দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বাসন্তীতে নির্বাচনী জনসভায় মোদীকে তীব্র আক্রমণ মমতার


রবিবার,১২/০৫/২০১৯
700

নিজস্ব প্রতিবেদক ---

বাংলা এক্সপ্রেস, বাসন্তী: জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের বাসন্তীতে নির্বাচনী জনসভা করল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে।রবিবাসরীয় জনসভায় উপস্থিত ছিলেন জয়নগরের তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মন্ডল, তৃণমূলের জেলা সভাপতি শুভাশীষ চক্রবর্তীসহ জেলা ও ব্লক নেতৃত্ব। মমতা মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন এদিন।

তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী বাংলায় সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা করছে। ভদ্রতা করে চুপ করে আছি কিন্তু সব নজর রাখছি। আমাদের দুর্বল ভাবার কোন কারণ নেই। আমাকে অনেক অপমান করেছেন, অসম্মান করেছেন, সময়মতো সব ফেরত দেব। আমাকে সরকার চালাতে দেয় না। আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলার উনি কে?

মমতা বলেন, রাজ্য পুলিশের ওপর ভরসা নেই, কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করছে। বেআইনি ভাবে সব কাজ করছে। ভদ্রতা দেখালে ভদ্রতা করা হবে, অসৌজন্যতা দেখালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এত গরমে আগে কখনো নির্বাচন হয়নি। আগে ৬ই মের মধ্যে প্রচার শেষ হয়ে যেত, আর ১০ই মের মধ্যে নির্বাচন শেষ হয়ে যেত। ইচ্ছে করে বিজেপি এত সময় নিয়ে নির্বাচন করছে

তৃণমূল নেত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদীর মতন এরকম স্বৈরাচারী সরকার দানবদের সরকার পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
এই নির্বাচন দিল্লীর লোকসভার নির্বাচন, দিল্লীতে কে সরকার গড়বে তার নির্বাচন। ৫ বছর ধরে দিল্লীতে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। ওরা কৈফিয়ত দেবে ৫ বছরে ওরা দেশের জন্য কি কাজ করেছে।
এই এলাকায় অনেক জায়গায় ব্যাঙ্ক নেই, আমরা অনেক কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক করেছি। আমাদের সরকার মা মাটি মানুষের সরকার। ৫ বছরে নরেন্দ্র মোদী দেশের জন্য কি কাজ করেছে তার কৈফিয়ত ওনাকে দিতে হবে। এই ৫ বছরে গোরক্ষার নামে সংখ্যালঘু, তপশিলি ভাই বোনেদের ওপর অত্যাচার করেছে। ঘৃণা, বিদ্বেষ, হিংসা তৈরি করেছে। ওরা মানুষকে মানুষ বলে মনে করে না

তিনি বলেন, বাংলা একমাত্র জায়গা যেখানে ধর্ম নিয়ে ঝগড়া হয় না, জাত-পাতের লড়াই হয় না। বাংলায় আমরা সবাই এক, একসাথে মিলেমিশে থাকি। অসম থেকে একজন মন্ত্রীকে এনে তাজ বেঙ্গলে বসিয়ে রেখে দিয়েছে টাকা বিলি করার জন্য। উনি সারদা থেকে ৩ কোটি টাকা নিয়েছেন, সারদার মালিক সেকথা জানিয়েছে। তাহলে কেন তাঁকে সিবিআই গ্রেপ্তার করছে না? দক্ষিণ ২৪ পরগণায় উনি কোটি কোটি টাকা বিলি করছেন

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেন, সুন্দরবনে যখন আয়লা হয়েছিল তখন ওনারা কোথায় ছিলেন? এখন ভোটের সময় এসে বসন্তের কোকিলের মত ডাকছে আর টাকা নিয়ে ঘুরছে।
আমি সেন্ট্রাল ফোর্সকে অসম্মান করি না, কিন্তু ওদের কেউ কেউ এসে বলছে বিজেপিকে ভোট দিতে। মালদা দক্ষিণে যিনি বিজেপি প্রার্থী তার স্বামী কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাচ্ছে। শুনলাম আজকেও বিভিন্ন বুথে গিয়ে ওরা গুলি চালিয়েছে। কোথাও কোথাও লাইনে গিয়ে সেন্ট্রাল পুলিশ বলছে মোদীকে ভোট দাও। এটা কি ওদের কাজ? আজ ওরা মোদীর আওতায় আছে কাল যখন মোদী থাকবে না তখন কোথায় যাবে?

তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, সব জায়গায় হারবে বাইরে থেকে গুণ্ডা নিয়ে এসেছে নির্বাচন করবে বলে। একহাতে ঝাণ্ডা, অন্য হাতে গদা নিয়ে আর এস এস এর পাণ্ডারা টাকা দিচ্ছে। ফোন দিচ্ছে আর ভোট চাইছে। ঝাড়খণ্ড আর পুরুলিয়া থেকে গুন্ডা নিয়ে এসেছে, দখল করে ভোট করবে বলে। ওড়িশা থেকে কয়েকজন গুন্ডা এসে দাঁতনে গণ্ডগোল করছে। নরেন্দ্র মোদী আগে চা বিক্রি করতেন আর আজ ওনার বাক্স বাক্স টাকা, কোথায় পেল? সারা দেশকে লুঠে নিয়েছে

মমতা বলেন, সিপিএম ওদের আদর্শ বিক্রি করে দিয়েছে। সিমিএমের হার্মাদ গুলো এখন বিজেপির ওস্তাদ হয়ে এই অত্যাচার করছে। ওরা এবার ক্ষমতায় এলে আর নির্বাচন করতে দেবে না। উনি চিরকাল থাকবেন হিটলার- মুসোলিনির মতন। নরেন্দ্র মোদীর মতন দাঙ্গাবাজ আর কেউ নেই। গুজরাতে দাঙ্গা করে কত লোককে খুন করেছে, সেই সংখ্যাটা জানা নেই, ওখানে কেউ প্রতিবাদ করতে পাররে না, কেউ থানায় যেতে পারে না, কোর্টে যেতে পারে না। অটলজি ওনাকে রাজধর্ম শিখতে বলেছিলেন, উনি বলেছিলেন দরকার হলে উনি গুজরাত সরকার ভেঙে দেবেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আর একটা দফার নির্বাচন বাকি। মোদীবাবু ইতিমধ্যেই নির্বাচনে হেরে গেছেন। সব প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করে নিয়েছে। মিডিয়া ভয়ে কথা বলতে পারে না। আর অধিকাংশই বিজেপির দালালি করে। ওদের বিরুদ্ধে আওয়াজটা আমি তুলে ছিলাম, তাই আমার ওপর রাগ। এখন বারবার বাংলায় এসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একমাত্র আমিই বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষমতা রাখি। আমি ওদের ভয় পাই না। আমি জীবনে অনেক লড়াই করেছি।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট