধ্যে মেরুকরণের রাজনীতি প্রভাব ফেলেছে বাম কর্মীদের ওপরেও। এমনকি সিপিএমের কর্মী সমর্থক রা অনেক জায়গাতেই পরিকল্পিতভাবে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বলেও স্বীকার করে নেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর অনেক সদস্যই। বামেদের ভোট কেন এত কমলো তার কারণ ব্যাখ্যা করে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করেছে। যেসব এলাকায় নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার পথে হেঁটে ছিল তাদের চিহ্নিতকরন করা হবে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। এ ধরনের নেতাকর্মীদের দল বরদাস্ত করবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পথেই হাঁটছে আলিমুদ্দিন।
বাম ভোটের এই বিপর্যয় নিয়ে প্রতিটি জেলা কমিটির কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আগামী চৌঠা জুন সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকের আগেই জেলা কমিটি গুলিকে তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য কমিটির বৈঠকে জেলা কমিটির পাঠানো রিপোর্ট নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হওয়ার কথা। আলিমুদ্দিনের শীর্ষকর্তাদের আশঙ্কা, হারানো ভোট পুনরুদ্ধার করতে না পারলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের ময়দানে নামাই কঠিন হয়ে পড়বে বামেদের পক্ষে। রামের দিকে চলে যাওয়া বাম ভোট কোন জাদুতে সিপিএম নিজেদের ঝুলিতে ফিরিয়ে আনে সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।