মাত্র ১২ বছর বয়সে মাধ্যমিক দিয়ে উত্তীর্ণ আমতার সইফা খাতুন


বুধবার,২২/০৫/২০১৯
511

আক্তারুল খাঁন,আমতা:- হাওড়া জেলার আমতা খোশালপুর অঞ্চলের কাষ্টসাংড়া গ্রামের বাসিন্দা সইফা খাতুন বয়স মাত্র ১২ বছর কোনও স্কুলের নিয়মিত ছাত্রীও নয় তা সত্বেও মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করে সকলকে অবাক করেদিল। এবারে মাধ্যমিকে বসেছিল বিস্ময় বালিকা সইফা খাতুন। পরীক্ষায় বসার অনুমতি চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সইফার বাবা সেখ আইনুল। সইফার বাবা একজন গ্রামীন চিকিৎসক। মা সাহানারা বেগম গৃহবধূ।সইফার ছোট দুই ভাইয়ের একজন প্রথম শ্রেণীতে পড়ে,অন্যজন, এখনো স্কুলে যাওয়া শুরু করে নি। ছোটবেলা থেকেই মেয়ের প্রতিভা নজরে এসেছিল আইনুল সাহেবের। বয়স যখন ৬ বছর তখন প্রাথমিক স্তরের পাঠ শেষ করে ফেলে সইফা। ওই বয়সে সইফাকে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি করাতে গেলে ভর্তি নেন নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।কারন নিয়মানুসারে বয়স হয়নি এবং প্রাথমিক স্তরের কোনো সার্টিফিকেট নেই তার। এই অবস্থায় মেয়েকে পিছনে দিকে তাকাতে দেননি সইফার বাবা। স্কুল পর্ষদের সিলেবাস অনুযায়ী বই বাজার থেকে কিনে মেয়েকে নিজেই পড়াতেন। বাবা ও মায়ের কাছে পড়াশোনা করতেন ছোট্ট সইফা। মাত্র ১২ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল সইফা। মেয়েকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার অনুমতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজ্যপাল শিক্ষামন্ত্রী থেকে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন সইফার বাবা আইনুল সাহেব।

মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রহে সইফাকে এবার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেইমতো স্পেশাল অনুমতির ভিত্তিতে এবছর হাওড়ার অ‍্যাংলো সংস্কৃত হাইস্কুল থেকে বহিরাগত হিসেবে মাধ্যমিকে বসেছিল সইফা খাতুন। দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেছে সে। মাধ্যমিক টেস্টে ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চমক দেয় সাইফা।ভাবা যায় । যে মেয়েটি স্কুলের ছায়া মাড়ায়নি হঠাৎ করে মাধ্যমিকে টেস্টে বসে ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে গেল। মাধ্যমিকে মেয়ের রেজাল্টে অবশ্য একেবারেই খুশি নন সইফা খাতুনের বাবা। তাঁর অভিযোগ, কম বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য  রীতিমতো লাঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে সইফাকে। এমনকী, যখন সে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন পরীক্ষাকেন্দ্রে তাকে নানা উত্ত্যক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এনেও লাভ হয়নি। না হলে প্রতিটি বিষয়ে একশোয় একশো পেত সইফা। মেধাতালিকায় নাম থাকত।অভাবের সংসারে মেয়ের জন্য কোন গৃহশিক্ষক রাখা যায়নি। বাঁশ,মাটি, প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা দেওয়াল ও টালির ছাউনির এক চিলটের ঘরে লালিত হচ্ছে ১২ বছরের সইফার স্বপ্ন।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট