ফিল্মি কায়দায় ছাপ্পা ভোট রুখলেন বিকাশ, অভিযুক্তকে জামার কলার ধরে তুলে দিলেন পুলিশের হাতে


রবিবার,১৯/০৫/২০১৯
583

সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে---

বাংলা এক্সপ্রেস, ভাঙড়: অবাধে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিলেন এক ব্যাক্তি। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরলেন যাদবপুরের লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তারপর তুলে দিলেন পুলিশের হাতে।জামার কলার ধরে বের করে আনেন অভিযুক্তকে।ঘটনা ভাঙড় বিধানসভার চালতাবেড়িয়া অঞ্চলের কৃষ্নমাটি গ্রামের। ১৩৯ নম্বর বুথে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে সেখানে ছুটে যান বাম প্রার্থী বিকাশ। কার্যত ফিল্মি কায়দায় হাতেনাতে ধরা পড়ে হাসিবুর রহমান নামের এক ব্যাক্তি। অভিযুক্ত আবার কিনা ভাঙড় মহাবিদ্যালযয়ের অতিথি অধ্যাপক। যাদবপুরের এক নির্দল প্রার্থীর হয়ে সে ছাপ্পা দিচ্ছিল বলে জানা গেছে।

তিলত্তমার সাবেক মেয়র এবং ত্রিপুরা রাজ্যের প্রাক্তন এডভোকেট জেনারেল বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন ভোটের দিনে ভাঙড় চষে বেড়াবেন। তাই করলেন। রবিবাসরীয় ভোটের ভাঙড় চষে বেড়ালেন। ভাঙড়ের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম সর্বত্রই ছুটলেন। যেখানে ঝামেলার খবর পেয়েছেন পৌঁছে গেছেন সেখানেই। কার্যত ৬৮ বছরের ‘যুবক’ কে ‘চৌকিদার’ সেজে পাহাড়া দিতে দেখা গেছে বিভিন্ন বুথ।

বিকাশের অকুভয়,অসম সাহসী,লৌহকঠিণ মানষিকতা উজ্জীবিত করেছে বাম কর্মীদের।নিয়েলসন এবং সি ভোটারসহ প্রায় সব সংস্থার সমীক্ষায় দেখানো হয় বামেরা আগের দুটি আসনও ধরে রাখতে ব্যর্থ হবে। ভোট শতাংশে দ্বিতিয় স্থানে থাকলেও খাতা না খোলারই ইঙ্গিত মিলেছিল। তবে দিন যত গেছে পরিস্থিতি বদলেছে একটু একটু করে। সমীক্ষা গুলিতে যাদবপুরের ক্ষেত্রে মুল লড়াই দেখানো হয়েছিল বিজে-মূলের সঙ্গে। অর্থাৎ বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যেই লড়াই হবে বলে ধারনা করা হচ্ছিল। সেক্ষেত্রে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী জয়ী হবে বলে সমীক্ষায় আভাস মেলে। দ্বিতীয় হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছিল বিজেপি প্রার্থী অধ্যাপক অনুপম হাজরার। ত্রিমুখি লড়াইয়ে সিপিএম প্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের তৃতীয় স্নানে থাকার কথা।

প্রচারে অবশ্যই সবার থেকে অনেক কদম এগিয়ে ছিলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। মাটি কামড়ে পড়েছিলেন ভাঙড়ের আনাচে-কানাচে। কখনও সন্ত্রাস কবলিত পাওয়ার গ্রিড এলাকার পোলেরহাট অঞ্চলে তো কখনও কোলকাতা-বিধাননগর লাগোয়া বামনঘাটা, ব্যাঁওতা অঞ্চলে। পৌঁছে গেছিলেন পাড়ার মাতায় কিংবা সবজি বাজারে। ভাঙড়ের অলিতে-গলিতে পৌঁছে অভয় দিয়েছিলেন সিপিএম কর্মী সমর্থকরদের। আইনের শাসন যে, এখনও আছে, তা বোঝাতে ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে এনেছিলেন এক ঝাঁক আইনজীবী। বিকাশের হয়ে সওয়াল করতে দেখা গেছিল বিদ্বৎজনদের। এমনকি ফুরফুরা শরীফের কয়েকজন পির সাহেবও আহ্বান জানিয়ে ছিলেন ব্যাক্তি বিকাশকে নির্বাচিত করার।

মতাদর্শ গত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সিপিআইএমএল রেডস্টার সিপিএম প্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে সমর্থন দিচ্ছে তারা। নির্বাচনী প্রচারে প্রকাশ্যে নামতে দেখা গেছে রেডস্টার নেতাদের। ভাঙড়ে জমি আন্দোলনে ব্যাক্তি বিকাশ আইনী লড়াইয়ে সঙ্গী ছিলেন। আর এই জমি কমিটির নেতৃত্বে ছিল রেডস্টার। অনান্য কেন্দ্রে তাই সিপিএমের বিরূদ্ধে রেডস্টার সরাসরি লড়াই করলেও ব্যাতিক্রম যাদবপুর। অপর দিকে মূল্যবোধ ভিত্তিক অঞ্চল দল ডব্লিউপিআইও বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে সমর্থনের কথা জানায়। সব মিলিয়ে বিজেপির অনুপম হাজরাকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিকাশ রঞ্জন। এই কেন্দ্রে বিজেপি তৃণমূল নয়, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে তৃণমূল বনাম সিপিএমের মধ্যে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে যে, বেগ পেতে হবে তা মানছেন তৃণমূলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরাও। তবে শেষ হাঁসি কে হাঁসবে তা সময়ই বলেবে। আর তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২৩ মে অবধি।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট