বামের ভোট রামে যাওয়া প্রসঙ্গে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিশ্লেষণ


রবিবার,২৬/০৫/২০১৯
977

নিজস্ব প্রতিবেদক ---

বাংলা এক্সপ্রেস ডেস্ক: রামের ভোট বামে যাওয়া প্রসঙ্গে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিশ্লেষণ হুবহু তুলে ধরা হলো বাংলা এক্সপ্রেসে।

বামের ভোট রামে নয় কেন? ব্লক ও পঞ্চায়েত খুচরো নেতার দ্বারা জনগন প্রতিমূহুর্ত বঞ্চিত হচ্ছিল, এটা তারই বহিঃপ্রকাশ৷ উন্নয়ন খুচরো নেতার বাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে সাধারন জনগন বিকল্প খুঁজবেই৷ রেশন কার্ড, গীতাঞ্জলী, বেকার ভাতা, বার্ধক্যভাতা, ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা সংশোধন , কন্যাশ্রী, রুপশ্রী সর্বত্র কাটমানি নেওয়াটা খুচরো নেতাদের জাতীয় অধিকারে পরিণত হয়েছিল৷ অঞ্চল সভাপতি কিছুই করেনা অথচ চার চাকার গাড়ীতে তার নিত্য আনাগোনা৷ জনগন প্রতিবাদ করতে পারেনি, তার জবাব ইভিএমে দিয়েছে৷ লাল ঝান্ডা বহন করতে গিয়ে ভিটে ছাড়া, তার জবাব ইভিএমে ৷ পঞ্চায়েতে ভোটার শনাক্ত করনে চেয়ার টেবিল বসতে দেয়নি, এমনকি ভোটকক্ষে এজেন্ট পর্যন্ত বসতে দেয়নি, এটা তারই ফল৷ গণতন্ত্রে ছোটবড় সব দলের এজেন্ট বসার অধিকার সাংবিধানিক, সেটাকেও খুচরো নেতারা অবজ্ঞা করতে বসেছিল, এটা তারই ফলশ্রুতি৷
মাননীয় দিদি আপনি অনেক পরিশ্রম, সাধনা, কঠোর প্রচেষ্টার মধ্যদিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস দল তৈরী করেছিলেন, বাংলার জনগন আপনার পরিশ্রমকে যথাযথ মর্যাদা দিয়েছিল 2011 তে, কিন্তু আপনার আদরের নীচুতলার নেতারা সাজানো বাগানকে তছনছ করে দিল মাত্র 8 বছরেই৷ আপনি খুব সরল মনে তাদেরকে বিশ্বাস করেছিলেন; কিন্তু আপনি এ খবর সম্পর্কে ওয়াকিবহল নন যে তারা কিভাবে সাধারণ মানুষের উপর খবরদারী করে রাজনৈতিক পদাধীকারকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের রুটিরুজির ব্যবস্থা করেছিল৷ নেতা কিছুই করে না, অথচ রাজকীয়হালে তার জীবনযাপন যা কল্পনাতীত৷ বামফ্রন্টের শেষদিকে যেমন নেতারা অত্যাচারী হয়েছিল ঠিক তেমনি 2016 এর পর থেকে লাগামছাড়া হয়েছিল খুচরো নেতারা৷ এত তাড়াতাড়ি আপনার সাধনাকে ধুলিস্যাৎ করে দেবে এটা আমার মতো শুভাকাঙ্খী অনেকেই কল্পনায় আনতে পারেনি৷ কিন্তু সেটাই ঘটে গেল৷ এখনও অনেক সময় আছে বিজেপি নামক সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বাংলা থেকে উৎখাত করার৷ দরকার হলে বুথস্তর থেকে জেলা পর্যন্ত আরো একবার খোলনলচে পরিবর্তন করে নতুন করে শুরু করুন, পুরাতন তৃনমূলী যারা আপনার সংগে শুরু থেকেই জীবন যৌবন বিসর্জন দিয়েছিল তাদেরকে আবার আহ্বান করুন, শুধু আপনার একটা ইশারার অপেক্ষায় তারা বসে আছে৷ 2009 সালে তুমুল বামের যুগে জীবন বাজি রেখে আপনার হাতে 19 টি আসন তুলে দিয়ে 2011 তে আপনার মুখ্যমন্ত্রীত্বকে সুদৃঢ় করেছিল , তাদের অধিকাংশই আজ উঠতি সুযোগ সন্ধানী নেতাদের দ্বারা ব্রাত্য৷ এলাকায় তাদের কোন স্থান দেয়না৷ শুধুমাত্র আপনার কঠোর সংগ্রামের দিকে তাকিয়ে তারা বিরোধীদলে যোগদান করতে পারেনি৷ তাকিয়ে আছে আপনার একটা আহ্বানের দিকে৷
সেই অবসরে সুযোগসন্ধানীরা আপনার সাজানো বাগানকে তছনছ করে দিয়ে গেরুয়া ঝড় বইতে সাহায্য করেছে৷ বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরনে ভোট হয়নি হয়েছে দাদাদের আস্ফালনের জবাব৷ আপনি মানুষের উন্নয়নের জন্য অসংখ্য প্রকল্প ঘোষণা করেছেন কিন্তু আপনার কাছে খবর যায়নি সেই উন্নয়ন সাধারশ মানুষ পেয়েছে না নেতা আর তার দোসরগুলো পেয়েছে? এবার সময় এসেছে আত্মসুদ্ধির, সময় এসেছে পরিবর্তন করে নতুন করে শুরু করার৷ দরকার হলে আরো কঠোর হাতে দলের রাশ নিজের হাতে নিন৷ আপনিই একটা বিপ্লব, আপনিই পারবেন৷ আমরা আপনার অপেক্ষায়৷

আব্দুর রউফ,মাদ্রাসা শিক্ষক

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট