প্রার্থীর শিক্ষা না নির্বাচকের? একটি বিশ্লেষণ

বাংলা এক্সপ্রেস ডেস্ক: শিক্ষা না নির্বাচকের একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। বিশ্লেষণ করেছেন এক প্রধান শিক্ষক। হুবহু বাংলা এক্সপ্রেসে তা তুলে ধরা হল।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আইন সভায় শিক্ষিত মানুষের কতটা প্রয়োজন, ভোটারদের মধ্যে সে শিক্ষার প্রসার ও অনুশীলন হওয়াটা জরুরি। এ কাজ একান্তভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর। যাদের ভালোর জন্য নিরন্তর এত লড়াই, আন্দোলন, তাদেরকে কমপক্ষে এ শিক্ষা ও চর্চায় সমৃদ্ধ করা যে লড়াই আন্দোলন পন্থা মাত্র। কিন্তু তার চরম ও পরম প্রাপ্তিযোগ ঘটে পলিসি গৃহীত হলে। তাদের মধ্যে ন্যূনতম এ বোধেরও জন্ম দিতে হবে। পলিসি মেকিং এর যে প্রসেস রয়েছে সেখানে অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, বাহুবলী, অর্থশালী, বিনোদিনী, মায়াবিনীদের কোনোই ভূমিকা নেই। সেখানে প্রয়োজন তেমন মানুষের, যিনি মানুষের চাওয়ার আগেই মানুষের অব্যক্ত চাওয়াকে ভাষা দিতে পারবেন। তাদের ভালোর জন্য বজ্রনিনাদে পরিকল্পনা গ্রহণ করাতে বাধ্য করতে পারবেন। এলাকার উন্নয়নে শত প্রতিকূলতা সত্বেও যিনি নিবেদিত প্রাণ হবেন।

মজার বিষয় হল, নিজের ভালো কিসে, এ বোধই জন্মায় নি। কিংবা এ বোধ পোক্ত হয়নি যাদের, তাদের হাতেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে পলিসি মেকারদের বেছে নেওয়ার। এমনই সব নির্বাচকদের নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর কাজ কারবার। যে রাজনৈতিক দর্শন ও মতাদর্শেরই হোক না কেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই প্রথম ও প্রধান কর্মসূচি হওয়া উচিত পলিসি মেকিং প্রসেডিওর সম্পর্কে জনগনকে শিক্ষিত করে তোলা। মনে রাখতে হবে এ শিক্ষা স্কুল,কলেজ, ইউনিভার্সিটির পুঁথিগত শিক্ষার বাইরের শিক্ষা। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো হল স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি। জনগণ হল ছাত্র, আর শিক্ষাঙ্গন হল মাঠ ময়দান সভা সমিতি।

লক্ষনীয়, জনগন, ভোটার বা নির্বাচকগণ দুই শ্রেণীর। অ্যক্টিভ, ইন্যাক্টিভ। এই দুইকে যোগ করেই প্রত্যেক রাজনৈতিক দল হিসেব কষে থাকে। আন্দোলন পর্যন্ত মাতিয়ে রেখে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই এদের অ্যসেট মনে করতে থাকে। লড়াই আন্দোলনের পরবর্তী ধাপের শিক্ষায় এদের উন্নীত না করে আপন অ্যসেট ভেবে বরং একটি অংশকে ছাপ্পা, দখলদারি, মাস্তানি, ত্রাস ইত্যাদি কুশিক্ষায় বিগড়ে দিতে থাকে। ফলে এই শ্রেণীর এমন সব অ্যসেটদের মধ্যে একপ্রকার বেপরোয়া মনোভাব দানা বেঁধে ওঠে, কেননা মাথায় ছাতা আছে। এক ছাতার তলায় চিরকাল থাকতে হবে এ দিব্যি তাদের কেউ দেয়নি। যখন যে ছাতা তাদের জন্য লাভদায়ক মনে হয় তারা তখন সেই ছাতার অ্যসেট। প্রত্যেক দলের কাছেই এদের এক বিশেষ ডিমান্ডও আছে। এই বহুরূপীরাই সর্বত্র বেশ পুজীত পোষিত হতে দেখা যায়।

স্বাভাবিকভাবে এমনতর নির্বাচকরাই বেছে দেয় আগামী পাঁচ বছরের পলিসি মেকারদের।।
শিক্ষিত বিজ্ঞ অভিজ্ঞ মানুষকে প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নিলে কি লাভ? অন্যথায় কি ক্ষতি? এ বোধের থেকেও যারা মেতে থাকাকেই প্রায়োরিটি দেয়, তাদের উপর ভরসা রেখে শিক্ষিত প্রার্থীর পরাজয়ে হাহুতাশ করে কোনো লাভ নেই। যেদিন নির্বাচকদের বোধ ও রাজনৈতিক শিক্ষা নিয়ে গর্ব করা যাবে, সেদিন শিক্ষিত প্রার্থীকে নিয়ে গর্ব করাটাও সার্থক হবে। অন্যথায় শিক্ষিত মার্জিত সমাজে প্রয়োজন মানুষগুলোর পরাজয় মুখ বুজে চোখের সামনে দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

গোলাম মইন উদ্দিন , প্রধান শিক্ষক
সাতুলিয়া ইসলামীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা

Saddam Hossain Midda

Share
Published by
Saddam Hossain Midda

Recent Posts

রবীন্দ্র সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা: শনিবার রাতে যান চলাচল বন্ধ থাকবে

কলকাতা, ১৬ নভেম্বর ২০২৪:শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি পোর্ট ট্রাস্টের উদ্যোগে আগামী শনিবার রাত থেকে রবীন্দ্র সেতু…

2 days ago

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব বিতরণের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে, তদন্তে সিট গঠন করল কলকাতা পুলিশ

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের ট্যাব বিতরণের টাকা দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। বহু ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা…

3 days ago

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল, বিজেপির বিক্ষোভে ধস্তাধস্তি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লক আজ উত্তাল আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে। বিজেপির ডাকে…

3 days ago

বিহারের জামুইতে ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জনজাতীয় গৌরব দিবসে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের জামুই জেলায় জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে…

3 days ago

২০শে নভেম্বর একদফায় নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান এখন তুঙ্গে

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় আগামী ২০শে নভেম্বর একদফায় নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান এখন তুঙ্গে। ঐ একই দিনে নান্দেথ…

4 days ago

পাহাড়ে সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ দার্জিলিং-এর চৌরাস্তা

পাহাড়ে সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ দার্জিলিং-এর চৌরাস্তায় ‘সরস মেলা’র উদ্বোধন করবেন ।আগামীকাল তিনি যাবেন…

4 days ago